Christmas Eve 2025: প্রসাদে থাকে ৫৬ রকমের কেক! ক্রিসমাস ইভে মহাসমারোহে শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মভিটেয় বিশেষ পুজোর আয়োজন
Christmas Eve Puja at Kamarpukur: সন্ধ্যায় আরতির পরে, নিয়মমাফিক শুরু হয় প্রভু যীশুর আরাধনা। শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের মন্দিরের পাশেই, আটচালায় প্রভু যীশুর ছবি বসিয়ে মোমবাতি ও ফুল দিয়ে সাজানো হয়

বাপন সাঁতরা, গোঘাট: রাত পোহালেই ২৫ ডিসেম্বর। ক্রিসমাস। তার একদিন আগে, অর্থাৎ ২৪ ডিসেম্বর, ক্রিসমাস ইভে যীশুখ্রীস্টের আরাধনার আয়োজন করা হল কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে। প্রত্যেক বছরের মতো এই বছরেও শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মভিটায় মহাসমারোহে পালিত হল যীশু পুজো। ভক্তরা প্রত্যেক বছরের মতো জড়ো হয়েছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মভিটায়। মহা সমারোহে এদিন পুজোর আয়োজন করা হয়।
সন্ধ্যায় আরতির পরে, নিয়মমাফিক শুরু হয় প্রভু যীশুর আরাধনা। শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের মন্দিরের পাশেই, আটচালায় প্রভু যীশুর ছবি বসিয়ে মোমবাতি ও ফুল দিয়ে সাজানো হয়। ছবির সামনে দেওয়া হয় কেক, লজেন্স, ফল, পেস্ট্রি ও মিষ্টি। পুজোর পরে, যিশুর জন্মকাহিনী পাঠ করা হয়। মঠের নিয়ম মেনে, ২৪ ডিসেম্বর মঠের সন্ধ্যা আরতির পরেই শুরু হয় এই বিশেষ অনুষ্ঠান। বিশেষ প্রার্থনা সঙ্গীত, বাইবেল পাঠের মধ্যে দিয়ে এই উৎসব পালন করা হয়। প্রতি বছরের মতো, এই বছরও ৫৬ রকমের কেক দিয়ে প্রভু যীশুকে ভোগ নিবেদন করা হয় রামকৃষ্ণ মঠে। গোটা মঠ চত্বর এ দিন আলোয় সাজিয়ে তোলা হয়েছে। রামকৃষ্ণ মিশন আয়োজিত বাইবেল পাঠ ও প্রাক ক্রিসমাস উপলক্ষ্যে কামারপুকুর সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন ধর্মপ্রাণ মানুষজন ভিড় জমান ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মভূমি কামারপুকুরে।
শুধু কামারপুকুর নয়, বেলুড় মঠেও এদিন বিশেষ পুজো অর্চনার আয়োজন করা হয়। বেলুড় মাঠে যেমন মহা সমারোহে পালন করা হয় দুর্গাপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজোর মতো পুজো, তেমনই প্রত্যেক বছরই এখানে ক্রিসমাস ইভে, অর্থাৎ ২৪ ডিসেম্বর আয়োজন করা হয় যীশুখ্রীস্টের বিশেষ আরাধনার। এই বছরও তার অন্যথা হল না। ক্রিসমাস ইভে নিয়ম মেনে আয়োজন করা হল যীশু পুজোর। দর্শনার্থীদের এই পুজো ঘিরে আলাদা আকর্ষণ থাকে। মূল মন্দির চত্বর বিশেষভাবে সাজানো না হলেও, সাজিয়ে তোলা হয় মন্দিরের বাইরের অস্থায়ী অংশ। কিন্তু অনেকেই জানেন না, এই উদযাপনের পিছনে রয়েছে একটি গল্প, যার শিকড় হুগলী জেলায়।
শোনা যায়, শ্রীরামকৃষ্ণের প্রয়াণের পরে একবার নিজের সঙ্গীদের নিয়ে হুগলী জেলার আঁটপুরে এক গুরু ভ্রাতার বাড়ি গিয়েছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। সেখানে তিনি বেশ কিছুদিন কাটিয়েছিলেন। সেখানে থাকাকালীন প্রত্যেকদিন অগ্নিকুণ্ডের চারিদিকে বসে ধর্ম নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা হত। এভাবেই একদিন, সেই অগ্নিকুণ্ডের ধারে বসেই স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর সঙ্গীদের বলেছিলেন যীশুখ্রীস্টের আত্মত্যাগের ইতিহাস। বুঝিয়েছিলেন তাঁৎ গুরুত্ব আর তাঁর অপার মহানুভবতা আর সাহসে গাথা। ঘটনাচক্রে সেই দিনটি ২৪ ডিসেম্বর। ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হলেও স্বামীজীকে ছুঁয়ে গিয়েছিল যীশুখ্রীস্টের আত্মত্যাগ, সাহসিকতা আর মহানুভবতা। সেই ঘটনার কথা মনে রেখেই আজও বেলুড় মঠে আয়োজন করা হয় যীশু পুজোর।






















