RSS News: ‘নাগপুরে বন্দে মাতরম আন্দোলনের সূচনা করেন হেডগেওয়ার’, কলকাতায় RSS-এর অনুষ্ঠানে বললেন মোহন ভাগবত
Mohan Bhagwat: RSS-এর ১০০ বছর পূর্তিতে, কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতিতে বিশেষ আয়োজন হয়েছিল রবিবার।

কলকাতা: ‘বন্দে মাতরমে’র ১৫০ বছর পূর্তি ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক চরমে। ‘বন্দে ভারতে’র শেষের পঙক্তিগুলি বাদ দেওয়ার জন্য সংসদে কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছে বিজেপি। পাল্টা বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে, “RSS-BJP কবে বন্দেভারত গেয়েছে?” সেই আবহেই কলকাতায় এসে ‘বন্দে ভারত’ নিয়ে মন্তব্য করলেন BJP-র অভিভাবক সংস্থা, রাষ্ট্রীয় স্বয়ম সেবক সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবত। (Mohan Bhagwat)
RSS-এর ১০০ বছর পূর্তিতে, কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতিতে বিশেষ আয়োজন হয়েছিল রবিবার। সেখানেই ‘বন্দে মাতরম’ নিয়ে মন্তব্য করেন ভাগবত। RSS-এর প্রতিষ্ঠাতা কেশব বলিরাম হেডগেওয়ারই নাগপুরের বিদ্যালয়ে ‘বন্দে মাতরম আন্দোলন’কে সংগঠিত করেছিলেন। স্বাধীনতা আন্দোলনে হেডগেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন বলেও এদিন তুলে ধরেন ভাগবত। (RSS News)
কলকাতার অনুষ্ঠানে এদিন ভাগবত বলেন, “হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে, হিন্দু সমাজের উন্নতির জন্য, সুরক্ষার জন্যই RSS-এর সূচনা। ১৮৫৭ সালে ইংরেজদের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী সংঘর্ষে আমরা পরাজিত হই। তখন থেকেই ভাবনাচিন্তা শুরু হয়। আত্মসমীক্ষায় উত্তর উঠে আসে যে, সশস্ত্র প্রতিকার বের করে ইংরেজদের তাড়াতে হবে। ১৮৫৭ সালে কোম্পানির রাজত্বের পরিবর্তে রানির রাজত্ব প্রতিষ্ঠা হয়। পুরোপুরি পরাধীন হই আমরা। নিজস্ব সেনা ছিল না আমাদের। ফলে বিপ্লবী কাজকর্ম এবং শস্ত্রাচারের মাধ্যমে বিদেশি আক্রমণ প্রতিহত করার রীতি চালু হয়, যা ১৯৪৫ সালে সুভাষবাবুর অন্তর্ধানের পর সমাপ্ত হয়। ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হয়, তার পর আর প্রয়োজন ছিল না। বীর সাভারকরের মতো মানুষ ছয়ের দশকে ‘অভিনব ভারত’ নামের বিপ্লবী সংস্থা ভেঙে দেন।”
ভাগবত জানান, সেই সময় সমাজ বিপ্লবকে সমর্থন করলেও, কী করণীয় জানত না। আধুনিক রাজনীতি সম্পর্কে সচেতন ছিল না সমাজ। তাই ভারতীয়দের রাজনীতি বোধ জাগ্রত করতে, কংগ্রেসকে মাধ্যম বানিয়ে তখনকার নেতারা রাজনৈতিক জাগরণ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের হাতিয়ারে পরিণত করেন জাগরণকে। ফলে ব্যাপক জাগরণ ঘটে। দেশের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন সকলে, আন্দোলন করেন, জেলে যান, লাঠির আঘাত সহ্য করেন। রাজা রামমোহন রায়ের হাত ধরে সমাজ সংস্কারের কথাও তুলে ধরেন ভাগবত। আর তাতেই হেডগেওয়ারের প্রসঙ্গ টানেন তিনি।
ভাগবত বলেন, “হেডগেওয়ারের জীবনে আর কোনও লক্ষ্য ছিল না। দেশের কাজই করতে হতো ওঁকে। জন্মগত ভাবে দেশপ্রেমী ছিলেন উনি। চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় রানি ভিক্টোরিয়া সিংহাসনে অভিষিক্ত হন। তাঁর স্কুলেও মিষ্টি বিতরণ হয়। কিন্তু উনি মিষ্টি ফেলে দেন। বলেন, ‘রানির সিংহাসনে আরোহণ মিষ্টি নয়স বিষ। একদিনের অসুস্থতায়, এক ঘণ্টার ব্যবধানে মা-বাবা মারা যান। ১১ বছর বয়সে অনাথ হয়ে যান হেডগেওয়ার। কিন্তু স্বাভিমান প্রবল ছিল। দেশের সবকিছুতে সক্রিয় ছিলেন উনি নাগপুরে। স্কুলের ইনস্পেক্টরকে ‘বন্দে মাতরম’ স্লোগানে স্বাগত জানানো হয়। ইংরেজরা ভয় পেয়ে যায়, কান খাড়া হয়ে যায়, স্কুল বন্ধ করে দেয় ওরা। নাগপুরের বিদ্যালয়ে ‘বন্দে মাতরম আন্দোলন’কে সংগঠিত করেন উনিই’। পরে নামমাত্র ক্ষমাপ্রার্থনা করে স্কুল চালু হয়। হেডমাস্টার গেটের সামনে দাঁড়িয়ে বাচ্চাদের কাছে জানতে চান, ভুল হয়েছে কি না। তাতে সকলে মাথা নাড়িয়ে ভিতরে ঢুকে যাবে। কিন্তু দু’জন মাথাও নাড়াননি, যাঁর মধ্যে একজন ছিলেন হেডগেওয়ার। জানিয়ে দেন, স্বপ্নেও মাতাকে বন্দনা করা ভুল বলতে পারবেন না।”
কলকাতায় এসে অনুশীলন সমিতিতে যোগ দেওয়ার পর স্বাধীনতা সংগ্রামেও হেডগেওয়ার যোগ দেন বলে দাবি করেন ভাগবত। তাঁর দাবি, পশ্চিম ভারতে বিপ্লবকে জাগরিত করার কাজে লিপ্ত ছিলেন হেডগেওয়ার। অসহযোগ আন্দোলনের সময় গ্রামে গ্রামে গিয়ে ভাষণ দেন। সেই নিয়ে রাজদ্রোহিতার মামলাও হয়।






















