North 24 Pargana News: শতবর্ষ পেরিয়ে মৃত্যু , বৃদ্ধের প্রয়াণে ডিজে বাজিয়ে নাচ হাবরার গ্রামে
বৃদ্ধের শেষ ইচ্ছে রাখতে একেবারে অন্যভাবে পালন শেষকৃত্য। শোকের আবহে আনন্দের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠল হাবরায়।
সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: ১০০ বছর পার করে 'দাদুর মৃত্যু'। বৃদ্ধের শেষ ইচ্ছে রাখতে একেবারে অন্যভাবে পালন শেষকৃত্য। শোকের আবহে আনন্দের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠল হাবরায়।
শতায়ু বৃদ্ধের প্রয়াণে ডিজে বাজিয়ে নাচ করতে দেখা গেল গোটা গ্রামকে। পুরুষ মহিলা-সহ বয়স্ক প্রতিবেশীরাও গানের তালে কোমর দোলালেন। শোক ভুলে গোটা গ্রাম মেতে উঠল উৎসবের মেজাজে। শেষকৃত্যেও চলল ডিজে, তাসা বাজিয়ে নাচ। সাময়িকভাবে শোক দেখা গেলেও পরবর্তীতে নাতি নাতনি-সহ পরিবারের সদস্যরাও অংশ নিলেন ডিজে যাত্রায়। দাদুর ইচ্ছে অনুযায়ী, আনন্দের আবহে সম্পন্ন হল শেষযাত্রা।এমনকী মৃতদেহ কাধে তুলেও চলল নাচ।
বৃদ্ধের মৃত্যুতে তাসা, ডিজে বাজিয়ে শেষকৃত্যে নামে ছোটরা। বর্তমানে ষাট বছর পার করতেই হিমশিম খাচ্ছে নতুনপ্রজন্ম। কত প্রাণ চলে যাচ্ছে অল্প বয়সে। সেখানে শতবর্ষ পেরিয়ে মৃত্যু হল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবরা থানার দেবেন হাজরার। রবিবার শেষকৃত্যের সময় পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদেরও দেখা যায় ডিজের তালে মেতে উঠতে। তবে ডিজে বক্সের সঙ্গে ছিল খোল করতাল।
বাংলার ১৩১০ সালে জন্মগ্রহণ করেন এই দেবেন হাজরা। মৃত্যু হয় ১৪২৯ সালে। সেই হিসেবে ১১৯ বছর বয়স হয়েছিল দেবেনবাবুর। যদিও বৃদ্ধের বয়সের সেভাবে কোনও প্রামাণ্য নথি পাওয়া যায়নি পরিবারের কাছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গ্রামে প্রায় ৫০০ নিজের পরিবারের লোকজন। যার মধ্যে দেড়শো নাতি-নাতনি আর তাদের আবদার মেনেই দাদুর শেষকৃত্যে ডিজের বাজনা। এ এক অন্য ছবি ধরা পড়ল হাবরায়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দেবেন হাজরা যাত্রা ভালবাসতেন। স্থানীয়দের যাত্রা শেখাতেন তিনি। টিভি , সোশ্যাল মিডিয়া তখন ভাবনার অতীত, সেই সময় যাত্রা নিয়েই বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াতেন দেবেন হাজড়া। যাত্রার দৌলতে পরিচিতি পেয়েছিলেন যাত্রাগুরু হিসেবে। তাই গুরুর মৃত্যুতে ভিড় জমান প্রায় হাজার খানেক মানুষ। এক সময় জীবনের যাত্রাপথে যাদের হাতে ধরে শিল্পের কলা-কৌশল শিখিয়েছিলেন, শেষযাত্রায় গুরুকে এক ছাড়েননি সেই শিষ্যরা।