Ritu Karidhal Srivastava: শুধু গলাবাজি নয়, মেধাতেই দুরমুশ করেছেন পিতৃতন্ত্রকে, ‘রকেট উওম্যান’রিতু চন্দ্রযান-৩ অভিযানের নেপথ্যনায়িকা
Chandrayaan 3: 'চন্দ্রযান-৩' অভিযানে সব মিলিয়ে ৫৪ জন মহিলা বিজ্ঞানী এবং ইঞ্জিনিয়ার যুক্ত।
নয়াদিল্লি: চাঁদের বুকে নয়া অধ্যয়ের সূচনা। ভারতের চন্দ্রযান-৩ তার সূত্রধার হয় যদি, তাহলে নেপথ্যনায়িকা অবশ্যই রিতু কারিধাল শ্রীবাস্তব (Ritu Karidhal Srivastava), আক্ষরিক অর্থেই ভারতের রকেট 'উওম্যান'। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO-র অভিজ্ঞ বিজ্ঞানী রিতু। চন্দ্রযান-৩ অভিযানে (Chandrayaan 3) নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। Mars Orbiter Mission মঙ্গলযানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর, যার আওতায় মঙ্গলগ্রহকে প্রদক্ষিণ করতে মহাকাশযান পাঠায় ভারত।
উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে জন্ম রিতুর। ১৯৯৬ সালে লখনউ ইউনিভার্সিটি থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এর পর বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের ডিপার্টমেন্ট অফ এ্যরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে এমটেক করেন রিতু। পরিবার-পরিজনরা জানিয়েছেন, ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্রী ছিলেন তিনি। অল্পবয়স থেকেই মহাকাশের প্রতি অমোঘ আকর্ষণ ছিল তাঁর।
ছোট্ট বয়স থেকেই ISRO এবং আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র গবেষণা, সেই নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন জড়ো করতেন রিতু। ১৯৯৭ সালের নভেম্বর মাসে ISRO-য় যোগ দেন। উইমেন ইকনমিক ফোরাম জানিয়েছে, ISRO-র একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অভিযানে শামিল থেকেছেন তিনি। অপারেশন্স ডিরেক্টরের পদও অধিকৃত করেছেন। 'চন্দ্রযান-১', 'চন্দ্রযান-২' অভিযানেও শামিল ছিলেন। এর পাশাপাশি GSAT-6A এবং GSAT-7A অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন রিতু। এ ছাড়াও, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার জন্য ২০টিরও বেশি গবেষণাপত্র লিখেছেন।
মঙ্গলযান অভিযানের সময় ISRO-র ডেপুটি অপারেশন্স ডিরেক্টরের দায়িত্ব পান রিতু। ২০০৭ সালে ইয়ং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড পান। তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি তথা দেশের 'মিসাইল ম্যান' ডঃ এপিজে আব্দুল কালাম। ২০১৫ সালে মঙ্গলযান অভিযানের জন্য ISRO টিম অ্যাওয়ার্ড হাতে ওঠে। এ ছাড়াও, ২০১৭ সালে উওম্য়ান অ্যাচিভার্স ইন এ্যরোস্পেস সম্মানে ভূষিত হন। ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে তো বটেই, নেতৃত্বদানেও রিতুর তুলনা হয় না বলে মত ISRO-র। মহাকাশ গবেষণা এবং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যাথমেটিক্স (STEM)-এর ক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণা তিনি।
স্বামী অবিনাশ শ্রীবাস্তব এবং দুই সন্তান আদিত্য এবং আনিশাকে নিয়ে সংসারজীবন রিতুর। কিন্তু এই যাত্রাপথ যে মোটেই সহজ ছিল না, একাধিক মাধ্যমে তা তুলে ধরেছেন তিনি। টেড টকে তা নিয়ে খোলাখুলি কথাও বলেছেন রিতু। তবে লড়াই নয়, যা কিছু অর্জন করেছেন, তা নিয়েই কথা বলা পক্ষপাতী রিতু। আমেরিকার মতো দেশে মহাকাশ গবেষণায় নারীচরিত্ররা বরাবর সামনে উঠে এলেও, ভারতের মতো দেশে পুরুষদের সামনে ঢাকা পড়ে যায় তাঁদের কৃতিত্ব, মূলত পিছনের সারিতেই দেখা যায় তাঁদের। কিন্তু সেই মানসিকতাকে প্রতিবন্ধকতা হতে দেননি রিতু।
তবে রিতু একা নন, 'চন্দ্রযান-৩' অভিযানে সব মিলিয়ে ৫৪ জন মহিলা বিজ্ঞানী এবং ইঞ্জিনিয়ার যুক্ত। কেউ অ্যাসোসিয়েট, কেউ ডেপুটি অ্যাসোসিয়েট, কেউ ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর, কেউ আবার প্রজেক্ট ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেছেন।