Border Cross: ওপার থেকে এপারে আসার 'ফুল প্যাকেজ' বিক্রি হতো লক্ষ লক্ষ টাকায়, সীমান্ত পারাপারেও সিন্ডিকেট
Fake Passport: জাল নথি দিয়ে ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি হতো অনুুপ্রবেশকারীদের। পরিচয়পত্র বানাতে অনুপ্রবেশকারীদের নকল মা-বাবা সাজত সিন্ডিকেটের সদস্যরা।
পার্থপ্রতিম ঘোষ: বিদ্বেষের বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ যত বাড়ছে ততই বাড়ছে মানবপাচারকারীর সংখ্যা। সীমান্ত পারাপারেও সিন্ডিকেট। ওপার থেকে এপারে আসা, অনুুপ্রবেশকারীদের আস্তানা ঠিক করে দেওয়া থেকে শুরু করে, জাল নথি দিয়ে ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি, ফুল প্যাকেজ। এই প্যাকেজ বিক্রি হত লক্ষ লক্ষ টাকায়। পরিচয়পত্র বানাতে অনুপ্রবেশকারীদের নকল মা-বাবা সাজত সিন্ডিকেটের সদস্যরা। নদিয়ায় এই সিন্ডিকেট চক্রের রমরমা কারবার। গত কয়েক দিনে নদিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে একাধিক মানবপাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের জেরায় জানা গেছে, একটা বিশাল নেটওয়ার্ক কাজ করছে সীমান্তবর্তী এলাকায়। হাঁসখালির রামনগর, ওমরপুর, বড় চুপুরিয়া, ছোট চুপুরিয়ায় কাজ করছে এই নেটওয়ার্ক। কোনও ব্যক্তি ওপার থেকে এপারে কীভাবে আসবে, কোথায় থাকবে, কীভাবে ভারতীয় পরিচয়পত্র পাবে, নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে অশান্তির জেরে অনুুপ্রবেশ বাড়ছে। এর সুযোগ নিচ্ছে পাচারকারীরা। অনেকেই পেশা পাল্টেছে। আগে যারা গরু, চাল পাচার করত, তারাই এখন মানব পাচারে যুক্ত। মোটা টাকার বিনিময়ে চলছে পাচার। এই পরিস্থিতিতে অনুপ্রবেশ রুখতে তারা সক্রিয় বলে দাবি করেছে রানাঘাট পুলিশ জেলা।
বাংলাদেশ থেকে অনুুপ্রবেশের সংখ্যা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে গোয়েন্দাদের চিন্তা বাড়াচ্ছে দুই দেশের কাঁটাতারহীন সীমান্ত। এর আগে প্রকাশ্যে এসেছে মুর্শিদাবাদে কাঁটাতারহীন সীমান্তের ছবি। একই ছবি নদিয়ায়। জমি-জটের কারণে এখনও জেলার একাধিক জায়গায় ভারত- বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নেই। হাঁসখালি ও ধানতলার প্রায় ৮ কিলোমিটার জায়গা কাঁটাতারহীন। তার জেরে অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা বাড়ছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। এই বছর বাংলাদেশ থেকে আসা ৩০০ জন অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রুজু হয়েছে ৮০টি মামলা। অনুপ্রবেশে সাহায্য়ের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ৫০ জন ভারতীয়। হাঁসখালিতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বয়ে যাচ্ছে ইছামতী নদী। সেখান দিয়ে অনায়াসে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢোকা সম্ভব বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। সীমান্তে BSF-এর নজরদারি থাকলেও, চোরা পথে অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা রয়েই যাচ্ছে।
অশান্তির পরিবেশ বাংলাদেশে। সীমান্ত এলাকায় বাড়ছে অনুপ্রবেশ। শুধু অনুপ্রবেশ হচ্ছে তাই নয়, হাতে পেয়ে যাচ্ছেন আধার কার্ড, পাসপোর্ট-সহ একাধিক নথি। এই তথ্যপ্রমাণ আবার তৈরি হচ্ছে জাল নথি দিয়ে। অনুপ্রবেশকারীদের নথি তৈরি করতে পাচারকারীরাই সেজে নিচ্ছেন মা-বাবা। নদিয়ার মতো রানাঘাটেও বিস্তীর্ণ এলাকা কাঁটাতার বিহীন। বাড়বে অনুপ্রবেশ। তা রুখতেই তৎপর রানাঘাট পুলিশ। নিরপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কাঁটাতার বিহীন সীমান্ত। হাঁসখালি-ধানতলার প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকা কাঁটাতার বিহীন। পুলিশ সূত্রে দাবি, আগে যাঁরা গরু পাচার করতেন, তাঁরাই এখন মানবপাচারের সঙ্গে যুক্ত। সীমান্তে সক্রিয় সিন্ডিকেটের বিশাল নেটওয়ার্ক। বাংলাদেশ থেকে ক্রমশ বাড়ছে অনুপ্রবেশের সংখ্যা। জাল নথি দিয়েই অনুপ্রবেশকারীদের আস্তানাও ঠিক হয়ে যাচ্ছে। ঘিন কুয়াশার জেরে সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকছে এদেশে। এর আগে মুর্শিদাবাদেও বিস্তীর্ণ এলাকার কাঁটাতার ছাড়া রয়েছে, তার ছবি প্রকাশ্যে এসেছিল।