Sukanta Majumdar : 'তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়তে উপযুক্ত জায়গা নয় কংগ্রেস, তাই বিজেপিতে আসুন' নিচুতলার কর্মীদের আহ্বান সুকান্তর
BJP : যখন কংগ্রেস, তৃণমূল আর সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব একমঞ্চে, তখন বাংলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করা বাম ও কংগ্রেস কর্মীদের একাংশ পড়েছেন ফাঁপরে। সেই ক্ষোভকেই কি বিজেপি ব্যবহার করতে চাইছে ?
কমলকৃষ্ণ দে, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় ও সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান : তৃণমূলের (TMC) বিরুদ্ধে লড়তে উপযুক্ত জায়গা নয় কংগ্রেস (Congress)। তাই বিজেপিতে (BJP) আসুন। বাংলায় কংগ্রেসের নিচুতলার কর্মীদের প্রতি এমনই আহ্বান জানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
বিজেপি-বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-র মঞ্চে কংগ্রেসের পাশে থাকার কথা বলছে তৃণমূল। কিন্তু এরাজ্য়ে সেই তৃণমূল কখনও কংগ্রেস ভাঙিয়ে তাদের ঝালদা পুরসভা দখল করছে। কখনও রানিনগর পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠনের আগে কংগ্রেসে ভাঙন ধরাচ্ছে। যা নিয়ে এরাজ্যে কংগ্রেসের নীচুতলার একাংশে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Election) আগে, সেই ক্ষোভের হাওয়াকেই নিজেদের পালে টানার কৌশল নিল বিজেপি। কংগ্রেস কর্মীদের সরাসরি বিজেপিতে যোগদানের আহ্বান জানালেন সুকান্ত মজুমদার।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) বলেছেন, 'আজকে আমি কংগ্রেসের পুরনো কর্মীদের বলব, যদি সত্যিই তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়তে চান, তাহলে কংগ্রেস উপযুক্ত জায়গা নয়, বিজেপিতে আসুন। কংগ্রেস কোনওভাবে তৃণমূলের কাঁধে হাত দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছে, খড়কুটোর মতো ধরে বাঁচার চেষ্টা করছে। কিন্তু কংগ্রেস নেতারা ভুলে গেলেন, তাঁদের কর্মীরা যে তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে মার খেল, তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে মাথা ফাটল, বাড়িঘর পুড়ে গেল, বোমায় মারা গেল, আজকে তার কর্মীদের বলিদানের কথা ভুলে কংগ্রেসের নেতারা তৃণমূলের কাছে গিয়ে পদলেহন করছেন !'
ইন্ডিয়ার মঞ্চে তৃণমূলের সঙ্গে থাকা নিয়ে একাধিকবার সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী। তবে সুকান্ত মজুমদারের আহ্বান নিয়ে কড়া জবাব দিয়েছেন তিনিও। কৌস্তভ বাগচী বলেছেন, 'সুকান্তবাবু কেন বিজেপির নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে এই বোধ তৈরি করতে পারছেন না যে তৃণমূলের সঙ্গে লড়তে বিজেপিই যথেষ্ট। বিজেপির এক বড় অংশের কর্মীরা হতাশ। তাঁরা মনে করছেন বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারছে না। অন্যদলের কর্মীদের আহ্বানের আগে নিজের দলের কর্মীদের মনোবল যদি চাঙ্গা করতে পারেন, তাহলে মনে হয় ওনার দলের জন্য বিষয়টা অনেক বেশি উপকারী হবে।'
তৃণমূলকে রুখতে অতীতে একাধিকবার সিপিএমের সমর্থন চেয়েছেন শুভেনদু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে হারার পরও, তৃণমূলকে রুখতে সিপিএমের নিচুতলার কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দেন বিরোধী দলনেতা। এবার কার্যত সেই পথে হেঁটে কংগ্রেসকর্মীদের উদ্দেশে আহ্বান জানালেন বিজেপির রাজ্য় সভাপতি।
বিজেপি রাজ্য সভাপতির যে মন্তব্যের পর অবশ্য তাঁকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি তৃণমূল (TMC)। রাজ্যের শাসকদলের পক্ষে তৃণমূল বিধায়ক ও অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেছেন, 'তিনি একজন সাংসদ ও সভাপতি। তিনি নির্বাচিত হয়ে বাংলায় হকের লড়াই লড়েনি। বাংলার লড়াই আগে লড়ুন। বঞ্চনার লড়াই লড়ুন। আসলে ওরা মাইগ্রেশন চায়। নিজেদের কর্মী নেই। ওরা শুধু নেতা, সাংসদ কেনে। সরকার ভাঙে'।
যখন কংগ্রেস, তৃণমূল আর সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব একমঞ্চে, তখন বাংলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করা বাম ও কংগ্রেস কর্মীদের একাংশ পড়েছেন ফাঁপরে। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে তাঁদের সেই ক্ষোভকেই কি বিজেপি ব্যবহার করতে চাইছে ? লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে ইন্ডিয়া জোট তৈরি করেছে বিরোধীরা (Opposition)। কিন্তু, বাংলায় সেই জোটের কী প্রভাব পড়বে ? সেটাই দেখার।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন