Gaighata Molestation Case: 'প্রাণে বেঁচেছি কোনওমতে, বাইরে বেরতে আতঙ্ক লাগছে', এবিপি আনন্দে এক্সক্লুসিভ গাইঘাটার নিগৃহীতা
Gaighata News: মায়ের পুজো দেখতে গিয়ে যে নিজের সম্মান বাঁচানোর লড়াই লড়তে হবে, তা ভাবতেও পারেননি গাইঘাটার তরুণী। পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। কী বললেন এবিপি আনন্দে এক্সক্লিউসিভ সাক্ষাৎকারে?

গাইঘাটা: এখনও সেই বিভীষিকাময় মুহূর্তটা টাটকা। কালীপুজো দেখতে বেরিয়েছিলেন বন্ধুর সঙ্গে। কিন্তু মায়ের পুজো দেখতে গিয়ে যে নিজের সম্মান বাঁচানোর লড়াই লড়তে হবে, তা ভাবতেও পারেননি গাইঘাটার তরুণী। পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু মঙ্গলবার রাতের পর থেকে কাজে যেতেও ভয় পাচ্ছেন। এবিপি আনন্দে এক্সক্লিউসিভ সাক্ষাৎকারে সেই মুহূর্তের বিবরণ দিতে গিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে ফেললেন গাইঘাটার নিগৃহীতা- - - -
প্রশ্ন: আপনি যেভাবে আক্রান্ত হয়েছেন, খুব কষ্টের মধ্যে রয়েছেন। তবুও যদি ঠিক কী হয়েছিল একটু যদি আমাদের বলেন
নিগৃহীতা: কালীপুজোর রাতে আমি একটা বন্ধুর সঙ্গে বাইকে করে পুজো দেখে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। ওখানে চারজন ছিল। আমার ওপর হঠাৎ করে চড়াও হয়। আমার সঙ্গীর কলার ধরে বাইক থেকে নামানোর চেষ্টা করে। আমার হাতে বাইট করেছিল। আমার বাড়ি থেকে ২ মিনিটের ব্যবধানে ঘটনাটি ঘটেছে বলে আমি হয়ত বেঁচে গিয়েছি। আমি আমার দাদাকে ফোন করে ডাকি। দাদা ও দাদার বন্ধুরা এলে সেই চারজনকে জিজ্ঞাসা করে যে কেন আমাকে মারা হয়েছে? কিন্তু ওদেরও মারধর শুরু করে আচমকা। দাদার মাথায়, নাকে মেরে ফুলিয়ে দেওয়া হয়। দাদার বন্ধুদের পা ভেঙে দেওয়া হয়। কান দিয়ে রক্ত ঝড়ছিল সবার। সেই পরিস্থিতিতে ওদের আরও অনেকে চলে এসেছিল। অত্যন্ত অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করা হয়।
প্রশ্ন:ঠিক কখন ঘটনাটি ঘটেছিল? যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, সেই এলাকাটি কেমন ছিল?
নিগৃহীতা: ঘটনাটি ঘটে রাত ১২.৩০ নাগাদ। আমাদের এলাকায় এক প্যান্ডেল থেকে অন্য় প্যান্ডেলে যাওয়ার রাস্তা, যেখানে অনেকেই ছিলেন, সেই জায়গা থেকে টেনে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়।
প্রশ্ন: জনবিচ্ছিন্ন এলাকা নয়, তবুও দুষ্কৃতীরা এতটা বেপরোয়া? আপনার ওপর এভাবে আক্রমণ করা হল?
নিগৃহীতা: অনেকের নাম নিয়ে আমাদের বারবার শাসানো হচ্ছিল যে দেখে নেব, এই করে নেব, ওই করে নেব। আমরা সব নামগুলো আমরা থানায় দিয়েছি। এই দুষ্কৃতীর দল তৈরি হয়েছে আমাদের এলাকায়, এমন পরিস্থিতিত কখনও ভাবতেই পারি না। ছোট থেকে এখানে বড় হয়েছি। প্রচুর পুজো হয় এখানে।
প্রশ্ন: যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের আগে থেকে চেনেন বা দেখেছেন?
নিগৃহীতা: না, আগে থেকে চেনা নয়। আমরা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। রাস্তায় ওরা সবাই মদ্যপ ছিল। আমাদের দেখে টানা-হিঁচড়ে করা শুরু করে দেয়। আমরা বাইক নিয়ে যাচ্ছিলাম। আর ওরা দল বেঁধে ছিল। ঘটনার অনেক পরে আশেপাশের লোক এসেছিল।
প্রশ্ন: আপনারা কতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন?
নিগৃহীতা: থানায় আমরা ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছি আমরা। তাদের মধ্য়ে শনাক্ত করা হয়েছে ২ জনকে। বাকিদের এখনও শনাক্ত করা যায়নি। আমরা ফটো দিয়েও অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
প্রশ্ন: কী বলবেন এই ঘটনার পর?
নিগৃহীতা: আমার বাড়ি থেকে বেরোতে ভয় লাগছে এখন। এরা যদি ঘুরে বেড়ায়, আমরা বাইরে বেরব কীভাবে। আমি নিজে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। নিজে প্র্য়াক্টিস করি। কিন্তু আমি তো নিজেই এখন সেফ ফিল করছি না। বাইরে বেরনো, কাজে যাওয়া কোনওটাই তো সেফ মনে হচ্ছে না। পড়াশুনো শিখে কী হবে? ভবিষ্যৎ তো নেই কোনও।
প্রশ্ন: যে এলাকায় আপনি বড় হয়েছেন, ছোটবেলা কেটেছে, সেখানে এমন ঘটনার মুখোমুখি হবেন, কখনও ভেবেছিলেন?
নিগৃহীতা: এটা কোনওভাবেই মাথায় আসার কথাই না। এমনটা অনভিপ্রেত। দুষ্কৃতীদের একটা চক্র রয়েছে বড়। তাঁদের আসকারাতে এই ঘটনা ঘটেছে। নিঃসন্দেহে বড় কোনও হাত রয়েছে।
(বক্তব্য পুরোটাই গাইঘাটার নিগৃহীতা তরুণীর বয়ান অনুযায়ী)






















