Afghanistan Cricket Team: স্পিনারদের হাতে আফগানিস্তানের বিশ্বকাপ ভাগ্য, তিক্ত অভিজ্ঞতা ভুলতে পারবেন রশিদরা?
ODI World Cup: ২০১৫ সালে ৬টির মধ্যে ৫টি ম্যাচ হারতে হয়েছিল আফগানিস্তানকে। একমাত্র স্কটল্যান্ডকে হারিয়েছিল। ২০১৯ বিশ্বকাপে আরও যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতা। ৯ ম্যাচ খেলে সবকটিই হেরেছিল আফগানিস্তান।
কাবুল: দরজায় কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ (ODI World Cup 2023)। ওয়ান ডে বিশ্বকাপের (ODI World Cup) ত্রয়োদশ সংস্করণ আয়োজিত হতে চলেছে এবার। তবে বিশ্বকাপের ইতিহাসে আফগানিস্তান (Afghanistan) কার্যত সদ্যোজাত। মাত্র দুটি বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে আফগানদের। ২০১৫ সালে ৬টির মধ্যে ৫টি ম্যাচ হারতে হয়েছিল আফগানিস্তানকে। একমাত্র স্কটল্যান্ডকে হারিয়েছিল। ২০১৯ বিশ্বকাপে আরও যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতা। ৯ ম্যাচ খেলে সবকটিই হেরেছিল আফগানিস্তান।
এবার কী হবে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের মাটিতে স্পিন সহায়ক পরিবেশে এবার ছবিটা বদলাতেও পারে। আফগান স্পিনাররা বল হাতে জ্বলে উঠলে, বিশ্বকাপ ভাগ্যের চাকাটা ঘুরতেও পারে।
সাম্প্রতিক ফর্ম
বাংলাদেশকে বাংলাদেশের মাটিতে হারানো? বর্তমানে বিশ্ব ক্রিকেটের খুব বেশি দল পারেনি। জুলাইয়ে আফগানিস্তান পেরেছিল। ৩ ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজে বাংলাদেশকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছিল। তবে তারপর থেকে টানা ৫ ম্যাচ হেরেছে আফগানিস্তান। শ্রীলঙ্কার মাটিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করেও তিন ম্যাচ হেরেছে। এশিয়া কাপে রান রেট নিয়ে হিসেবে ভুল করায় সুপার ফোরের দৌড় থেকে ছিটকে যেতে হয়েছিল। শেষ হাসি হেসেছিল শ্রীলঙ্কা।
শক্তি
আফগানিস্তানের প্রধান শক্তি স্পিনাররা। রশিদ খান, মহম্মদ নবি ও মুজিব উর রহমান সমৃদ্ধ স্পিন বোলিং বিভাগ। সম্ভবত তিনজনই থাকবেন প্রথম একাদশে। সঙ্গে রিজার্ভে নূর আমেদ। ভারতের বেশিরভাগ মাঠের বাইশ গজ থেকেই স্পিনাররা সাহায্য় পান। বল ঘুরলে আফগানিস্তানও প্রতিপক্ষ শিবিরের ত্রাস হয়ে উঠতে পারে। স্পিন বিভাগের নেতৃত্বে থাকবেন রশিদ। ৯৪ ওয়ান ডে-তে যাঁর ১৭২ উইকেট রয়েছে। ওভার প্রতি খরচ করেন মাত্র ৪.২১ রান। আধুনিক ক্রিকেটে যা অভাবনীয়। লেগস্পিন হোক বা গুগলি - ব্যাটারদের ঘাতক। অফস্পিনার নবির ১৫৪ উইকেট রয়েছে। ওভার প্রতি মাত্র ৪.২৯ রান খরচ করেছেন তিনি। ঈর্ষণীয় ইকনমি রেট মুজিবেরও। ওভার প্রতি খরচ করেন ৪.১৫ রান। ওয়ান ডে-তে একশো উইকেটের সামনে দাঁড়িয়ে। বিশ্বকাপে আফগান ঘূর্ণিকে সমীহ করতে বাধ্য হবে সব প্রতিপক্ষই।
দুর্বলতা
