Tulika Jadhao: ছোট থেকেই সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত, এক পায়ে খেলেই অসাধ্যসাধনের স্বপ্ন তুলিকার
Khelo India Para Games: আইজি স্টেডিয়ামে ব্যাডমিন্টন ম্যাচ দিয়ে শুরু হল প্রতিযোগিতা। সেখানে সর্বকনিষ্ঠ শাটলারদের মধ্যে অন্যতম তুলিকা। বয়স মাত্র ১৫ বছর।
নয়াদিল্লি: জন্ম থেকেই তার সঙ্গী শারীরিক প্রতিকূলতা। সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত। কিন্তু তুলিকা যাধাও (Tulika Jadhao) হাল ছাড়তে নারাজ। সে বাঁচার অক্সিজ়েন খুঁজেছে ব্যাডমিন্টন কোর্টে। ব্যাডমিন্টন কোর্টেই যেন মুক্তির স্বাদ পায়। পালক জোশী (Phalak Joshi), প্রমোদ ভগতরা (Pramod Bhagat) তার আদর্শ।
রবিবার থেকে শুরু হল খেলো ইন্ডিয়া প্যারা গেমস (Khelo India Para Games)। আইজি স্টেডিয়ামে ব্যাডমিন্টন ম্যাচ দিয়ে শুরু হল প্রতিযোগিতা। সেখানে সর্বকনিষ্ঠ শাটলারদের মধ্যে অন্যতম তুলিকা। বয়স মাত্র ১৫ বছর। মহারাষ্ট্রের বুলদানার মেয়ে। তার বয়সী আর পাঁচজন মেয়ের মতোই ছটফটে, কথা বলতে ভালবাসে। সারাক্ষণ গল্প করছে, হইহই করছে আর অপেক্ষা করছে, কখন ব্যাডমিন্টন কোর্টে নামা যায়।
জন্মগতভাবে সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত তুলিকা। শারীরিক সক্ষমতা আর পাঁচজনের মতো নয়। পেশিশক্তি কম। রয়েছে আরও নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা। তবু স্বপ্ন দেখছে তুলিকা। স্বপ্ন দেখছে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার।
মহিলাদের এসএলথ্রি বিভাগে সিঙ্গলসে কোয়ার্টার ফাইনালে জিতেছে তুলিকা। রবিবার উত্তর প্রদেশের পূর্ণিমা পাণ্ডেকে ২১-৬, ২১-৪ স্ট্রেট গেমে হারিয়ে দিয়েছে তুলিকা। তার কথায়, '২০১৮ সালে নিছকই মজার জন্য ব্যাডমিন্টন খেলা শুরু করি। তবে টোকিও প্যারালিম্পিক্স দেখে আমি খেলাটা নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে চিন্তাভাবনা শুরু করি। বিশেষ করে পালক জোশী ও প্রমোদ ভগতকে দেখার পর ভীষণ অনুপ্রেরণা পাই। আমিও একদিন ওদের মতো হতে চেয়েছিলাম।'
প্রত্যেক দিনই তুলিকার কাছে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ। তার কথায়, 'আমি এসএলথ্রি বিভাগে খেলি। এটা ভীষণ কঠিন কারণ আমার শরীরের ডানদিক দিয়ে খুব বেশি কিছু করতে পারি না। আমার সারা শরীরের ওজনটা পড়ে এক পায়ে, তাই চোট লেগে যাওয়ার ভয় থাকে। সেই সঙ্গে সেরিব্রাল পালসি থাকার কারণে আমার দৃষ্টিশক্তিরও সমস্যা রয়েছে। চশমা পরে খেলতে হয়। শাটল অনুধাবন করে শট খেলা তাই আমার কাছে বেশি কষ্টকর।'
তবে ব্যাডমিন্টন নতুন পরিচিতি দিয়েছে তুলিকাকে। তার কথায়, 'আমি যখন ছোট ছিলাম, লোকে আমার হাত ও পায়ের দিকে অদ্ভুতভাবে তাকাত আর ভাবত, কী সমস্যা রয়েছে। তাতে আমি সব সময় আর পাঁচজনের চেয়ে নিজেকে আলাদা ভাবতে বাধ্য হতাম। আমার বন্ধুরা ও পরিবারের সকলে অবশ্য আমাকে নিয়ে ভীষণ রোমাঞ্চিত।'
ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার সংকল্প নিয়ে শহর বদলেছে তুলিকা। যাতে প্রস্তুতিতে খামতি না পড়ে। এখন লখনউয়ে গৌরব খান্নার কাছে প্রশিক্ষণ নেয় তুলিকা। 'অনেক খেলোয়াড় রয়েছে যাদের নানাবিধ সমস্যা রয়েছে। আমাদের সঙ্গেই প্রস্তুতি সারে। ওদের সঙ্গে থাকলে নিজেকে অন্যরকম কিছু মনে হয় না। বরং খেলোয়াড় হিসাবে আরও ভাল কিছু করার প্রেরণা পাই,' বলেছে তুলিকা।
প্রথমবার খেলো ইন্ডিয়া প্যারা গেমসে নেমে তুলিকার মনে হচ্ছে, দেশের প্রতিনিধিত্ব করার দিকে আর এক কদম এগিয়ে গেল সে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।