Gold Smuggling: সাবধানবার্তাই সার, সীমান্তে চোরাচালান চলছেই, ২ কোটি টাকার সোনার বিস্কিট উদ্ধার
India Bangladesh Border: দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের অধীন BSF-এর তরফে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে।
সমীরণ পাল, স্বরূপনগর: সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানকারীদের দাপট অব্যাহত। সাধারণ মানুষকে বার বার সাবধান করা হলেও, চোরা কারবারে যে ছেদ পড়েনি, আবারও তার প্রমাণ মিলল। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (BSF) তরফে যে হিসেব দেওয়া হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন ঘটনায় দক্ষিণবঙ্গের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ২৮টি সোনার বিস্কিট উদ্ধার হয়েছে, যার বাজার মূল্য ২ কোটি টাকার বেশি। (Gold Smuggling)
দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের অধীন BSF-এর তরফে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ভারতে সোনার বিস্কিট পাচারের পরিকল্পনা ছিল। চোরাকারবারীদের পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়ে BSF ২৮টি সোনার বিস্কিট উদ্ধার করেছে, যার বাজার মূল্য ২ কোটি ১৩ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩০৫ টাকা। দুই চোরাচালানকারীকে আটকও করেছে BSF. (India Bangladesh Border)
BSF যে বিবরণ দিয়েছে, সেই অনুযায়ী, গত ৬ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টা বেজে ৫০ মিনিট নাগাদ, BSF সীমা চৌকি আংরেল ০৫ ব্যাটেলিয়নের জওয়ানদের চোখে সীমান্ত এলাকায় সন্দেহজনক কার্যকলাপ ধরা পড়ে। এক মহিলাকে হাতে ব্যাগ নিয়ে ডমিনেশন লাইনের দিকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়। ওই মহিলাকে গোড়াতেই সতর্ক করা হয়, থামতে বলা হয়। ভয় পেয়ে পালানোর চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু তাঁকে ধরে ফেলা হয়। তল্লাশিতে তাঁর ব্যাগ থেকে ১২টি সোনার বিস্কিট উদ্ধার হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে ওই সন্দেহভাজন মহিলা পাচারকারী জানিয়েছেন, তাঁর রান্নাঘরের বাগানে আরও ১০টি সোনার বিস্কিট আগে থেকে লুকিয়ে রাখা আছে। এর পর মহিলার কথা মতো তাঁর বাড়ির রান্নাঘরেও তল্লাশি চালানো হয়। সেখান থেকেও সোনার বিস্কিট উদ্ধার হয়। অর্থাৎ ওই মহিলার কাছ থেকেই সব মিলিয়ে ২২টি সোনার বিস্কিট উদ্ধার হয়েছে। ওই মহিলাকে আটক করেছে BSF.
ওই মহিলা পাচারকারীকে যশোদা শিকদার বলে শনাক্ত করা গিয়েছে। গাইঘাটা থানা এলাকার ঘোষপাড়ার বাসিন্দা তিনি। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, অন্যের জমিতে ক্ষেতমজুর হিসেবে কাজ করেন। প্রতিদিন আয় হয় ১২০ টাকা। গত ৬ ফেব্রুয়ারি আলু এবং সরিষা পাতা সংগ্রহ করতে জমিতে গিয়েছিলেন। সেই সময় মজনু নামের এক বাংলাদেশি যুবক হাতে একটি প্যাকেট ধরিয়ে দেন তাঁর। বাড়িতে রেখে দিতে বলেন।
BSF-কে ওই মহিলা জানিয়েছেন, মজনু তাঁকে জানান, আংরেলের বাসিন্দা গোপাল মণ্ডলের ছেলে কৃষ্ণপদ মণ্ডল এসে তাঁর থেকে ওই প্যাকেট সংগ্রহ করে নেবেন। দু'দিন আগে ফের এক ব্যক্তির কাছ থেকে একই ধরনের একটি প্যাকেট সংগ্রহ করে নিজের বাগানে রেখে দেন যশোদা। কিন্তু কেউ সেগুলি নিতে আসেনি। ৬ ফেব্রুয়ারি সেরকমই একটি প্যাকেট সংগ্রহ করে ফেরার সময় ধরা পড়ে যান বলে দাবি যশোদার।
এর পাশাপাশি, সীমা চৌকি গোবর্ধায় একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। ১০৭ নং ব্যাটেলিয়নের জওয়ানরা এক পাচারকারীর থেকে ছয়টি সোনার বিস্কিট উদ্ধার করেন। অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে, তাঁকে সুজিত রায় বলে শনাক্ত করা গিয়েছে, তিনি উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরের বাসিন্দা। উদ্ধার হওয়া সোনার বিস্কিটগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে সেগুলি জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে BSF.
দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের অধীন BSF-এর জনসংযোগ বিভাগের DIG একে আর্য জওয়ানদের প্রশংসা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, দরিদ্র, অসহায় মানুষকে অর্থের লোভ দেখিয়ে ফাঁদে ফেলে চোরাকারবারিরা। কুখ্যাত চোরাচালানকারীরা সরাসরি অপরাধমূলক কাজে অংশ নেন না। বরং দরিদ্র মানুষকে দিয়ে এই সব কাজ করান। সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার মানুষকে এ নিয়ে কোনও তথ্য থাকলে BSF-কে জানাতে আর্জি জানান তিনি। এর জন্য 'সীমা সাথী' হেল্পলাইন নম্বর ১৪৪১৯-তে যোগাযোগ করতে বলেন। পাসাপাশি, দক্ষিণবঙ্গ সীমান্ত ফ্রন্টিয়ারের নম্বর ৯৯০৩৪৭২২২৭-ও প্রকাশ করা হয়েছে। এই নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপ করে বা ভয়েস মেসেজে তথ্য পাঠানো যাবে। তথ্যপ্রদানকারীকে পুরস্কৃত করা হবে, তাঁর পরিচয়ও গোপন রাখা হবে বলে জানিয়েছে BSF.