Piracy: ২২,৪০০ কোটির জাল কনটেন্টের ব্যবসা ! ভারতে কেন বাড়ছে পাইরেসি ? কারা দেখছে এই কনটেন্ট ?
Piracy Problem in India: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম অত্যধিক মাত্রায় বেড়ে যাওয়ার কারণে বেআইনিভাবে কনটেন্ট স্ট্রিম করার মাত্রাও বেড়ে গিয়েছে। আর এই কারণে অসাধারণভাবে বানানো কনটেন্টও রেভিনিউ আনতে ব্যর্থ হচ্ছে।
Tech News: আমেরিকা ও কানাডায় থাকা বহু প্রবাসী ভারতীয় এই পাইরেটেড কনটেন্ট নিয়ে সচেতন এবং তারা বৌদ্ধিক সম্পত্তির অধিকার নিয়েও দারুণভাবে সচেতন। ইয়াপ টিভি, জি ফাইভ, সোনি লভ, হটস্টার, নেটফ্লিক্স, আমাজন, কালারস, সাননেক্সট ইত্যাদি ওটিটি স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলি এই পাইরেসির কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। কিছু কিছু অসাধু ব্যক্তি অনৈতিকভাবে বেআইনি পদ্ধতিতে এই প্ল্যাটফর্মের (Piracy Problem) কনটেন্টগুলি আইপিটিভি অ্যাপ কিংবা সেট আপ বক্সের মাধ্যমে স্ট্রিম করে থাকে। সাধারণ মানুষ এটা বুঝতে পারে না, যখন তারা টাকার বিনিময়ে এই ধরনের সেট আপ বক্স কেনেন, তখন পরোক্ষে এই পাইরেসিকে সমর্থনই করেন তারা। পাইরেটরা কনটেন্টের (Pirated Content) মালিকের থেকে সরাসরি সেই কনটেন্ট চুরি করে স্ট্রিম করেন অন্য উপায়ে যা মিডিয়া ও বিনোদন জগতে আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে উঠছে।
২২,৪০০ কোটির পাইরেসি দুনিয়া ভারতের
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম অত্যধিক মাত্রায় বেড়ে যাওয়ার কারণে বেআইনিভাবে কনটেন্ট স্ট্রিম করার মাত্রাও বেড়ে গিয়েছে। আর এই কারণে অসাধারণভাবে বানানো কনটেন্টও রেভিনিউ আনতে ব্যর্থ হচ্ছে। আর এর ফলস্বরূপ মিডিয়া ও বিনোদন ইন্ডাস্ট্রি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। সম্প্রতি আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়ং এবং মোবাইল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার যৌথ উদ্যোগে একটি সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ পেয়েছে। এই প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে, ভারতের পাইরেসির জগতের মূলধন প্রায় ২২,৪০০ কোটি টাকার।
চতুর্থ বৃহত্তম রাজস্ব আদায়কারী সেক্টরে পাইরেটেড কনটেন্ট
ফলে সমীক্ষা অনুযায়ী মিডিয়া ও বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির মধ্যেই চতুর্থ বৃহত্তম রাজস্ব আদায়কারী ক্ষেত্র হচ্ছে এই পাইরেসির দুনিয়া। ২০২৩ সালে সবথেকে বেশি রাজস্ব আদায়কারী সেক্টরের তালিকায় প্রথমেই আসে টেলিভিশন যেখানে এসেছে ৬৯,৬০০ কোটি রাজস্ব, দ্বিতীয় স্থানে আছে ডিজিটাল মিডিয়া যার রাজস্বের পরিমাণ ৬৫,৪০০ কোটি, তৃতীয় স্থানে প্রিন্ট মিডিয়ার রাজস্ব ২৬ হাজার বিলিয়ন এবং চতুর্থ স্থানে আশ্চর্যজনকভাবে রাজস্ব এসেছে ২২,৪০০ কোটি টাকা। খোদ বলিউড ও আঞ্চলিক সিনেমার ইন্ডাস্ট্রি একত্রে সংগ্রহ করেছে ১৯,৭০০ কোটির রাজস্ব, তালিকায় রয়েছে ষষ্ঠ স্থানে। সপ্তম স্থানে রয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকার গেমিং দুনিয়া। পাইরেসির কারণেই ওটিটি স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম এবং ফিল্মড এন্টারটেনমেন্ট দুনিয়ার সম্ভাব্য বহুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় সম্ভব হচ্ছে না।
কেন বাড়ছে পাইরেসি ?
'রব রিপোর্ট' অনুযায়ী মূলত তিনটি কারণে গ্রাহকদের মধ্যে সরাসরি স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের বদলে পাইরেটেড কনটেন্ট দেখার প্রবণতা বাড়ছে।
সাবস্ক্রিপশন: বিভিন্ন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের আলাদা আলাদা সাবস্ক্রিপশনের খরচ টানতে না পারার কারণে এই প্রবণতা বাড়ছে।
পছন্দের কনটেন্ট না পাওয়া: নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মে নিজেদের পছন্দের কনটেন্ট না পাওয়ার কারণেও পাইরেসির দিকে ঝুঁকছে মানুষ।
বর্ধিত সাবস্ক্রিপশন ফি: বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ধরনের প্ল্যাটফর্মগুলির সাবস্ক্রিপশন ফি অনেক বেশি হওয়ার কারণে পাইরেসির প্রবণতা বাড়ে।
এই সমীক্ষা অনুসারে দেখা গিয়েছে ৮৪ শতাংশ মানুষ সিনেমার টিকিটের টাকা খরচ করতে চান না বলে পাইরেটেড কনটেন্ট দেখেন আর ৭০ শতাংশ মানুষের কাছে ওটিটির সাবস্ক্রিপশনের জন্য টাকা খরচ বাহুল্য মনে হয়।
কারা বেশি দেখছে এই ধরনের কনটেন্ট
এই প্রতিবেদন অনুসারে ৭৬ শতাংশ মানুষ যারা এই ধরনের পাইরেটেড কনটেন্ট দেখেন, তারা মূলত ১৯-৩৪ বছর বয়সসীমার মধ্যেই পড়েন। আর ৪৫ বছর বা তাঁর বেশি বয়সীরা এই ধরনের কনটেন্টের জন্য সবথেকে বেশি সময় ব্যয় করে থাকেন। তাদের নজরে বেশি থাকে টেলিভিশন শো-গুলি। পুরুষদের ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি প্রবণতা রয়েছে এমন কিছু পুরনো ছবি পাইরেটেড সংগ্রহ করার যেগুলি এখন আর প্রেক্ষাগৃহে দেখা যায় না কিংবা অনুমোদিত স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যায় না। আর অন্যদিকে মহিলারা পাইরেসির সাহায্য নেন এক্সক্লুসিভ ওটিটি শো দেখার জন্য। টায়ার ২ শহরগুলিতেই এই ধরনের পাইরেটেড কনটেন্ট দেখার প্রবণতা বেশি। সিনেমাহলে যাতায়াতের অসুবিধে, প্রেক্ষাগৃহের অপ্রতুলতা এর অন্যতম কারণ। ভাষার মধ্যে হিন্দি কনটেন্টই সবথেকে বেশি পাইরেটেড হয়, অন্যদিকে ইংরেজি কনটেন্টের পাইরেটেড হওয়ার মাত্রা তুলনায় কম।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: Success Story: ইসরোর বিজ্ঞানী থেকে ২ কোটির ক্যাব ব্যবসা ! অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন এই ব্যক্তি