TMC: তৃণমূলের তিন মন্ত্রীর সম্পত্তির পরিমাণ বৃদ্ধির নিয়ে তরজা, নথি প্রকাশ করে অভিযোগ সিপিএম-এর
TMC CPIM Allegation: বিরোধী দলের একাধিক নেতার সম্পত্তি বৃদ্ধির মামলায় আয়কর দফতরের সঙ্গে ইডিকেও যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। শনিবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলল সিপিএম।
সুদীপ্ত আচার্য ও শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা: ২০১১-২০১৬ সালের মধ্যে তৃণমূলের (TMC) একাধিক নেতা মন্ত্রীর সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে। সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলা নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই নথি সামনে এনে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলল সিপিএম (CPIM)। তিন মন্ত্রীর হাইকোর্টের (Highcourt) নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি নিয়েও কটাক্ষ করেছে সিপিএম। সম্মানহানি হচ্ছে বলে আদালতে গিয়েছি, প্রতিক্রিয়া ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim)।
২০১৭’য় দায়ের হওয়া দুটি জনস্বার্থ মামলায়, তৃণমূল (TMC)-সহ বিরোধী দলের একাধিক নেতার সম্পত্তি বৃদ্ধির মামলায় আয়কর দফতরের সঙ্গে ইডিকেও যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। আর এই প্রেক্ষাপটেই শনিবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলল সিপিএম।
সিপিএম-এর দাবি
সিপিএমের দাবি, নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়ার তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সাল থেকে ২০১৬’র মধ্যে রাজ্যের তৃণমূলের একাধিক নেতা মন্ত্রীর সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে বিস্তর। যার মধ্যে ফিরহাদ হাকিমের সম্পত্তি বৃদ্ধির পরিমাণ ২ কোটি ২৭ লক্ষ ৩৬ হাজার ১৭৩ টাকা। ব্রাত্য বসুর ১ কোটি ২২ লক্ষ ১৯ হাজার ৩৭৬ টাকা এবং মলয় ঘটকের ৬১ লক্ষ ৬৫ হাজার ৪৩৩ টাকার সম্পত্তি বেড়েছে এই সময়ের মধ্যে।
তৃণমূলের বক্তব্য
এ নিয়ে অবশ্য আগেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন তৃণমূলের তিন মন্ত্রী। তৃণমূল নেতা ও মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, " গায়ে আলকাতরা লাগিয়ে, কুৎসা করে যে রাজনীতি হচ্ছে, ভারতের জনগণ দেখছে।" তৃণমূল নেতা ও মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, "বাড়ির ভ্যালুয়েশন পাঁচ বছরে বাড়ে। এফডি’র সুদ বাড়ে।" ফিরহাদ হাকিম বলেন, "আমি ছোট থেকে ব্যবসা করি। তা দিয়ে সংসার চালাই। বলা হচ্ছে, আয় লুকিয়েছি।" তিন মন্ত্রীর পাশাপাশি শসকদলের আরও নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি বৃদ্ধিরও অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল নেতা ও মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, "এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে বলে আমরা মনে করছি।"
আরও পড়ুন, অনুব্রতকে নিয়ে তৃণমূলের অবস্থান কী? ফিরহাদের মন্তব্যে জল্পনা!
পাল্টা আক্রমণে সিপিএম ও। সুজন চক্রবর্তী বলেন, "৬ জন মন্ত্রী নির্বোধের মতো বলছে, যে ওরা ব্যবসা করে সম্পত্তি করেছে। ওরা কোর্টে গেছে, কোর্টে দেখা হবে। ক্ষমতা থাকলে বাম নেতাদের কথা বলুক। আর নিজেদেরটা প্রমাণ করে দেখাক।" সিপিএমের অভিযোগ, তৃণমূলের একাধিক নেতা ২০১১ সালে যে প্যান নম্বর নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় দিয়েছিলেন, ২০১৬ সালে সেই প্যান নম্বর দেননি!
সম্পত্তি মামলায় ইডিকে যুক্ত করার, হাইকোর্টের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ফিরহাদ হাকিম-সহ রাজ্যের তিন মন্ত্রী। মেয়র এও বলেন, "আমরা জেল খাটতে ভয় পাই না। আমরা কোর্টে গেছি, কারণ আমাদের অসম্মান হচ্ছে।" বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ, "যারা এতদিন অন্যকে চমক ধমক করতেন, তারা এখন ইডির নাম শুনেই ফিউজ হয়ে যাচ্ছেন। কোর্টে যাচ্ছে ইডিকে ম্যানেজ করতে। ভয় কেন ইডিকে?" সব মিলিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শাসক-বিরোধী তরজা তুঙ্গে।