(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Dearness Allowances: কেন্দ্রের সঙ্গে ফারাক কমলেও, ১০% DA-তে আপত্তি আন্দোলনকারীদের, পেনশনের তত্ত্বে অনড় রাজ্যও
DA Agitation: বৃহস্পতিবার কলকাতার অ্যালেন পার্কে আয়োজিত বড়দিনের সূচনা অনুষ্ঠান থেকে DA বৃদ্ধির ঘোষণা করেন মমতা।
কলকাতা: নতুন বছরে পা রাখার আগে বড় ঘোষণা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। রাজ্যের সরকারি কর্মীদের মহার্ঘভাতা আরও ৪ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা করলেন তিনি। সরকারি কর্মী, শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মী, সকলেই বর্ধিত হারে DA পাবেন। উপকৃত হবেন রাজ্যের ১৪ লক্ষ সরকারি কর্মী। এই ঘোষণার পর, রাজ্যের সরকারি কর্মীদের DA বেড়ে হল ১০ শতাংশ, কেন্দ্রের সঙ্গে ফারাক কমে ৩৬ শতাংশ হল। পেনশনভোগীরাও বর্ধিত DA-র সুবিধা পাবেন। (Dearness Allowances)
বৃহস্পতিবার কলকাতার অ্যালেন পার্কে আয়োজিত বড়দিনের সূচনা অনুষ্ঠান থেকে DA বৃদ্ধির ঘোষণা করেন মমতা। মমতা সাফ জানান, কেন্দ্র এবং রাজ্যের বেতন পরিকাঠামো সম্পূর্ণ আলাদা। এ রাজ্যে পেনশন কমিশন চালু থাকা সত্ত্বেও, সরকারি কর্মীদের বাড়তি DA দেওয়া হয়। রাজ্য সরকার এটা নিজের ইচ্ছেয় দেয়। DA দিতে মোটেই বাধ্য নয় রাজ্যের সরকার। (DA Agitation)
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের DA বেড়ে ৪২ থেকে ৪৬ শতাংশ হয়। তার পরই ৪ শতাংশ DA বৃদ্ধির ঘোষণা করলেন মমতা। অর্থাৎ ফারাক কমে হল ৩৬ শতাংশ। DA-র দাবিতে যখন লাগাতার আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়িয়ে চলেছেন রাজ্যের সরকারি কর্মীদের একাংশ, নবান্নের সামনে ধর্না কর্মসূচির দাবি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন, যাতে সম্মতি দিয়েছে আদালতও, সেই সময়ই DA বৃদ্ধির ঘোষণা করে চমকে দিলেন মমতা।
আরও পড়ুন: DA Hike: বর্ষশেষের আগে সুখবর! ১ জানুয়ারি থেকে আরও ৪ শতাংশ ডিএ রাজ্যের
মমতার এই ঘোষণায় যদিও সন্তুষ্ট নন আন্দোলনকারী সরকারি কর্মীরা। কেন্দ্রের সমান DA আদায় করে ছাড়বেন বলেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁকা। DA নিয়ে এই সঙ্কট কবে কাটবে তার কোনও ইঙ্গিত এখনও পর্যন্ত মেলেনি। তবে আন্দোলনকারীদের দাবি নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে DA-র দাবি অন্যায় নয় বলে দাবি করছেন তাঁরা। কিন্তু দেশের জনসংখ্যা যদি ১৩০ কোটি ধরা হয়, সেই নিরিখে মাত্র ৪ শতাংশ মানুষই সরকারি চাকরি করেন। কারণ ২০২১ সালের পরিসংখ্যান বলছে, কেন্দ্র-রাজ্য মিলিয়ে সরকারি কর্মীর সংখ্যা ৫ কোটি। তাহলে বাকি ৯৬ শতাংশের অধিকারের কথা কে বলবেন, এই প্রশ্নও উঠে এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে।
একই সঙ্গে পেনশন কমিশনের বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসছে। ২০০৪ সালে পুরনো পেনশন প্রকল্প তুলে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের জন্য নতুন পেনশন প্রকল্প চালু হয়। একাধিক রাজ্যেও সেই ব্যবস্থা চালু হয়। পুরনো পেনশন প্রকল্প অনুযায়ী, ২০ বছর চাকরি করে অবসর নিলে মূল বেতনের ৫০ শতাংশ পেনশন পাওয়া যেত। নতুন পেনশন প্রকল্পে মূল বেতনের ১৪ শতাংশ কেটে নিয়ে পেনশন তহবিলে জমা করা হয়। তাতে আরও ১০ শতাংশ দেয় সরকার। সেই টাকা শেয়ার বাজারে ঢেলে যা লাভ হয়, সেই টাকায় পেনশন দেওয়া হয়, যা মূল বেতনের ৫০ শতাংশও হতে পারে, আবার ৫ শতাংশও। অর্থাৎ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীদের পেনশন নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও, সরকারের দায় থাকে না।
বাংলায় এই নতুন পেনশন প্রকল্প চালু হয়নি আজও। বামেরাও করে যায়নি, মমতাও নতুন পেনশন প্রকল্প চালু করেননি। পুরনো পেনশন প্রকল্পই চলছে বাংলায়। আর তাতেই রাজ্য সরকার অনড় অবস্থান নিচ্ছে। পেনশন এবং DA, দুই দিতে গেলে খরচে কুলোবে না বলে জানানো হচ্ছে। যে কোনও একটি চলতে পারে বলে রাজ্যের তরফে দাবি আসছে, কিন্তু আন্দোলনকারীরা তা মানতে নারাজ। সেই নিয়ে লাগাতার টানাপোড়েন চলছে। এমন পরিস্থিতিতে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের সরকারি কর্মী এবং পেনশনভোগীদের জন্য DA বৃদ্ধি করলেন মমতা।