রশিদ খানের ওয়ান ডে রেকর্ড ঈর্ষণীয়। কিন্তু প্রথম সারির দলগুলির বিরুদ্ধে ২৮.৮০ গড়ে মাত্র ৪১ উইকেট রয়েছে তাঁর। বিশ্বকাপে তিনি সেরা ছন্দে না থাকলে বিপাকে পড়বে আফগান শিবির। তবে হাশমাতুল্লাহ শাহিদি অধিনায়ক হওয়ায় এবার আর রশিদের ওপর নেতৃত্বের চাপ থাকবে না। খোলা মনে খেলতে পারবেন। আফগানিস্তানের অন্যতম বড় কাঁটা ব্যাটিং। ওপেনিংয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে আইপিএল খেলা রহমানুল্লাহ গুরবাজ় ও ইব্রাহিম জাদ্রান ঝোড়ো শুরু করতে পারেন। সম্প্রতি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ২২৭ রানের রেকর্ড পার্টনারশিপ গড়েছিলেন। কিন্তু ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে তাঁদের। মিডল অর্ডারেও সেই ধার নেই। পেস বোলিংয়েও রয়েছে মারণকামড় দেওয়ার মতো ক্রিকেটারের অভাব।
চমক দিতে তৈরি
পেসার ফজ়লহক ফারুকি। মাত্র ২১টি ওয়ান ডে ম্যাচ খেলেছেন। কিন্তু আইপিএল, পাকিস্তান সুপার লিগ, আবু ধাবি টি-টেনের মতো টুর্নামেন্ট খেলে অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছেন বাঁহাতি পেসার। বিগহিটারদের আটকে রাখতে পারেন। নতুন বল দুদিকে স্যুইং করাতে পারেন। ইয়র্কারও নিখুঁত। হাতে রয়েছে বিপজ্জনক স্লোয়ার। শুরুতে উইকেট তুলে নিয়ে বিপক্ষ শিবিরকে চাপে ফেলে দিতে পারেন। তাতে স্পিনারদের কাজও সহজ হয়ে যাবে।
গেমচেঞ্জার
এক এবং একমাত্র রশিদ খান। বল হাতে কোনটা যে লেগস্পিন করবেন আর কোনটা গুগলি, ব্যাটাররা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। কুইক আর্ম অ্যাকশনের জন্য রশিদকে রিড করাটাও কঠিন। ব্যাট হাতে বিগহিটার। ১০৬-এর ওপরে স্ট্রাইক রেট। ওয়ান ডে-তে ৫টি হাফসেঞ্চুরি রয়েছে। গুজরাত টাইটান্সকে ২০২২ সালের আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন করার নেপথ্যে রশিদের ব্যাটের ভূমিকাও ছিল। কয়েক ওভারের মধ্যে ম্যাচের রং পাল্টে দিতে পারেন।
বিশ্বকাপের দল: হাশমাতুল্লা শাহিদি (অধিনায়ক), ইব্রাহিম জাদ্রান, ইক্রাম অলিখিল (উইকেটকিপার), রহমনুল্লাহ গুরবাজ (উইকেটকিপার), নাজিবুল্লাহ জাদ্রান, রিয়াজ় হাসান, আজমাতুল্লাহ ওমরজ়াই, মহম্মদ নবি, রহমত শাহ, রশিদ খান, আব্দুল রহমান, ফজলহক ফারুকি, মুজিব উর রহমান, নবীন উল হক ও নূর আমেদ।
বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের সূচি:
- বনাম বাংলাদেশ, ধর্মশালা, ৭ অক্টোবর, শনিবার, সকাল ১০.৩০
- বনাম ভারত, নয়াদিল্লি, ১১ অক্টোবর, বুধবার, দুপুর ২
- বনাম ইংল্যান্ড, নয়াদিল্লি, ১৫ অক্টোবর, রবিবার, দুপুর ২
- বনাম নিউজ়িল্যান্ড, চেন্নাই, ১৮ অক্টোবর, বুধবার, দুপুর ২
- বনাম পাকিস্তান, চেন্নাই, ২৩ অক্টোবর, সোমবার, দুপুর ২
- বনাম শ্রীলঙ্কা, পুণে, ৩০ অক্টোবর, সোমবার, দুপুর ২
- বনাম নেদারল্যান্ডস, লখনউ, ৩ নভেম্বর, শুক্রবার, দুপুর ২
- বনাম অস্ট্রেলিয়া, মুম্বই, ৭ নভেম্বর, মঙ্গলবার, দুপুর ২
- বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, আমদাবাদ, ১০ নভেম্বর, শুক্রবার, দুপুর ২
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন