(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
SSC TET : 'ওঁদের কি মা-বাবা ছাড়া কোনও অভিভাবক নেই!' ফের আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের হয়ে প্রশ্ন তুললেন চিরশ্রী বিশী
এরা তো আমার নাতি-নাতনির বয়সী। এঁদের তো কম্প্রোমাইজ করার কোনও ব্যাপারই নেই। বললেন শিক্ষাবিদ প্রমথনাথ বিশীর মেয়ে চিরশ্রী বিশী চক্রবর্তী।
বিজেন্দ্র সিংহ, কলকাতা: ন্যায্য প্রাপ্য কেন বঞ্চিত হতে হবে? কেন দিনের পর দিন পড়ে থাকতে হবে রাস্তায়? খোলা চিঠির পর ফের আন্দোলনকারী SSC ও TET চাকরিপ্রার্থীদের হয়ে প্রশ্ন তুললেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক এবং শিক্ষাবিদ প্রমথনাথ বিশীর মেয়ে চিরশ্রী বিশী চক্রবর্তী।
'ওঁদের কি কোনও অভিভাবক নেই ! '
প্রমথনাথ বিশী-কন্যা বলেন, অন্যায়ের সঙ্গে কোনও আপস নয়, আন্দোলনকারীদের জন্য কিছু করতেই হবে ! চিরশ্রী বিশীর গলায় ঝরে পড়ল আক্ষেপের সুর। ' ওঁদের কি কোনও অভিভাবক নেই ! কেন ওরা রাস্তায় পড়ে থাকবে। ওঁরা তো অন্যায্য কিছু চাইছেন না। এরা তো আমার নাতি-নাতনির বয়সী। এঁদের তো কম্প্রোমাইজ করার কোনও ব্যাপারই নেই। বাবা-মা ছাড়া ওঁদের কি অভিভাবক নেই কেউ ? '
এর আগেও খোলা চিঠিতে প্রতিবাদ করেন বিশী-কন্যা। তিনি নিজে একজন প্রাক্তন শিক্ষক। ৩০ বছর অধ্যাপনা করে আসা, চিরশ্রী বিশী চক্রবর্তী এক খোলা চিঠিতে লেখেন, ' এরা আমার কেউ রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয় নয়, এরা আমার আত্মার অঙ্গ। দুর্ভাগ্যক্রমে আমার এখন সে ক্ষমতা নেই। তাই লিখিতভাবে জানাই, যে এই শিক্ষা ও শিক্ষকজাতির প্রতি যে অপমান চলেছে দীর্ঘদিন ধরে, অবিলম্বে তার অবসান চাই। কেবল মুখের কথায় নয় কাজে করে দেখানো হোক। '
শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছাত্রদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন প্রমথনাথ বিশী। কবিগুরু যখন নোবেল পান, তখনও তিনি শান্তিনিকেতনের ছাত্র। পরবর্তীকালে বাংলা সাহিত্যে প্রমথনাথ বিশীর অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। তিনি বিধানসভা এবং রাজ্যসভার সদস্যও ছিলেন।
তাঁর মেয়ে চিরশ্রী এখন আশি পেরিয়েছেন। কিন্তু, বঙ্গে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ, একঝাঁক তরুণ-তরুণীর রাস্তায় বসে থাকার ছবি, তাঁকে নাড়া দিয়ে গেছে। খোলা চিঠিতে তিনি লেখেন,
'আমার বাবা সম্ভবত এই বয়সেই শিক্ষাজগতের এক মারাত্মক অনৈতিকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে, তাঁর সহযোদ্ধা ডঃ সুকুমার সেন-সহ বিদ্যাসাগর মূর্তির পাদদেশে অনশনে বসেছিলেন। আমার যদি শারীরিক ক্ষমতা থাকত, তাহলে আমাকেও আপনারা কলকাতার ধূলিলুন্ঠিত রাস্তায়, এই সমস্ত অত্যাচারিত, অবিচারগ্রস্ত, মা সরস্বতীর প্রতিনিধি ছাত্রবর্গের সঙ্গে দেখতে পেতেন।
আমার শিক্ষাভূমির কাছে দাবি, যে এই বিচারের আশায় ভূলুন্ঠিত ছাত্রদের পদস্পর্শ করে ক্ষমা চাওয়া এবং তাদের শিক্ষাজগতে ফিরিয়ে আনা। এদের যথার্থ স্থান হোক ক্লাসরুমে, ব্ল্যাকবোর্ডের সামনে। আরেকটা কথা মনে রাখা দরকার। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না, করেনি। এবারেও করবে না। তার প্রাচীনতর উদাহরণ আমাদের মহাভারত।'