Nandigram News: প্রকল্পের নামবদলের অভিযোগ, নন্দীগ্রামে আবাস যোজনার কাজ দেখতে কেন্দ্রীয় দল
Purba Medinipur News: কেন্দ্রীয় নজরদারি দলের সঙ্গে এ দিন উপস্থিত ছিলেন নন্দীগ্রাম ১-এর বিডিও সুমিতা সেনগুপ্ত।
বিটন চক্রবর্তী, মানস জানা, সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়: প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (Pradhan Mantri Awas Yojana) কাজ খতিয়ে দেখতে নন্দীগ্রামে (Nandigram) হাজির কেন্দ্রীয় দল। গ্রামে ঘুরে ঘুরে প্রতিটি নির্মাণে নজরদারি চালানো হল। দরজায় কড়া নেড়ে নেওয়া হল সমস্ত তথ্য। কোন বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা লেখা রয়েছে, কোন বাড়িতে লেখা রয়েছে বাংলা আবাস যোজনা, ছবি-ভিডিও তুলে তার প্রমাণও নিয়ে রাখল নজরদারি দল।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনার প্রকল্পগুলো খতিয়ে দেখতে মনোজ কুমারের নেতৃত্বে দুই সদস্যের কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের ওই দল শনিবার নন্দীগ্রামের ১-এর ভেকুটিয়া ১নং গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু বাড়িতে গিয়ে তদন্ত করে দেখে। সমস্ত বিষয়টি তারা মোবাইলে ভিডিও ক্যামেরাবন্দি করে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বাড়ির সদস্যদেরও (Purba Medinipur News)।
এ দিন কেন্দ্রীয় টিম কয়েকটি বাড়িতে গিয়ে দেখে কারোর বাড়িতে চাবি লাগানো,কেউ বাড়িতে নেই,আবার দোকানঘরের মত বাড়ি হয়ে রয়েছে। কোনও কোনও বাড়ির উপর আবার কয়েকদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা লেখা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় নজরদারি দলের সঙ্গে এ দিন উপস্থিত ছিলেন নন্দীগ্রাম ১-এর বিডিও সুমিতা সেনগুপ্ত। প্রথম নন্দীগ্রামের ১ এর ভেকুটিয়া ১নং গ্রাম পঞ্চায়েত ও মহম্মদপুর দু নম্বর পঞ্চায়েত এলাকায় আজ বেশ কিছু বাড়িতে যান। দেখেন, নির্মাণকার্য সম্পূর্ণ হয়নি। তবে তার উপর প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার স্টিকার লাগানো রয়েছে। গৃহস্বামী কোথায় জিজ্ঞাসা করলে জানতে পারেন, তিনি বাড়িতে নেই বলে। নির্মাণ দেখে কেন্দ্রীয় দল বলে, "এটা তো দোকানের মতো লাগছে।" পাল্টা জবাব মেলে, ''না না যেহেতু কমপ্লিট হয়নি, তাই দোকানের মতো লাগছে।" ব্যাঙ্কের বইও খতিয়ে দেখে ওই দল।
এর পর বাইকে চেপে ভেকুটিয়ার আর একটি বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। সেখানে একটি বাড়িতে বাংলা আবাস যোজনা লেখা থাকতে দেখা যায়, কিন্তু ওই বাড়িতে কেউ ছিলেন না। শিকল খুলে ভিতরে ঢোকেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। দেখেন, গুদামের মতো মালপত্র রয়েছে। তাঁরা মোবাইলে ছবি তোলেন। বেরিয়ে যান।
ভেকুটিয়ার আরও একজনের বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। দেওয়ালে রং দিয়ে লেখা ছিল, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা। বয়স্ক লোককে জিজ্ঞাসা করেন কতদিন আগে কারা লিখেছে। জানা যায়, চার দিন আগে অঞ্চলের লোক লিখে দিয়ে গিয়েছে।
এর পর গ্রাম সড়ক পরিদর্শন করেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। সেখানে দেখা যায় বোর্ডে স্টিকারে লেখা, প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনা। কিন্তু স্টিকারটি তুলে দেখতেই দেখা যায় কালি দিয়ে লেখা বাংলা সড়ক যোজনা। মোবাইলে ছবি তুলে নেন নদজরদারি দলের প্রতিনিধিরা। এছাড়াও মহম্মদপুরে আরও কয়েকটি বাড়িতে যান তাঁরা।
এ নিয়ে নন্দীগ্রাম-১, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি স্বদেশ দাস বলেন, "প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি নন্দীগ্রামে অনেকে পেয়েছেন। তবে ভেকুটিয়ায় বিরোধীরা দু'- একটি বাড়ি দেখিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। একটি অঞ্চলে দু হাজার বাড়ি করতে গিয়ে হয়ত সামান্য ভুল ভ্রান্তি হয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় ও কোনও বেনিয়ম হয়নি।"
তমলুক সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য, বিজেপি নেতা অভিজিৎ মাইতি বলেন, "হাজার হাজার বাড়ি হলে নন্দীগ্রামে একটাও কাঁচা বাড়ি থাকত না। আসলে দূর্নীতি করে এক একজন চার পাঁচটি বাড়ি নিয়েছেন। আসল প্রাপকরা তা বুঝতে পেরেছেন।"