নদী বাঁধ ভেঙে বানভাসি এগরা-ভগবানপুর, ৪৫০টি ত্রাণ শিবিরে সরানো হয়েছে ১ লক্ষ বাসিন্দাকে
নদী বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর দেড় দিন পার, জল নামা তো দূরে থাক, উল্টে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে একের পর এক এলাকা।
ঋত্বিক প্রধান, পূর্ব মেদিনীপুর: পটাশপুরের পর এবার জলমগ্ন পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা ও ভগবানপুর। প্লাবন আটকাতে এগরায় বাঁধ মেরামতি শুরু করেছেন গ্রামবাসীরা। সরানো হয়েছে ১ লক্ষের বেশি মানুষকে। খোলা হয়েছে ৪৫০টি ত্রাণ শিবির। নদী বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর দেড় দিন পার, জল নামা তো দূরে থাক, উল্টে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে একের পর এক এলাকা। যার জেরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
শুক্রবার রাতে কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় পটাশপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। শনিবার থেকে পটাশপুর ছাড়িয়ে হু হু করে নদীর জল ঢুকতে শুরু করে এগরা ও ভগবানপুরে। এই অবস্থায় প্লাবন আটকাতে রবিবার সকাল থেকে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করেন এগরাবাসীরা। বাঁশের কাঠামো তৈরি করে বালির বস্তা ফেলে চলছে বাঁধ মেরামতি। বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হলেও নদীর জলে ক্ষতিগ্রস্ত একাধিক মাটির বাড়ি। এই অবস্থায় অনেকেই আশ্রয় নিচ্ছেন ত্রাণ শিবিরে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ২০ হাজার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে। খোলা হয়েছে ৪৫০টি ত্রাণ শিবির।
অন্যদিকে গত কয়েক দিন ধরে জলমগ্ন পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের বিভিন্ন জায়গা। একাধিক গ্রামে পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ। দেওয়ানচকে উদ্ধার হয়েছে শনিবার থেকে নিখোঁজ থাকা এক যুবকের মৃতদেহ। বৃষ্টি কমলেও, কিন্তু দুর্ভোগ আর জল যন্ত্রণা এখনও অব্যাহত। জলে ডুবেছে বাড়ি, রাস্তায় চলছে নৌকো। দিন কয়েকের বৃষ্টিতে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে ফিরেছে জল যন্ত্রণার চেনা ছবি।
তারই মধ্যে রবিবার সকালে দেওয়ান চকের গোড়ারখাল থেকে উদ্ধার হল সৌমেন মুর্মু নামে এক যুবকের দেহ। পরিবারের দাবি, শনিবার কাজে বেরিয়ে আর ফিরে আসেনি সৌমেন। পুলিসের অমুমান, জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছিলেন ওই যুবক। চারদিকে শুধু জল। কিন্তু পানীয় জলের তীব্র সংকট! অজবনগর, মনসুকা-সহ অন্তত ৩০টির ওপর গ্রামে পানীয় জলের আকাল দেখা দিয়েছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। জল নিতে নৌকো করে আসতে হচ্ছে ঘাটাল শহরে।
এক বাসিন্দা জানাচ্ছেন, নৌকো করে খাবার জল নিতে এসেছি। এভাবেই কষ্ট করে আমাদের জল নিতে হচ্ছে। ভাড়া দশ টাকা। সরকারি সুযোগ সুবিধে পাইনি। কিন্তু শহরে এসেও পর্যাপ্ত জল মিলছে না বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে জলবন্দি মানুষের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে পঞ্চায়েত সমিতি। কবে কাটবে এই জল-যন্ত্রণা? কবে ফের ছন্দে ফিরবে জনজীবন? প্রশ্ন এলাকার মানুষের।
আরও পড়ুন: প্রবল বর্ষণে পাঁচিল ভেঙে গুরুতর জখম ব্যক্তি, আতঙ্ক ছড়াচ্ছে হাওড়ার একাধিক বিপজ্জনক বাড়ি