East Bengal: রেকর্ডবুকে অনেক পিছিয়ে ইস্টবেঙ্গল, ওড়িশার বিরুদ্ধে ম্যাচে লাল-হলুদের ভরসা ফিরে পাওয়া ছন্দ
ISL News: অস্কার-ম্যাজিকে হঠাৎ চনমনে হয়ে উঠেছে লাল-হলুদ ব্রিগেড। এ বার আর আগের বারের মতো সহজে ইস্টবেঙ্গলকে হারানো যে বেশ কঠিন তা ভাল মতোই বুঝে নিয়েছেন ওড়িশা এফসি-র কোচ সের্খিও লোবেরা।
কলকাতা: গত দুই মরশুমে ইন্ডিয়ান সুপার লিগে (Indian Super League) যে দলটি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে, সেই ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে এ বার কঠিন পরীক্ষা ইস্টবেঙ্গল এফসি-র (East Bengal)। যে দলের বিরুদ্ধে ন’বারের মুখোমুখিতে মাত্র একবার জিততে পেরেছে ইস্টবেঙ্গল, সেই প্রতিপক্ষ যে তাদের কাঁটার তালিকায় রয়েছে, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব নেওয়ার পর গত অক্টোবরে এই ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধেই প্রথম দল নামান স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজো। গত বছর বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংসের কোচ হিসেবে ওড়িশা এফসি-কে দু’টি ম্যাচে সামনে পেয়েছিলেন তিনি। পেয়েছেন চলতি আইএসএলেও। ভুবনেশ্বরে সেই ম্যাচে ১-২-এ হেরে যায় লাল-হলুদ বাহিনি, যা ছিল তাদের টানা ছ’নম্বর হার। অর্থাৎ সাম্প্রতিককালে তিন-তিনবার ওড়িশাকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছেন ব্রুজো।
বৃহস্পতিবার ঘরের মাঠে ফের যখন কলিঙ্গ বাহিনির মুখোমুখি হতে চলেছে তাঁর দল, তখন তাদের পরিস্থিতি অন্যরকম। টানা দু’টি ম্যাচ জিতে ও তিনটি ম্যাচে গোল অক্ষত রেখে এখন তারা ছন্দে ফিরেছে। টানা সাতটি ম্যাচ জয়হীন থাকার পর এই দুই ম্যাচে জয় পেয়েছে তারা। অস্কার-ম্যাজিকে হঠাৎ চনমনে হয়ে উঠেছে লাল-হলুদ ব্রিগেড। এ বার আর আগের বারের মতো সহজে ইস্টবেঙ্গলকে হারানো যে বেশ কঠিন তা ভাল মতোই বুঝে নিয়েছেন ওড়িশা এফসি-র কোচ সের্খিও লোবেরা।
সেরা ছয়ে থাকা লোবেরা-বাহিনি গত চারটি ম্যাচে অপরাজিত রয়েছে। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ড্র করার পর টানা দুটি ম্যাচে জেতে। হায়দরাবাদকে ছ’গোলে ও বেঙ্গালুরুকে ৪-২-এ হারায় ওড়িশা। কিন্তু গত ম্যাচে মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করে। এই ড্র নিয়ে একেবারেই খুশি ছিলেন না স্প্যানিশ কোচ। তবে সেই ম্যাচ আর বৃহস্পতিবারের ম্যাচের মধ্যে যে অনেক তফাৎ, তা গত ম্যাচের পরেই জানিয়ে দেন লোবেরা।
এ বার বেশিরভাগ বিদেশি ফুটবলারকেই দলে রেখে দেয় ওড়িশা এফসি। রয় কৃষ্ণা, কার্লোস দেলগাদো, আমেদ জাহু, মুর্তাদা ফল, দিয়েগো মরিসিও— সবাই রয়েছেন লোবেরার দলে। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন হুগো বুমৌস। কিন্তু হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ম্যাচে রয় কৃষ্ণা এসিএল গ্রেড ৩ চোট পেয়ে গোটা মরশুম থেকেই ছিটকে গিয়েছেন। ওড়িশাকে ১৩ গোল দেওয়া ফিজিয়ান তারকা এ মরশুমে তিন গোল করেন। এই ধাক্কা অবশ্য পরের ম্যাচেই কাটিয়ে উঠে শীর্ষস্থানীয় বেঙ্গালুরুকে হারায় তারা। মুম্বইকেও রুখে দেয়। দুই ম্যাচই তারা খেলে ঘরের মাঠে।
চলতি লিগে সবচেয়ে বেশি গোল করেছে ওড়িশা-ই। ১১ ম্যাচে ২৩ গোল পেয়েছে ওড়িশা। এ পর্যন্ত সাত গোল করেছেন মরিসিও। চারটি গোল করেছেন মুর্তাদা। বুমৌস দু’টি গোল করেছেন। ৯৬টি গোলের সুযোগ তৈরি করেছে তারা। অর্থাৎ. প্রায় ২৪ শতাংশ সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন মরিসিওরা, যা যথেষ্ট ইতিবাচক এবং কলিঙ্গবাহিনির আক্রমণ কতটা ধারাল, তারই প্রমাণ দেয় এই তথ্য। এই ধারালো আক্রমণ আটকানোর জন্য ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণকেও যথেষ্ট শক্তিশালী হতে হবে।
কিন্তু দলের চোট-আঘাতের সমস্যা তাদের এই ম্যাচে সমস্যায় ফেলতে পারে। রক্ষণে স্প্যানিশ ডিফেন্ডার হেক্টর ইউস্তে এখনও অনিশ্চিত বলে শোনা যাচ্ছে। গত তিন ম্যাচে গোল না খাওয়া লাল-হলুদ ব্রিগেডের মাঝমাঠকে অনেকটাই দুর্বল করে দিতে পারে সল ক্রেসপোর হ্যামস্ট্রিং সমস্যা, যা তাঁকে আগামী একাধিক ম্যাচে মাঠের বাইরে রাখতে চলেছে। গত ম্যাচে চোট পান গ্রিক ফরোয়ার্ড দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকসও। তাঁরও এই ম্যাচে খেলার সম্ভাবনা প্রায় নেই। চোটের জন্য নন্দকুমার শেকরও এই ম্যাচে অনিশ্চিত বলে শোনা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: আইপিএলে শাহরুখের সবচেয়ে দামি অস্ত্র, দুরন্ত পারফরম্যান্স করে দলকে তুললেন সেমিফাইনালে
অর্থাৎ, আক্রমণের প্রধান দায়িত্ব নিতে হবে ছন্দে না থাকা ক্লেটন সিলভাকে। গত ম্যাচে দুই ভারতীয় পিভি বিষ্ণু, জিকসন সিংয়ের গোল পাওয়া অবশ্য ইতিবাচক ইঙ্গিত। ইস্টবেঙ্গল ন’ম্যাচে মাত্র সাতটি গোল করেছে। গোলের সুযোগও তৈরি করেছে সবচেয়ে কম, ৮৪টি। আক্রমণে ধার না বাড়ালে জয়ের ধারা বজায় রাখা তাদের পক্ষে কঠিন হবে। ক্রেসপো, দিয়ামান্তাকসদের ছাড়া রিজার্ভ বেঞ্চের খেলোয়াড়দের দিয়ে তা কী করে সম্ভব হবে, সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। (সৌ: আইএসএল মিডিয়া)
আরও পড়ুন: কোয়ার্টার ফাইনালে হার্দিক-ক্রুণালদের সামনে দৌড় শেষ বাংলার, ফের ট্রফি-শূন্য টুর্নামেন্ট
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।