Paschim Medinipur News: পশ্চিম মেদিনীপুরে ডাইনি অপবাদে আদিবাসী মহিলাকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ
Paschim Medinipur: আক্রান্তের পরিবারের দাবি, এলাকার কয়েকজন বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। বছর পঞ্চাশের মহিলাকে তাঁদের অসুস্থতার জন্য দায়ী করে ডাইনি অপবাদ দেওয়া হয়। এরপরই বাড়িতে চড়াও হয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়।
সৌমেন চক্রবর্তী, মেদিনীপুর: ডাইনি অপবাদে আদিবাসী মহিলাকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে। গতকাল ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর ব্লকের সাতগেড়িয়া এলাকায়। আক্রান্তের পরিবারের দাবি, এলাকার কয়েকজন বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। অভিযোগ, বছর পঞ্চাশের মহিলাকে তাঁদের অসুস্থতার জন্য দায়ী করে ডাইনি অপবাদ দেওয়া হয়। এরপরই বাড়িতে চড়াও হয়ে মহিলাকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম মহিলা মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
এই ঘটনায় ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হলেও, ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ধরনের ঘটনা আটকাতে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে আদিবাসীদের সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল।
একুশ শতকেও কুসংস্কারের দাপট! মাঝেমধ্যেই ডাইনি সন্দেহে মারধর, পরিবারকে একঘরে করে দেওয়ার ঘটনা দেখা যাচ্ছে। কিছুদিন আগেই বাঁকুড়ার কেন্দবনি গ্রামে ডাইনি অপবাদে এক আদিবাসী পরিবারকে একঘরে করার অভিযোগ ওঠে মোড়লদের বিরুদ্ধে। হেনস্থা থেকে মুক্তি পেতে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে গরিব আদিবাসী পরিবার।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কেন্দবনি গ্রামের বাসিন্দা এক ব্যক্তি প্রতিবেশীদের জানিয়েছিলেন, স্বপ্নাদেশ পেয়ে মনসা পুজোর আয়োজন করেছেন তাঁর স্ত্রী। অভিযোগ, সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই মহিলাকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে পরিবারকে একঘরে করে দেন গ্রামের মোড়লরা। এখানেই শেষ নয়। ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখায় তাঁদের দুই আত্মীয়াকেও সামাজিকভাবে বয়কট করা হয়েছে বলে অভিযোগ। জরিমানা করা হয় ২৫ হাজার টাকা। সেই টাকা দিতে না পারায় বাসিন্দাদের একাংশ বাড়ি থেকে গৃহপালিত পশু ও জিনিসপত্র লুঠ করে নিয়ে যাচ্ছে বলে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন দুই মহিলা। যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গ্রামের মোড়ল নিমাই হাঁসদা। তাঁর দাবি, ‘মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। এর কোনও ভিত্তি নেই। আমরা কাউকে কোনও ফতোয়া দিইনি।’
সমাজ থেকে কীভাবে দূর করা যাবে এই অন্ধবিশ্বাস? তা নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার শুরু করছেন যুক্তিবাদীরা। বাঁকুড়া বিজ্ঞানমঞ্চের সম্পাদক জয়দেব চন্দ্র বলেছেন, ‘পুরোটাই কুসংস্কার। আদিবাসী দলিত পরিবারের মধ্যে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। অবিলম্বে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দরকার। আমরাও এলাকায় যাব। সচেতনতা প্রচার করব।’
দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন বাঁকুড়া ২ নম্বর ব্লকের বিডিও শুভব্রত চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি দেখছি। এলাকায় গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলব যাতে ঠিকঠাক থাকতে পারেন। সেই রকম ব্যবস্থা করব। এমন জিনিস কখনও কাম্য নয়।’