Basirhat News: পাশে নেই প্রিয়জন, না আছে কাগজপত্র, SIR আতঙ্ক বসিরহাটের বৃদ্ধাশ্রমে, শুরু রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা
Basirhat Old Age Home SIR Fear: ২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন, তার আগে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া, যা SIR নামে পরিচিত।

সমীরণ পাল, বসিরহাট: SIR নিয়ে উদ্বেগে বসিরহাটের একটি বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকরা। কোথায় পাবেন প্রয়োজনীয় নথি, সেই নিয়ে দুশ্চিন্তায় তাঁরা। বেশ কয়েক জনের বাড়িতে এনুমারেশন ফর্ম পৌঁছলেও, সেই ফর্ম হাতে পাবেন কী করে, তা জমাই বা পড়বে কী করে, সেই নিয়ে আতান্তরে পড়েছেন বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকরা। পুরসভার তরফে আশ্বস্ত করা হলেও, ভয় কাটছে না। আর এই অবস্থায় আবাসিকদের বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের ভরসা জোগাতে কার্যত শুরু হয়ে গেছে রাজনীতির প্রতিযোগিতা। তৃণমূল বলছে, তারা সব ব্যবস্থা করে দেবে। একই সুর স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের গলাতেও। (Basirhat Old Age Home SIR Fear)
২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন, তার আগে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া, যা SIR নামে পরিচিত। এই SIR- নিয়ে অনেকের মধ্যে উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে। বসিরহাটের ‘আপন আলয়’ বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিক বলরাম দাস বলেন, “সবাই তো অসুস্থ। আমি নড়তে পারি না, চলতে পারি না। কী করে ফর্ম ফিলআপ করব, চিন্তা হচ্ছে।” বৃদ্ধাশ্রমের আর এক আবাসিক মীরা মিত্রের কাছে নথিপত্র আছে কি না জানতে চাইলে, তিনি জানান, কিছু নেই তাঁর কাছে। (Basirhat News)

জীবনের সায়াহ্নে ওই বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই হয়েছে অনেকেরই। কারও ছেলেমেয়েই নেই.। কেউ আবার জানিয়েছেন, কাছের মানুষ খোঁজই নেয় না। ঘর-বাড়ি ছাড়া এই মানুষগুলির মনেও এখন আশঙ্কার মেঘ জমেছে SIR নিয়ে। বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিক আঙুরবালা সরকারও জানান, তাঁর কাছে আধার, ভোটার, কোনও নথিপত্র নেই। জামাইয়ের কাছে সব রাখা আছে। এখনও পর্যন্ত SIR-এর ফর্ম ফিলআপ করার কথা কেউ বলেনি বলে জানান তিনি।
এই আবাসিকদের কারও বাড়ি ছিল বর্ধমানে, কারও আবার দক্ষিণ দিনাজপুরে। এখন আশ্রয় হয়েছে ভিন্ জেলার এই বৃদ্ধাশ্রম। SIR সংক্রান্ত প্রক্রিয়ায় নথি প্রয়োজন হলে কীভাবে জোগাড় করবেন সেসব তা ভেবে কিনারা করতে পারছেন না কেউ। আবাসিক বলরাম দাস বলেন, “আমার স্থায়ী ঠিকানায় আমি থাকি না। পাঁচ বছর ধরে এখানেই আছি। চিন্তায় আছি।”
একসময় নার্সের কাজ করা মীনা সর্বাধিকারী নামের এক বৃদ্ধা আবার দুশ্চিন্তায় ভুগছেন এই বয়সে না তাঁকে দেশছাড়া হতে হয়। তাঁর কাছেও কোনও নথি নেই। বৃদ্ধাশ্রমের কর্ণধার চৈতালি হালদার জানিয়েছেন, কারও বারি বসিরহাটে, কারও বর্ধমানে, কারও দিনাজপুরে। কারও সেরকম নথিপত্র নেই। আধার, ভোটার কার্ডও নেই অনেকের। তাই কী হবে ভেবে আতঙ্কে রয়েছেন।

আর এই প্রেক্ষাপটে বৃদ্ধাশ্রমের এই বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের ভরসা জোগাতে কার্যত শুরু হয়ে গেছে রাজনীতির প্রতিযোগিতা। বসিরহাটে তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা কো-অর্ডিনেটর বাদল মিত্র বলেন, “যদি কোনও জায়গায় সমস্যা হয়, আমরা সঙ্গে থেকে বৈধ ভোটার তালিকা থেকে যাতে নাম বাদ না যায়, তার জন্য সদা সচেষ্ট থাকব।”
অন্য দিকে, বিজেপি-র বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি রাজেন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “তৃণমূল এই যে নোংরা রাজনীতি খেলছে SIR নিয়ে, মানুষ আগামী দিনে এর জবাব দেবে। তৃণমূলের কাছে ফর্ম ফিলআপ করবেন না। আমরা ভারতীয় জনতা পার্টি, কোনও সমস্যা হলে আপনাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াব।”
একে অশক্ত শরীর, তার ওপর এই বয়সে মাথায় চেপে বসছে নতুন উদ্বেগ। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের এই মেঘ কাটবে কীভাবে? চিন্তায় বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকরা।























