EXCLUSIVE: ''ফাইনালের আগে ৩ ঘণ্টা ক্লাস সুভাষ স্যারের, মাঠে নামার আগেই চাপমুক্ত হয়ে গিয়েছিলাম''
Douglas de Silva Exclusive: ২০০৩ সালে আজকের দিনেই জাকার্তায় (Jakarta) প্রথম ভারতীয় ক্লাব হিসেবে আশিয়ান কাপ (Asean Cup) জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) দল। কোচ ছিলেন প্রয়াত সুভাষ ভৌমিক।
কলকাতা: আশিয়ান কাপ (Asean Cup 2003)। নামটা শুনতেই চোখের সামনে ভেসে আসে লাল হলুদ রংমশালে উজ্জ্বল এক বিজয় কাহিনি। খরচের খাতায় ফেলে দেওয়া এগারো ফুটবলারের স্পর্ধার গল্প। যেই গল্পে শুধু একটা দল নয়, জড়িয়ে আপামর বাঙালির ফুটবল আবেগ, ফুটবল সম্মান। ২০০৩ সালে আজকের দিনেই জাকার্তায় (Jakarta) প্রথম ভারতীয় ক্লাব হিসেবে আশিয়ান কাপ (Asean Cup) জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) দল। প্রয়াত সুভাষ ভৌমিকের (Subhash Bhowmik) কোচিংয়ে ইতিহাস গড়েছিল লাল হলুদ ব্রিগেড। সেই দলেরই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন ডগলাস ডি সিলভা। ময়দানে একটা সময় চুটিয়ে খেলছেন ২ প্রধানেই। অজস্র বাঙালির পছন্দের বিদেশি ফুটবলারদের তালিকাতেও বিরাজমান তিনি। আশিয়ান কাপ জয়ের ১৯ বছর পূর্তিতে সুদূর ব্রাজিল থেকেই সেই টুর্নামেন্টের স্মৃতি পালা ওল্টালেন ডগলাস। শুনল এবিপি লাইভ।
স্মৃতিতে আশিয়ান কাপ
ডগলাস: যেদিন থেকে পৌঁছেছিলাম জাকার্তায় সেদিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত প্রত্যেকে নিজের সেরাটা দিয়েছে মাঠে। কোচ, সাপোর্ট স্টাফ, দলের প্রত্যেকের মধ্যে বোঝাপড়াটা দারুণ ছিল। যদি পেছনে ফিরে তাকানো যায়, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনালে আমরা যাঁদের বিরুদ্ধে খেলেছি, আমি বলব প্রত্যেকটা দল আমাদের থেকে অনেক অনেক এগিয়ে ছিল। কিন্তু আমরা যেভাবে খেলেছি, প্রত্যেকে ১০০ শতাংশ দিয়েছে, কিন্তু আমরা ২০০ শতাংশ দিয়েছিলাম।
কোচ সুভাষ ভৌমিক
ডগলাস: সুভাষ ভৌমিককে নিয়ে আমি যা বলব তাই কম বলা হবে। আমার দেখা অন্যতম সেরা বুদ্ধিদীপ্ত কোচ। আমরা আশিয়ান কাপের আগে আরও এক বছরের ওপরে ওঁনার অধীনে খেলছিলাম। আমরা ওঁনাকে চিনতাম, বুঝতাম। উনিও আমাদের প্রত্যেকের সম্পর্কে জানতেন। আমি আমার কেরিয়ারে প্রায় ২০ জনের র থেকে বেশি কোচের অধীনে খেলেছি। তাঁরা অনেকেই নামকড়াও। কিন্তু সুভাষ স্যার যেভাবে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে, যেভাবে উদ্বুদ্ধ করতেন, তার কোনও তুলনা হয় না। অনেক সময় আমার সঙ্গে আলাদা করে কথাও বলতেন। যেভাবে প্লেয়ারদের মনটা বুঝতেন, তার জন্যই ছেলেরা মাঠে সেরা খেলাটা বের করে আনতে পারত।
প্রসঙ্গ ফাইনাল ম্যাচ
ডগলাস: বেক তেরাে সাসানার বিরুদ্ধে ফাইনাল ম্যাচের আগে ভীষণ চিন্তায় ছিল সবাই। আগের দিন রাতেও দলের অনেকেই ঠিকভাবে ঘুমোতে পারেনি। হয়ত সুভাষ স্যার কিছু একটা বুঝেছিলেন। তিনি পরের দিন লাঞ্চের পর আমাদের ডাকলেন। ম্যাচের আগেই প্রায় তিন ঘণ্টার ক্লাস করিয়েছিলেন আমাদের। এরপরই মানসিক চাপমুক্ত হয়ে গিয়েছিলাম আমরা। খেলার মাঠেও যার প্রতিফলন পড়েছিল। মাঠে নেমে নিজেদের সেরাটা বের করে আনতে পেরেছিলাম আমরা।
সেই দলের সতীর্থদের সঙ্গে কথা হয়?
ডগলাস: কিছু কিছু প্লেয়ারের সঙ্গে কথা হয়। কিন্তু সত্যি বলতে সবার সঙ্গে হয় না। আমি একটা গ্রুপ তৈরি করেছিলাম সবাইকে নিয়ে। কিন্তু দেখলাম যে কেউ সেভাবে গ্রুপে কথাবার্তা বলে না। পরে আমি সেই গ্রুপটা ডিলিট করে দিই। কিন্তু অ্যালভিটো, সুরেশ এমন কয়েকজন প্লেয়ারের সঙ্গে কথা হয় আমার। তবে এটা ভাল লাগছে যে এই টুর্নামেন্ট জয়ের ১৯ বছর সেলিব্রেট করা হচ্ছে। মানুষ কিছু ছবি পোস্ট করে ও ভুলে যায়। কিন্তু তাঁদের মনে রাখা উচিত সেই টুর্নামেন্টের গুরুত্ব ও ঐতিশ্য সম্পর্কে। ইস্টবেঙ্গলের জন্য সেই টুর্নামেন্টে লাইফটাইম হয়ে থাকবে।