Purba Bardhaman: অনলাইনে বোমা 'হোম ডেলিভারি', কাটোয়ায় পর্দাফাঁস
Katwa Bomb: বোমা তৈরির পর তা ছবি তুলে পাঠানো হতো গ্রাহকের কাছে। গ্রাহকের পছন্দ হলে চলত দরাদরি। পুলিশ সূত্রে খবর, একবারে বেশি পরিমাণে কিনলে থাকত বিশেষ ছাড়ও।
রানা দাস, কাটোয়া, পূর্ব বর্ধমান: এ যেন অনলাইন খাবার ডেলিভারির কাজ। তফাৎ একটাই, খাবারের বদলে ডেলিভারি হয় বোমা। কাটোয়ার মুলটিতে এমনই এক নেটওয়ার্কের পর্দাফাঁস পুলিশের। জালে এক অভিযুক্ত। ধৃতের নাম মকবুল শেখ।
কী অভিযোগ?
নানা ধরনের বোমা (Bomb)। এক এক বোমার, এক একরকম আয়তন, এক একরকম কাজ। বোমা তৈরির পর তা ছবি তুলে পাঠানো হতো গ্রাহকের কাছে। গ্রাহকের পছন্দ হলে চলত দরাদরি। পুলিশ সূত্রে খবর, একবারে বেশি পরিমাণে কিনলে থাকত বিশেষ ছাড়ও।
কীভাবে বেচাকেনা:
পুরো প্রক্রিয়া চলত অনলাইনেই (Online)। অনলাইনের বরাত পাঠাত ক্রেতা। দরদামও হতো। তারপর পার্সেল করে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হতো বোমা। টাকাও পাঠানো হতো অনলাইনেই।
কোন বোমার কত দাম?
২৫০ টাকায় সুতলি বোমা, ৪৫০ টাকায় কৌটো বোমা বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। ধৃতকে জেরা করে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য পুলিশের হাতে।
বহুদিন ধরেই বোমার ব্যবসার খবর ছিল জেলা পুলিশের কাছে। কিন্তু কীভাবে বেচাকেনা চলছে তা বোঝা যাচ্ছিল না। শেষপর্যন্ত অভিযান চালিয়ে বোমা উদ্ধার করা হয়। অভিযুক্তের বাড়ির শৌচালয়ের ছাদ থেকে বোমা উদ্ধার করা হয়। সুতলি বোমা, কৌটো বোমা উদ্ধার হয়। বম্ব স্কোয়াডকে ডাকা হয়েছে। অভিযুক্তের ফোন দেখতেই অভিনব পদ্ধতির পর্দা ফাঁস। সেখান থেকে তথ্য খুঁজছে পুলিশ। কোথায় তৈরি হতো বোমা, আর কারা কারা যুক্ত, কারা এসব কিনত, সেগুলো খোঁজা হবে। অর্ডার পেয়েই কী বোমা তৈরি হতো? সেক্ষেত্রে কারা বরাত দিত সেটাও খোঁজা হচ্ছে।
কী বলছেন প্রাক্তন পুলিশকর্তারা:
রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন আইজি পঙ্কজ দত্ত বলেন, 'এটা আর তাজ্জব হওয়ায় বিষয় নয়। আমি আর অবাক হই না। এবার তো মেশিন গানও অনলাইনে পাওয়া যাবে। পুলিশ ধরেছে তাও ভাল। কারা কিনত, কীভাবে কিনত, সবই দেখতে হবে।' প্রাক্তন পুলিশ কর্তা সলিল ভট্টাচার্য বলেন, 'আর সত্যিই বলার কিছু নেই। বোমা অফুরন্ত। নতুন নতুন ঘটনা ঘটছে। বোমা তৈরি, অস্ত্র ব্যবসা, এখন কুটির শিল্প হয়ে গিয়েছে।'
শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও:
বিজেপি (BJP) নেতা রাহুল সিনহা বলেন, 'এর চেয়ে চমৎকৃত খবর সারা বিশ্বে হয়েছে কিনা জানি না। দুয়ারে রেশন, দুয়ারে সরকারের পর দুয়ারে বোমও পৌঁছে যাচ্ছে।' পাল্টা তোপ দেগেছে তৃণমূলও। তৃণমূল (TMC) নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, 'পুলিশ কাজ করছে বলেই এগুলো উদ্ধার হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী হিংসা দূর করার কথা বলছেন। বিজেপির কতটা ইন্ধন রয়েছে দেখতে হবে।'
আরও পড়ুন: দিলীপ-মন্তব্যে ক্ষুব্ধ বিজেপি, মুখ খোলায় নিষেধাজ্ঞা দলের