RG Kar News: 'যে গুণ্ডারা এসেছিল আঙুল তুলে বলেছিল আজ বেঁচে গেলেও কাল বাঁচবি না, রেপ করে দেব', ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা জানালেন নার্স
Ghantakhanek Sange Suman: 'জীবনে কেউ কোনওদিন এমনটা দেখেনি। একসময় ভাবছিলাম হয়তো আমাকেও মেরে ফেলতে পারে'...
কলকাতা: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নারকীয় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে 'রাত দখলে' তখন রাজ্যজুড়ে পথে নেমেছেন মেয়েরা। কলকাতা, জেলার গণ্ডি ছাড়িয়ে প্রতিবাদের ঝড় আছ়ড়ে পড়েছিল দিল্লি, মুম্বই, পুণে, বেঙ্গালুরুতেও। দাবি একটাই 'জাস্টিস ফর আর জি কর।' অথচ সেই রাতেই আরজি করে ঘটে যায় শিউরে ওঠার মতোই ঘটনা। স্বাধীনতার মধ্যরাতে হাসপাতালে চলল ভাঙচুর, 'হুমকি'র মুখে পড়লেন নার্সরা? এবিপি আনন্দের ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন অনুষ্ঠানে সেই অভিজ্ঞতাই জানালেন আরজি কর হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্স।
মঙ্গলবার ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন অনুষ্ঠানে এবিপি আনন্দের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে প্রশ্ন করেন, কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের তরফে বলা হয়েছে, যারা আছেন ওখানে তাঁদের তো নিরাপত্তা দিতে হবে। সেই তাণ্ডবের দিন কী চলছিল? কী পরিস্থিতি হাসপাতালের ভিতরে?
এই প্রশ্নের উত্তরে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের নার্স শুচিস্মিতা মজুমদার বলেন, 'স্বাধীনতার রাত ছিল সেদিন। কথা ছিল রাত থাকবে মেয়েদের দখলে। সেদিন রাতে ডিউটি ছিল আমার। আমি রাস্তায় নামতে পারিনি। তবে দেখেছি কাতারে কাতারে মানুষ রাস্তায় নেমেছেন বিচার চেয়ে। দোষীদের শাস্তি চেয়ে। সেই সময়ই উত্তেজিত জনতা নিরাপত্তার বেড়াজাল ভেঙে ঢুকে পড়েন হাসপাতালে। কিছু জন ইমার্জেন্সি বিল্ডিংয়ের দিকে যায়, কয়েকজন ট্রমা কায়ের বিল্ডিংয়ের দিকে আসে এবং ভাঙচুর শুরু করে দেয়। সে যা পরিস্থিতি জীবনে কেউ কোনওদিন এমনটা দেখেনি। একসময় ভাবছিলাম হয়তো আমাকেও মেরে ফেলতে পারে।
সেই রাতে সুরক্ষা এমনকী বেঁচে থাকা নিয়ে চিন্তা!
শুচিস্মিতার কথায়, 'সেই সময় হাসপাতালে ছিল পুলিশি নিরাপত্তা। কিন্তু আমরা ওই নিরাপত্তার মধ্যে থেকেও অসুরক্ষিত বোধ করছিলাম। আমরা কিন্তু খোলা আকাশের নিচে ছিলাম না। অথচ মৃত্যুভয়কে কাছ থেকে দেখেছি। এই আতঙ্ক সারাজীবন থাকবে।
'লজ্জাজনক' পুলিশের ভূমিকা
আরজি করের নার্সের কথায়, 'পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত লজ্জাজনক। পুলিশই বিল্ডিংয়ে বিল্ডিংয়ে ঢুকে আমাদের কাছে নিরাপত্তা চাইছে। বলছেন, আপনারা আমাদের বাঁচান। কেউ কেউ কম্বল চাইছেন, পেমেন্টদের বাথরুমেও ঢুকে পড়েন। পুলিশ কোথায় আমাদের সুরক্ষা দেবে তা না হয়ে আমরা ওদের সুরক্ষা দিচ্ছি তখন। ডিউটিরত অবস্থায় আমাদের লক্ষ্য ছিল রোগীদের সুরক্ষা সবার আগে।
ভয়ঙ্কর সেই হুমকি!
স্বাধীনতার মধ্যরাত যেন তখন ভয়াবহ আকার নিয়েছে আর জি করের মধ্যে। সেই রাতের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে শিউরে ওঠেন কর্তব্যরত নার্স। এবিপি আনন্দে বলেন, 'হঠাৎই বাইরে থেকে কিছু দুষ্কৃতী, বহিরাগত গুণ্ডারা ঢুকে পড়ে Special Newborn Care Unit (SNCU)- ডিপার্টমেন্ট। সেখানে তারা হুমকি দেয়, বলে- আজ বেঁচে গেছিস, কাল বাঁচবি না। মা-বাচ্চা কেউ বাদ যাবে না। রেপ করব। আমাদের তাহলে নিরাপত্তা কোথায়?'
যে রাত ছিল স্বপ্নপূরণের অঙ্গীকারের। যে রাত ছিল অর্ধেক আকাশের স্বাধীনতার লড়াইয়ের। সেই রাতেই এই ঘটনা নতুন করে প্রশ্ন তোলে সুরক্ষা, নিরাপত্তার।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে