Saline Controversy:'রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইনই ব্যবহার করতে চাপ দেয় ওপর মহল,' বিস্ফোরক চিকিৎসক
Saline Controversy Update: মেদিনীপুর মেডিক্যালে প্রসূতির মৃত্যুতে কাঠগড়ায় 'পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্য়াল'-এর তৈরি এই স্যালাইন।

অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: রিঙ্গার ল্যাকটেট থেকে জটিলতা বাড়ছে, এমনকী মৃত্যু হচ্ছে প্রসূতির। প্রায় এক দশক আগে এই পর্যবেক্ষণের কথা স্বাস্থ্যভবনকে জানিয়েছিলেন আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের তৎকালীন চিকিৎসক উদয়ন মিত্র। তাঁর দাবি, ওই স্যালাইনই ব্যবহার করতে হবে বলে চাপ আসে ওপর মহল থেকে। উল্টে তাঁকে শোকজ করা, করা হয় বদলিও।
মেদিনীপুর মেডিক্যালে প্রসূতির মৃত্যুতে কাঠগড়ায় 'পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্য়াল'-এর তৈরি রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইন। কর্ণাটকে বহু আগেই এই রিঙ্গার ল্য়াকটেটের জেরে প্রসূতিমৃত্য়ুর অভিযোগ উঠলেও কেন দিনের পর দিন, মাসের পর মাস তা পশ্চিমবঙ্গে সরকারি হাসপাতালে ব্য়বহার করা হয়েছে, তা নিয়ে এখন নানা প্রশ্ন! যদিও, রাজ্য় সরকার এখনও এই প্রশ্নগুলির কোনও সুনির্দিষ্ট উত্তর দেয়নি। আর এই আবহেই কলকাতা হাইকোর্টে উঠল স্য়ালাইন প্রয়োগ ও প্রসূতিদের মৃত্য়ুর প্রসঙ্গ।
প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যর বেঞ্চে মামলার শুনানির সময় আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি বলেন, "২০১৫ সালের জুন মাসে আলিপুরদুয়ারের এক চিকিৎসক এই স্যালাইন নিয়ে অভিযোগ করেন। যেহেতু তিনি মুখ খোলেন, তাই তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয় রাজ্য। কর্ণাটকে এই সংস্থাকে তিন বছর ব্যান করে দেওয়া হয়। তারপরেও এই রাজ্য ওই সংস্থাকে কাজের সুযোগ দেয়। স্বাস্থ্য সচিব সব জেনেও কিছু করেননি।''
আদালতে এদিন যাঁর কথা ওঠে সেই উদয়ন মিত্র, আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ছিলেন। প্রায় বছর দশেক আগে ২০১৫ সালে হাসপাতালের সুপারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন তিনি। চিঠিতে চিকিৎসক উদয়ন মিত্র লিখেছিলেন, গত কয়েক মাসে, প্রসূতিদের শারীরিক জটিলতার হার অনেক বেড়ে গিয়েছে। বিশেষ করে সিজারের পর। কিন্তু যখন হাসপাতালের বাইরে থেকে নামী সংস্থার স্যালাইন কিনে দেওয়া হয়েছে, তখনই আর কোনও জটিলতা দেখা দেয়নি। কিন্তু এক অজানা কারণে নামী সংস্থার স্যালাইন কেনা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে HDU-তে থাকা সত্ত্বেও একই দিনে ২ প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে।
চিকিৎসক বলেন, "২০১৫ সালে আমি তখন সরকারি জেলা হাসপাতালে কর্মরত ছিলাম। এপ্রিল মাস নাগাদ বেশ কিছু প্রসূতি মারা যান। আমরা একটা পয়েন্ট আউট করেছিলাম যে রিংগার ল্যাকটেট বলে সলিউশন যেটা মাকে দেওয়া হয় স্যালাইন হিসেবে। সম্ভবত তার থেকে গন্ডগোলটা হচ্ছিল। আমরা তখন স্বাস্থ্য ভবন এবং লোকাল সুপারিনটেন্ডেন্ট যিনি আছেন তাদের আমরা ইনফর্ম করে নোটশিট জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু ঘটনা হল, সে সময়ে সেভাবে এটাকে নিয়ে আর আর বেশি এগনো হয়নি। এগোয়নি ওপর মহল থেকে এবং আমাদের উপরে চাপ থাকে যে ওই স্যালাইন দিয়েই অপারেশন করার।''
আশ্চর্যজনক বিষয় হল, এই চিঠি দেওয়ার পরই, কেন তাঁর বিভাগীয় তদন্ত শুরু হবে না, তা জানতে চেয়ে চিকিৎসক উদয়ন মিত্রকে শোকজ করা হয়। শুধু শোকজ নয়, ২০২০ সালে মালদার চাঁচলে বদলি করে দেওয়া হয় তাঁকে। অসুস্থতার কারণে ছুটি নেন তিনি। তরপর আর চাকরিতে ফেরেননি। উদয়ন মিত্র বলছেন, " ডাক্তারদের শিখণ্ডী করা হচ্ছে। শিখন্ডী করে যে জাল ওষুধের কারবার যে চলছে সরকারি মহলে সেটাকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।'' আর এখানেই চিকিৎসকদের প্রশ্ন, কেন চিকিৎসকদের সতর্কবার্তায় আগে থেকে কান দেওয়া হয়নি?mকী উদ্দেশ্য়ে? নেপথ্য়ে বিশেষ কোনও স্বার্থ? এই প্রশ্ন কিন্তু জোরাল।
আরও পড়ুন: Nadia News: ফের সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে, কৃষ্ণগঞ্জে গ্রেফতার এক বাংলাদেশি নাগরিক
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
