(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
World Largest Green Energy Plant: বিশ্বের সবচেয়ে বড় পুনর্নবীকরণ শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র! এবার ভারতের মাটিতেই
Adani Green Energy Limited: বিস্তীর্ণ অনুর্বর জমি। বসতি নেই, নেই কোনও উদ্ভিদও। কেন বেছে নেওয়া হল এই জমি?
কলকাতা: মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তান সীমান্ত। তার আগে বিস্তীর্ণ অনুর্বর জমি। এমনই নোনা জমি যে তাতে গাছ জন্মায় না। মাটির তলা থেকে যে জল ওঠে তাও নোনা। ভারতেরই এমন একটি জায়গা- গুজরাতের খাভড়া (Khavra in Gujarat) তৈরি হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম পুননর্বীকরণ যোগ্য শক্তির উৎপাদন কেন্দ্র বা Green Energy Plant- যার নাম Khavra Renewable Energy Park. তৈরি করেছে গৌতম আদানির সংস্থা আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেড। এই উৎপাদন কেন্দ্রে সৌরশক্তি (Solar Energy) ও বায়ুশক্তি উৎপাদিত হবে। PTI সূত্রের খবর, সম্প্রতি Adani Green Energy (AGEL) জানিয়েছে ওই উৎপাদন কেন্দ্রে মোট ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ তৈরির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। যার মধ্যে ইতিমধ্যেই ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, কাজ শুরুর ১২ মাসের মধ্যে ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ শুরু হয়েছে।
PTI-রিপোর্ট অনুযায়ী, এই প্রকল্পে মোট ২৪ লক্ষ সোলার মডিউল লাগানো হবে। ওই রিপোর্টেই জানানো হয়েছে, এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি (Renewable Energy) তৈরি হচ্ছে মোট ৫৩৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে। যা ফ্রান্সের প্যারিস শহরের অন্তত পাঁচ গুণ। পিটিআই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০২২ সালে প্রথম এই এলাকায় আসেন গৌতম আদানি। ওই বিস্তীর্ণ অনুর্বর জমিতে কোথাও কিছু ছিল না। কোনও পিনকোডও ছিল না। ৮০ কিলোমিটার দূরে থাকা একটি গ্রামের নাম ধরে এই এলাকাকে চেনা হতো। একটি ছোট্ট এয়ারস্ট্রিপ রয়েছে সেখানে - কোনও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল নেই। চারিদিক খাঁ খাঁ করে- তার মাঝে একটি কন্টেনারে সামান্য কিছু যন্ত্রপাতি দিয়ে চলে ওই অফিস। পিটিআই সূত্রের খবর, সেখান থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে ওই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি হয়েছে।
কেন ওই এলাকা?
অত্য়ন্ত নোনা জমিতে কোনও উদ্ভিদ জন্মায় না। কোনও বসতিও নেই। কিন্তু ওই এলাকার একটি বিশেষত্ব রয়েছে।
সৌরশক্তি পাওয়ার পরিমাণের (Solar Radiation) নিরিখে গুজরাতের খাভড়ার ওই এলাকা ভারতে দ্বিতীয়- লাদাখের পরেই। ফলে সৌরশক্তি উৎপাদনের জন্য খুব ভাল জায়গা। পাশাপাশি,বায়ুপ্রবাহের গতিবেগও অন্যান্য জায়গার থেকে অনেকটাই বেশি। ফলে বায়ুশক্তি উৎপাদনের জন্যও আদর্শ জায়গা। এমন একটি এলাকায় কাজ শুরু করে আদানি গ্রিন এনার্জি। সেখানে উইন্ড মিল বসানো হয়েছে। সোলার প্যানেল বসেছে। নোনা জল পরিস্রুত করার পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। শ্রমিকদের থাকার ব্যবস্থা ও আবশ্যিক কিছু পরিকাঠামোও গড়ে তোলা হয়েছে।
PTI-সূত্র অনুযায়ী, সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ভিনীত জৈন জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই ওই কেন্দ্রে ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়ে গিয়েছে। চলতি আর্থিক বর্ষে অর্থাৎ ২০২৫-এর মার্চের মধ্যে আরও ৪ গিগাওয়াট উৎপাদন শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। তারপর প্রতি বছরে ৫ গিগাওয়াট করে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে।
ATC -ভুজ-এর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার খাভড়াগামী বিমানের শেষ গাইড পোস্ট। তারপর থেকে বিমানচালক নিজের সিদ্ধান্তের উপরেই বিমান ওড়ায় এবং খাভড়ার এয়ারস্ট্রিপে বিমান নামায়। তারপর ফেরত যাওয়ার সময় ভুজ-এর ATC-তে ফোন করে জানিয়ে দিতে হয়- খবর PTI সূত্রে। মুন্দ্রা বা আহমেদাবাদ থেকে সপ্তাহে নির্দিষ্ট দিনে খাভড়া যায় ওই বিমান।
বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের সীমানা যেখানে শেষ হচ্ছে। তার থেকে ১ কিলোমিটার পরেই পাকিস্তানের সীমান্ত। ওই ১ কিলোমিটার জায়গা বিএসএফ দেখভাল করে।
রয়েছে একাধিক চ্যালেঞ্জ:
PTI রিপোর্ট জানাচ্ছে, ওই এলাকায় বৃষ্টির সময়ে মাটির ভিতর জল ঢোকে না। মাটি এবং মাটির তলার জল অসম্ভব নোনা। মার্চ থেকে জুনে এই এলাকায় ভয়াবহ ধুলো ঝড় হয়। কাছাকাছি বসতি ৮০ কিলোমিটার দূরে। যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় নেই বললেই চলে। সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল মাত্র ৩৫ দিনে ওই এয়ারস্ট্রিপ তৈরি করা হয়েছিল যাতায়াতের জন্য।
PTI সূত্রের খবর, সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে ৩০ গিগাওয়াটের এই প্রকল্পের মধ্যে ২৬ গিগাওয়াট সৌরশক্তি ও ৪ গিগাওয়াট বায়ুশক্তি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। প্রকল্পের গোটা এলাকা সরকার থেকে ৪০ বছরের জন্য লিজ নেওয়া হয়েছে। ২০২২ সালে শুরু হয়েছিল কাজ। এই প্রকল্পের জন্য ওই এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজও হয়েছে। তৈরি হয়েছে ১০০ কিলোমিটার রাস্তা, ৫০ কিলোমিটার পয়ঃপ্রণালী, নোনা জল পরিস্রুত করা এবং পানীয় জল শোধনের পরিকাঠামো। ১৮০ কিলোমিটারের অপটিক্যাল ফাইবার কেবল পাতা হয়েছে।