Purba Bardhaman: পাকড়াও কালু মস্তান, হাঁফ ছেড়ে বাঁচল কালনা
Purba Bardhaman Update: কালনা শহরে মাস দেড়েক ধরেই তান্ডব চালাচ্ছে একটি ষাঁড়। যে ষাঁড় এলাকায় কালু মস্তান নামেই পরিচিত হয়ে উঠেছিল।
রাণা দাস, পূর্ব বর্ধমান: রাস্তায় বেরলেই গুঁতিয়ে দিচ্ছে। কখনও তাড়া করছে। কখন তার মর্জি কেমন থাকবে তা কেউ জানে না। ফলে তাকে রাস্তায় দেখলেই সোজা উল্টোপথে হাঁটা লাগাচ্ছিলেন অনেকে। কেউ আবার রাস্তা পার করে চলে যাচ্ছিলেন উল্টো ফুটপাতে। ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের কালনা শহরের। দিনের পর দিন তার গুন্ডামিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছিলেন এলাকার মানুষ। কিন্তু পুলিশও কিছু করতে পারছিল না। কীভাবেই বা করবে? ষাঁড় তো পুলিশের কথা মানবে না।
কালুর মস্তানি:
আসলে যার তাণ্ডবে এত নাজেহাল হয়েছে কালনার (Kalna) বাসিন্দারা। সে আসলে একটি বিপুল আকারের ষাঁড় (Ox)। কালনা শহরে মাস দেড়েক ধরেই তান্ডব চালাচ্ছিল ষাঁড়টি। এলাকায় তার পরিচয় হয়ে উঠেছিল কালু মস্তান হিসেবেই। কালুর গুঁতোয় আহত হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন শহরবাসী। কারও ভেঙেছে কোমর, তো কারও পা। স্থানীয়দের দাবি, ওই ষাঁড়ের আক্রমণে মারাও গিয়েছেন এক ব্যক্তি। কালনা শহরের শ্যামগঞ্জ পাড়া-সহ বেশ কিছু এলাকায় কাঁপিয়ে বেড়াচ্ছিল এই কালু মস্তান। অবশেষে পুলিশ, দমকল,মহকুমা শাসকের দফতর, বন দফতর, প্রাণিসম্পদ দফতর থেকে পুরসভার কর্মীদের ৪ ঘণ্টার কসরতে অবশেষে ধরা পরল কালনা শহরের ত্রাস কালু মস্তান।
বাংলা সিনেমায় ষাঁড়ের উৎপাত নিয়ে গল্প অনেক বারই জায়গা পেয়েছে। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিনেমা 'যমালয়ের জীবন্ত মানুষ' -এ ষাঁড়ের তাণ্ডবের দৃশ্য বাংলার ঘরে ঘরে পরিচিত। সিনেমার গল্পে ষাঁড়ের হাত থেকে বাঁচতে স্বয়ং যমরাজকে দ্বারস্থ হতে হয়েছিল ইন্দ্রের কাছে। আর কালনায় কালু ষাঁড়ের হাত থেকে বাঁচতে কালনার মানুষকে ছুটতে হয়েছিল প্রশাসনের দরজায়। কিন্তু প্রশাসনও পড়েছিল অথৈ জলে। পুলিশও কিছু করতে পারছিল না। চোর-গুন্ডা দমনের অভ্যাস তাদের আছে। কিন্তু ষাঁড়? না সেরকম ট্রেনিং তো নেই। প্রশাসনও বুঝে উঠতে পারছিল না কী ভাবে দমানো যায় মারকুটে ষাঁড়কে। এর পরেই কালুকে শায়েস্তা করতে একসঙ্গে মাঠে নামে সবাই। ওই দলে হাজির হয় পুলিশ (Police), দমকল। বন দফতর, প্রাণিসম্পদ দফতর, পুরসভা (Municipality) থেকে মহকুমা শাসকের দফতর। সকলেই হাজির ওই টিমে। অবস্থার গুরুতর, অকুস্থলে হাজির ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও পুর উপপ্রধানও।
সকাল থেকে দৌড়ঝাঁপ:
কিন্তু কালু মস্তানকে ধরা যে সহজ নয়, গোড়া থেকেই তা হাড়ে হাড়ে বুঝিয়েছে সে। সকাল থেকে ছুটিয়ে বেড়িয়েছে গোটা দলকে। অবশেষে ষাঁড়টি একটি ফাঁকা ঘরের ভিতরে ঢোকে। সুযোগ বুঝে তখনই চারদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয় তাকে। এরপরে ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে কাবু করা হয় তাকে। কিন্তু সংজ্ঞাহীন করলেও কালু মস্তানকে গাড়িতে তুলতে রীতিমতো কালঘাম ছুটেছে সকলের। দড়ি-বাঁশ দিয়ে বেঁধে টানাটানি করে কোনওরকমে গাড়িতে তোলা হয় তাকে। অবশেষে স্বস্তি পায় শহরবাসী। সূত্রের খবর, এবার কালু ষাঁড়কে নিয়ে গাড়ি গিয়েছে হুগলির লিলুয়ার এক খামারের দিকে।