Mayapur Tourism: কৃষ্ণভক্তিতে শান্তির খোঁজ! সংকীর্ত্তণে বিভোর হতে চলুন মায়াপুর
Nadia Tour Tips: শ্রীচৈতন্যদেব আর কৃষ্ণভক্তির টানে বিশ্বের নানা দেশ থেকে এখানে ভিড় জমান কৃষ্ণভক্তরা।
কলকাতা: সারাদিনের কর্মব্যস্ততায় হাঁফ ধরে যায়। সেই হাঁফ থেকে বাঁচতে ভরসা ছুটির দিন। কাছেপিঠে ইতিউতি ঘুরে বুক ভরে অক্সিজেন নেওয়া যায় এই দিনেই। এই সপ্তাহে তাই চলে গিয়েছিলাম নদিয়ার মায়াপুরে। বাংলার কোলে নদীর পাড়ে থাকা শান্তির জায়গা এই মায়াপুর।
একদিকে বয়ে যাচ্ছে ভাগীরথী আর অন্যদিকে জলঙ্গি। এই দুটি যেখানে এসে মিলেছে তারই পাড়ে এই মায়াপুর। শ্রীচৈতন্যদেব আর কৃষ্ণভক্তির টানে বিশ্বের নানা দেশ থেকে এখানে ভিড় জমান কৃষ্ণভক্তরা। হরিনাম সংকীর্ত্তণে মাতোয়ারা হল সকলেই। সকলের জন্য়ই মন্দির খোলা। ইচ্ছেমতো এককোণে বসে শুনতে পারেন সংকীর্ত্তণ। কলকাতা থেকে খুব কাছেই রয়েছে মায়াপুর শ্রীধাম। সকালে গিয়ে বিকেলেই ফিরে আসতে পারেন। তবে আমি বলব যদি সম্ভব হয় মায়াপুরে একটা দিন থাকুন। তাহলে আরও ভালভাবে সময় কাটাতে পারবেন।
কৃষ্ণনাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই কাজ করে ইসকন। ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা আচার্য এ সি ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ। তাঁর তৈরি এই সংস্থা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছে কৃষ্ণনামের মাহাত্ম্য। তার টানেই ইউরোপ,আমেরিকা, আফ্রিকা থেকে বহু ভক্তের নিত্য আসা-যাওয়া লেগেই থাকে। মায়াপুর ইসকনে দর্শনার্থীদের অন্যতম পছন্দের বিষয় হল ভোগ। তবে ভোগের জন্য আপনাকে সকাল সকালই কুপন কেটে নিতে হবে। আগে ওখানে পৌঁছে আগেই দুপুরে খাওয়ার জন্য কুপনটি কেটে নেবেন। সেটা আপনারা বিভিন্ন কাউন্টার থেকে সংগ্রহ করতে পারেন যেমন গীতা ভবন,নামহট্ট ভবন,গদা ভবন।
কী কী দেখবেন এখানে?
চন্দ্রোদয় মন্দির,গোশালা,একাধিক ভবন রয়েছে এখানে, প্রভুপাদের কর্মক্ষেত্র, কাছেই নবদ্বীপে চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান ও কর্মক্ষেত্র, এশিয়ার বৃহত্তম মন্দির তৈরি হচ্ছে এখানে। এছাড়াও রয়েছে জলঙ্গি নদী। নৌকা বিহার করতে পারেন। স্টিমারে করে নদী পেরিয়ে নবদ্বীপ ধাম দর্শনত করতে পারেন।
কী ভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে ট্রেনে যেতে হলে দুইভাবে যাওয়া যায়। হাওড়া থেকে কাটোয়া লাইনের ট্রেনে নবদ্বীপ গিয়ে সেখান থেকে স্টিমারে চেপে মায়াপুর যাওয়া যায়। নয়তো শিয়ালদহ স্টেশন থেকে ট্রেনে প্রথমে কৃষ্ণনগর যান, সেখান থেকে অটো নিয়ে স্বরূপগঞ্জ-এর ঘাটে পৌঁছবেন। সেখান থেকে পেরোলেই ওপারে মায়াপুর| ট্রেন ভাড়া ২০ টাকা আর অটো ভাড়া ৩০ টাকা|
বাসে করেও যাওয়া যায় মায়াপুর। সেক্ষেত্রে বারাসাত বা কলকাতার ধর্মতলা থেকে ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে সোজা কৃষ্ণনগর অথবা কাটোয়া-নবদ্বীপ হয়েও মায়াপুর যাওয়া যায়। যদিও ট্রেন রুট বেশি সহজ এবং আরামপ্রদ।
রাতে থাকবেন কোথায়?
রাতে থাকার জন্য মায়াপুরে অনেক জায়গা রয়েছে। ওখানে একাধাকি হোটেল এবং গেস্ট হাউস রয়েছে। তবে আমার মতে মূল মন্দিরের ভিতরে অনেকগুলি ভবন আছে সেখানে কোনওটাতে থাকতে পারেন। বড়সড় গ্রুপ থাকলে ওই ঘর ভাড়া নিলে বেশ সাশ্রয়ী হয়। তবে সিঙ্গল ঘর পাওয়াটা বেশ কঠিন হতে পারে।
সান্ধ্যকালীন নামকীর্ত্তণ ও আরতি দেখার জন্য এবং অনুভব করার জন্য অবশ্যই এখানে একরাত থাকা প্রয়োজন। পাশাপাশি এমন চমৎকার গঙ্গা অববাহিকা দেখার সুযোগও হাতছাড়া করবেন না। আপনি আস্তিক হোন না নাস্তিক, এই জায়গার প্রশান্তি এবং নান্দনিকতা আপনার ভাল লাগতে বাধ্য। একবার এলে বার বার আসতে চাইবেন এই মায়াপুরে।
আরও পড়ুন : বিঠোভেনের শহর, রামধনু রং, ঘুমের ওপারে নতুন দেশ...