Sandeshkhali News : শাহজাহান বাহিনীর মারে আজও ভারসাম্যহীন, গালে পেন ঢুকিয়ে অত্যাচার, ৭ বছরের ঘা এখনও দগদগে
Sheikh Shahjahan : শাহজাহান বাহিনীর কটূক্তির প্রতিবাদ বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল এক গৃহবধূকে! গুলিও চলেছিল বলে অভিযোগ।
ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, সন্দেশখালি : শেখ শাহজাহান ধরা পড়লেও, তাঁর 'শাগরেদরা এখনও এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে'। আতঙ্ক যেন পিছু ছাড়ছে না এলাকাবাসীর। গত কয়েক বছর ধরে যে পাশবিক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে সন্দেশখালিকে, তার ঘা এখনও দগদগে। এলাকায় যেতেই উঠে এল ২০১৭ সালের এমন কিছু স্মৃতি, যা বর্ণনা করতে কোনও বিশেষণই যথেষ্ট হয়।
এক গ্রামবাসীর স্মৃতিতে এখনও টাটকা সেই দিনের স্মৃতিটা। যে দিনটার পর থেকে তাঁর স্ত্রী মানসিক ভাবে ভারসাম্য হারিয়েছিলেন। তাঁর কথায় এখনও সেরে উঠতে পারেননি তাঁর স্ত্রী। বললেন, শাহজাহান বাহিনী কটূক্তির প্রতিবাদ করার খেসারত দিতে হচ্ছে এতগুলো বছর ধরে। রাস্তায় তাঁর দিকে উড়ে এসেছিলেন শেখ শাহজাহানের শাকরেদদের নোংরা উক্তি। পাল্টা একজনকে চড় মেরেছিলেন ওই গৃহবধূ। তারপর ফল , বেধড়ক মার ! অভিযোগ, থানার অদূরেই তাঁকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। পুলিশ দেখেও দেখেনি। এমন সে মার, যার জেরে মানসিক ভারসাম্য খুইয়েছেন তিনি। আজও সুস্থ হতে পারেননি।
সন্দেশখালির বাসিন্দা অনিতা সর্দার আবার বললেন, শাহজাহানের শাকরেদ জিয়াউদ্দিন বাজারে গুলি চালিয়েছিল সে - সময়। অনিতার মতো অনেকেই এখনও আঁকড়ে সে-সব ত্রাসের স্মৃতি। গ্রামবাসীদের লাগাতার বিক্ষোভ-আন্দোলন, প্রবল চাপের মুখে, শেষমেশ ED-র উপর হামলার ৫৬ দিনের মাথায় তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু, ২০১৭ সালে তাঁর আমলে যে অত্যাচার হয়েছে, সেই দগদগে স্মৃতি যেন কোনওভাবেই ভুলতে পারছেন না সন্দেশখালির রাজবাড়ি এলাকার বাসিন্দারা।
সন্দেশখালিতে মানুষ বিক্ষোভের সামিল হওয়ার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, এতদিন কেন মুখ বুজে ছিলেন তাঁরা? এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় সন্দেশখালির রাজবাড়ি এলাকায় গেলে। এখন থেকে প্রায় ৭ বছর আগে শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন এলাকার মানুষ। মিছিল করে, পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তা শিরদাড়ায় শীতল স্রোত বইয়ে দেবে।
এমনকী আক্রান্ত মহিলার বাড়িতেও হানা দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। আক্রান্ত মহিলার ছেলে জানালেন ২০১৭ সালের সেই ভয়াবহ দিনটার কথা। বললেন, তখন লেখালেখি করছিলাম ,ফাইনাল পরীক্ষা সামনে। আমাদের গালের মধ্যে, যে পেন হাতে নিয়ে লিখছিলাম, সেই পেন নিয়ে গালের মধ্যে পুরো ঠোঁটের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছিল।
শুধু তাই নয়, শাহজাহান বাহিনীর হাতে হাতে ছিল অস্ত্র। এদিন-ওদিক হলেই চলত গুলি ! অভিযোগ গ্রামবাসীদের। প্রতিবাদের ফল যেভাবে চোকাতে হয়েছে কয়েকজনকে, তারপর আর মুখ খোলার সাহস পায়নি সন্দেশখালি ।
আরও পড়ুন, আচমকা অবসরের সিদ্ধান্ত, ভোটের ময়দানে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়