Makar Sankranti 2024: মকর সংক্রান্তি উদযাপনের শুরু কীভাবে ? নানা কথা নানা মত
Makar Sankranti 2024 Facts: মকর সংক্রান্তি উদযাপন কীভাবে শুরু হল ভারত ভূখণ্ডে? নানা শাস্ত্রে নানা মত রয়েছে এই নিয়ে।
কলকাতা: মকর সংক্রান্তি বা পৌষ সংক্রান্তি (Makar Sankranti 2024) দেখতে দেখতে চলেই এল। সারা দেশেই পালন করা হয় এই বিশেষ উৎসব। মূলত শীতের বিদায়ক্ষণের সূচনা হয় এই দিনটি থেকে। আবার একই দিন থেকে নতুন মরসুমি চাষ শুরু হয় সারা দেশ জুড়ে। তবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন নামে উৎসবটির উদযাপন চলে। যেমন ধরা যাক তামিলনাডুর কথা। দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যে উৎসবটির নাম পোঙ্গল। আবার পাঞ্জাবে উৎসবটির নাম লোহরি। চলতি বছর লোহরির একদিন পরে পালন করা হবে মকর সংক্রান্তি। তিথি অনুযায়ী ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি পড়ছে মকর বা পৌষ সংক্রান্তি।
মকর সংক্রান্তি পুরাণ-কথা
মকর সংক্রান্তি দিনটি নিয়ে নানারকম ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। এর বেশ কিছুই গ্রন্থিত রয়েছে আমাদের প্রাচীন পুরাণ ও মহাকাব্যগুলিতে (Makar Sankranti in mythology)। পুরাণ মতে, শনি মহারাজ সূর্যদেবতার সন্তান। কিন্তু কৃষ্ণবর্ণ হওয়ায় শনি মহারাজ ও স্ত্রী ছায়াকে ত্যাগ করেন সূর্যদেব। এর পর এক সময় তিনি কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হন। সেই সময় তার আরেক স্ত্রী সঞ্জনার সন্তান যমরাজ উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। যমরাজের একান্ত চেষ্টায় সূর্যদেবের কুষ্ঠ সেরে যায়। এদিকে শরীর সুস্থ হতেই তার সমস্ত জ্যোতি গিয়ে পড়ে মকরের উপর। সেখানেই বাস ছিল তাঁর ত্যজ্য স্ত্রী ও সন্তান শনিদেবের। তাদের বাড়িঘর পুড়ে যায় সেই তেজে। সৎমা ও সৎভাইয়ের এই অবস্থা দেখে ফের কাতর হয়ে পড়েন যমরাজ। তিনি সূর্যদেবের কাছে গিয়ে অনুরোধ করেন তাদের ক্ষমা করতে। এই সময় সূর্যদেব এগিয়ে যান সেই উদ্দেশ্যেই। সেই সময় সব পুড়ে গেলেও শনিদেবের ঘরে কিছু তিল অবশিষ্ট ছিল। সেই তিল দিয়েই তিনি সূর্যদেবকে বরণ করে নেন। শনিদেবের এই শ্রদ্ধা নিবেদন দেখে তুষ্ট হন পিতা সূর্যদেব। সেই সময় তিনি একটি নতুন ঘর দেন শনিদেবকে। যার নাম 'মকর'। এর পর সন্তানের সেই ঘরে প্রবেশ করেন তিনি। সেই ক্ষণকেই মকর সংক্রান্তির সূচক বলে ধরা হয়।
জ্যোতিষশাস্ত্রে মকর সংক্রান্তি
মকর সংক্রান্তি নিয়ে জ্যোতিষের (Makar Sankranti in astrology) অন্য একটি তত্ত্ব প্রচলিত রয়েছে। বলা হয়, এই দিন সূর্যের দশার পরিবর্তন হয়। এই দিন সূর্য একাদশতম রাশি মকরের ঘরে প্রবেশ করেন। সেই নামের প্রসঙ্গ ধরেই দিনটির নামকরণ হয়েছে মকর সংক্রান্তি।
ভৌগোলিক নিরিখে সংক্রান্তির তাৎপর্য
মকর সংক্রান্তির ভৌগোলিক নিরিখে মকর সংক্রান্তির তাৎপর্য আবার আলাদা। মকর সংক্রান্তির দিন উত্তর গোলার্ধে শীতকাল শেষ হলে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এই দিনের পর থেকে সূর্য উত্তরায়নের শুরু হয়। মকর সংক্রান্তির পর থেকে দিন ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে।
মকর সংক্রান্তির উদযাপন
মকর সংক্রান্তির দিন সূর্যদেবতার উপাসনা করা হয়। এই দিন পুণ্যার্থীরা বিভিন্ন জলাশয়ে যেমন নদী, সমুদ্রে স্নান করে শুদ্ধ হন। এর পর করজোড়ে সূর্য দেবতার কাছে বিশেষ মন্ত্রপাঠ করে প্রার্থনা নিবেদন করেন। সংক্রান্তির বিশেষ ক্ষণে দানধ্যানের মতো পুণ্যকর্ম করার প্রচলনও রয়েছে। এছাড়াও, আকাশে ঘুড়ি ওড়ানো, তিল, গুড়, দিয়ে পিঠে পুলি, সন্দেশ তৈরির রীতি তো রয়েছেই। এই দিন তিলের সন্দেশ তৈরি করার পিছনে বিশেষ কারণ রয়েছে। কথিত আছে, তিলকে অমরত্বের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন যমরাজ। সেই বিশ্বাসকে পাথেয় করেই এই দিন তিলের নানা পদ তৈরি করা হয়। গ্রামের দিকে এই দিন কিছুটা আলাদা ছবি দেখা যায়। চাষিরা এই দিন চালের বিভিন্ন পদ তৈরি করেন। তাছাড়া, অনেক স্থানে গবাদি পশুদেরও পুজো নিবেদন করা হয়।
তথ্যসূত্র: এবিপি লাইভ