TMC Updates: বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন, জেলায় ব্যাপক রদবদল তৃণমূলের, বাদ পড়লেন তিন বিধায়কও
Purba Bardhaman News: রদবদলের পর দেখা গিয়েছে, শহর এবং ব্লক সভাপতির পদ থেকে ন'জনকে সরানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তিন জন বিধায়কও।
কমলকৃষ্ণ দে, রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election 2023)। সে কথা মাথায় রেখে, পুজোর মুখেই পূর্ব বর্ধমান (Purba Bardhaman) জেলায় ব্লক স্তরে ব্যাপক রদবদল করল তৃণমূল (TMC)। ব্লক সভাপতির পদ থেকে বাদ পড়লেন তিন বিধায়কও। সূত্রের খবর, ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি নিয়ে দ্বিমত রয়েছে দলে। এই রদবদলে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
জেলাস্তরে ব্য়াপক রদবদল ঘটাল তৃণমূল
রদবদলের পর দেখা গিয়েছে, শহর এবং ব্লক সভাপতির পদ থেকে ন'জনকে সরানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তিন জন বিধায়কও। মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী, মঙ্গলকোটের ব্লক সভাপতিও ছিলেন। তাঁকে সরানো হয়েছে। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্যকে সরানো হয়েছে মেমারি এক নম্বর ব্লকের সভাপতির পদ থেকে। রদবদলের জেরে জেলার যুব সভাপতির পদ হারিয়েছেন জামালপুরের বিধায়ক অলক মাঝি।
পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, মূলত ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি মেনেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, "মূলত দলের স্বার্থে ,আর এক ব্যক্তি এক পদের হিসেব মেনেই এই পরিবর্তন হয়েছে।"
অপসারিত অপূর্ব চৌধুরীর কথায়, "দল বলেছিল বিধায়ক থাকলে ব্লক সভাপতি হওয়া যাবে না। তবে আমি যাকে চেয়েছি আমার লোককেই ব্লক সভাপতি করা হয়েছে।"
আরও পড়ুন: Sukanta Majumdar: গুলি-মন্তব্যের জের, অভিষেকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের সুকান্ত মজুমদারের
যদিও ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি মেনে আদৌ রদবদল হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলচেন দলের কর্মীদের একাংশ। কালনা শহরের সভাপতি পদ থেকে পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তপন পোড়েলকে সরিয়ে, দায়িত্ব দেওয়ার হয়েছে খোদ জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে। বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান কাকলি গুপ্ত তা-কে, বর্ধমান এক নম্বর ব্লকের সভাপতি পদেই রেখে দেওয়া হয়েছে। জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহমুদ খান থেকে গেছেন ব্লক সভাপতি পদে।
এছাড়াও, বেশ কিছু ক্ষেত্রে ব্লকের সভাপতি পদে রাখা হয়েছে পঞ্চায়েত প্রধান অথবা জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের। তা নিয়েওসাফাই দিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ। তাঁর বক্তব্য, "কাউন্সিলর বা যাঁরা জেলা পরিষদের সাধারণ সদস্য, তাঁদের আলাদা পদ ধরা হয় না । বর্ধমান ডেভলপমেন্ট অথরিটি চেয়ারম্যান কাকলি গুপ্তর নাম আগে থেকেই ঠিক ছিল ব্লক সভাপতি হিসেবে। আর জামালপুরের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহমুদ খান ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তাই তাঁকে ব্লক সভাপতি করা হয়েছে।"
মেমারি ২ নম্বর ব্লকের সভাপতি পদ থেকে মহম্মদ ইসমাইলকে সরিয়ে, হরিসদন ঘোষকে করা হয়েছে। মন্তেশ্বরের বিধায়ক ও মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর অঙ্গুলিহেলনেই এমনটা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। তাতে জেলায় মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লার বিরুদ্ধে কর্মীদের মধ্যে থাকা অসন্তোষও প্রকাশ্যে চলে এল। রাস্তায় নেমে তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দিলেন তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। 'সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী গো ব্যাক' ধ্বনি দিতে দিতে এগোয় মিছিল।
সিদিক্কুল্লাকে নিয়ে অসন্তোষ দলের অন্দরে
এ নিয়ে তৃণমূলকে খোঁচা দিয়েছে বিজেপি। বিজেপি-র বর্ধমান জেলা কমিটির সহ সভাপতি সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, "তৃণমূলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তৈরি করার এটা ব্যর্থ চেষ্টা ,আসলে পরিবর্তন নয় নিজেদের মধ্যে ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে গন্ডগোল, সেইগুলোই পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। ঠিক মতো পঞ্চায়েত ভোট হলে তৃণমূল বুঝে যাবে সাধারণ মানুষ কাদের সঙ্গে আছে।" এ নিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও, ফোন বন্ধ ছিল সিদ্দিকুল্লার।