Kolkata: ২১ বছর পর সন্তানের অকালমৃত্যুর বিচার পেলেন কলকাতার দম্পতি, ১ কোটি জরিমানা হাসপাতালের
Kolkata News: জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে ১ কোটি টাকা জরিমানা চেন্নাইয়ের হাসপাতাল ও চিকিত্সকের। সন্তানের অকাল মৃত্যুর বিচার পেলেন কলকাতার দম্পতি।
সন্দীপ সরকার, কলকাতা: জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে ২১ বছরের আইনি লড়াই। সন্তানের অকাল মৃত্যুর বিচার পেলেন কলকাতার দম্পতি। গাফিলতির জন্য ১ কোটি টাকা জরিমানা চেন্নাইয়ের হাসপাতাল ও চিকিত্সকের। ২ দশকের আইনি যুদ্ধের পর মিলল বিচার। জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে ১ কোটি টাকা জরিমানা চেন্নাইয়ের হাসপাতাল ও চিকিত্সকের। সন্তানের অকাল মৃত্যুর বিচার পেলেন কলকাতার দম্পতি।
কী হয়েছিল?
সালটা ১৯৯৮। ক্যালকাটা বয়েজ স্কুলের ক্লাস টুতে পড়ত অনামিত্র মোদক। পরিবার সূত্রে খবর, ৮ বছর বয়সে ম্যালেরিয়া হয় তার। জ্বর থেকে সেরে উঠলেও ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কলকাতার বেশ কয়েকটি হাসপাতালে দেখানোর পর ২০০০ সালের ১২ জুন বাবা-মা ছেলেকে নিয়ে যান চেন্নাই-এর শঙ্কর নেত্রালয়ে।
জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালত সূত্রে খবর, তদন্ত কমিশনের তদন্তে উঠে আসে, চোখ দেখে চেন্নাই-এর শঙ্কর নেত্রালয়ের চিকিত্সক জানান, মাইনর স্কুইন সার্জারি করতে হবে। বালকের হার্টের সামান্য ত্রুটি থাকলেও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ জানান, অ্যানাস্থেসিয়ায় কোনও অসুবিধা হবে না। কিন্তু ১৪জুন অস্ত্রোপচার শুরুর আগেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় অনামিত্রর। তদন্তে জানা গিয়েছে, অ্যানাস্থেসিয়া করার সময় যখন গলা দিয়ে টিউব ঢোকানো হচ্ছিল, তখন ছাত্রর গলার মাংসপেশীতে সমস্যা দেখা দেয়। মাংসপেশী শিথিল করার জন্য ইঞ্জেকশন দেন চিকিত্সক। ৮ বছর বয়সী কাউকে ওই ইঞ্জেকশন দেওয়া যাবে না- প্রস্তুতকারী সংস্থার নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন, ইউনেসকোকে ধন্যবাদ জানিয়ে আজ মমতার পদযাত্রা, গাড়ির রুটবদল শহরে
২০০১ সালের ২মে জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন মৃত ছাত্রের বাবা-মা। আদালতের নির্দেশে চেন্নাইয়ে কমিশন তৈরি করা হয়। জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালত সূত্রে খবর, কমিশনের তদন্তেই এই সব তথ্য উঠে আসে।
কী রায় দেওয়া হল?
২১ বছর পর জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালত রায় দিয়েছে, চিকিত্সায় গাফিলতির জন্য হাসপাতালকে জরিমানা দিতে হবে ৮৫ লক্ষ টাকা, অ্যানাস্থেসিস্টকে দিতে হবে ১০ লক্ষ, এবং চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ দেবেন ৫ লক্ষ টাকা। সেই সঙ্গে মামলার খরচ বাবদ হাসপাতালকে দিতে হবে আরও ১ লক্ষ টাকা। ৬ সপ্তাহের মধ্যে ওই টাকা দিতে হবে। না হলে দিলে ৯ শতাংশ হারে সুদ।
এখন কসবার রাজডাঙায় থাকেন অনামিত্রর অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা মা এবং সিইএসসি-র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার বাবা। হাসপাতাল উচ্চ আদালতে যেতে পারে, সেই কথা মাথায় রেখে চলছে নতুন লড়াইয়ের প্রস্তুতি।