ঘর অগোছাল বঙ্গ বিজেপির ? জল্পনা উস্কে দিল সুকান্ত আর দিলীপের এই মন্তব্য
তৃণমূলকে চেপে ধরার পরিবর্তে কি এখনও অগোছাল বঙ্গ বিজেপি? এই জল্পনা উস্কে দিয়েছে সোমবারের একটি ঘটনা।
দীপক ঘোষ, বিজেন্দ্র সিংহ, সৌমিত্র রায়, কলকাতা : বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে ফাটলের ইঙ্গিত দেখে তাকে কৌশলে কাজে লাগাতে তৎপর তৃণমূল। মঙ্গলবার হেস্টিংসে বিজেপি অফিসে রাজ্য কমিটির বৈঠক হয়। কিন্তু সেই সময় দফতরে হাজির থাকলেও ওই বৈঠকে যাননি দিলীপ ঘোষ। এ’নিয়ে মুখ খুলেছেন দিলীপ ঘোষ।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার পার্থ চট্টোপাধ্যায়, গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল, চরম অস্বস্তিতে তৃণমূল। কিন্তু, এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলকে চেপে ধরার পরিবর্তে কি এখনও অগোছাল বঙ্গ বিজেপি? এই জল্পনা উস্কে দিয়েছে সোমবারের একটি ঘটনা।
সোমবার হেস্টিংস পার্টি অফিসে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের বিশেষ বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেই সময় দলীয় অফিসে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও, বৈঠকে তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে তৈরি হয় জল্পনা। এ নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
প্রশ্ন : আজকের বৈঠকে দিলীপ ঘোষ উপস্থিত হতে পেরেছিলেন?
সুকান্ত মজুমদার : না উনি আসেননি আজকে।
প্রশ্ন : এখানে তো ওনাকে দেখা গিয়েছে, উনি তো এসেছেন আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন...
সুকান্ত মজুমদার : উনি কোনও কাজে ব্যস্ত ছিলেন, সেই জন্য হয়তো আসেননি। অথবা অনেক সময় হয়তো দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয় বৈঠক শুরু হয়ে যাওয়ার পর, সেই জন্য হয়তো বুঝতে পারেননি, আমাদের কোথায় মিটিং হচ্ছে।
কিন্তু দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, ' আমার যে বৈঠকে থাকার কথা আমি সেই বৈঠকেই ছিলাম। ওই বৈঠকে আমার থাকার কথা ছিল না। উনি ( সুকান্ত মজুমদার ) হয়তো জানেন না সন্ধ্যা ৭ টায় কোর কমিটির বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। সর্বোচ্চ নেতৃত্বর সঙ্গেই আমার বৈঠক ছিল।'
' দলে কোণঠাসা দিলীপ '
এই আবহেই বঙ্গ বিজেপিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জল্পনা উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেছে তৃণমূল। দু’দিন আগে যে সৌগত রায় দিলীপ ঘোষের অতীতে তৃণমূলে যোগদানের জল্পনা উস্কে দিয়েছিলেন, ' দলে কোণঠাসা দিলীপ ঘোষ। ভোটের আগে তৃণমূল কংগ্রেসের সাথে যোগাযোগ করেছিল। তৃণমূলে আসতে চেয়েছিল। ভোটের পরেও যোগাযোগ করেছিল আসবে বলে তৃণমূলে।'
নাড্ডাকে কী জবাব দিলেন দিলীপ
সূত্রের দাবি, সোমবার রাতে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বৈঠক হয়, সহ পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য, সাধারণ সম্পাদক সংগঠন অমিতাভ চক্রবর্তী ও সতীশ ধন্দের। তখনই CBI নিয়ে দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের প্রসঙ্গ ওঠে। তখন অমিত মালব্য দিলীপকে বলেন, জেপি নাড্ডার অফিস থেকে ফোন করে এ’বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে। এরপর জেপি নাড্ডাকে ফোন করেন অমিত মালব্য। তাঁর ফোনেই দিলীপ ঘোষের সঙ্গে কথা বলেন নাড্ডা।
কী বলেছেন সেই বিষয়ে দিলীপ ঘোষের কাছে জানতে চান ডেপি নাড্ডা। কোন প্রেক্ষিতে কথাটি বলেছেন, তা বলেন দিলীপ। তখন নাড্ডা বলেন, যে বিষয়ে বিতর্ক হতে পারে, সেরকম কিছু এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। যদিও, এরপরও সিবিআই ও ইডি প্রসঙ্গে তাঁর ভিন্ন অবস্থানে অনড় দিলীপ ঘোষ।
সব মিলিয়ে দুর্নীতি ইস্যুতে তৃণমূলের অস্বস্তির মতোই, বঙ্গ বিজেপির অভ্যন্তরীণ সমীকরণ নিয়েও রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা।