কুঁড়ে ঘর থেকে স্বপ্ন দেখার শুরু, গ্রামের প্রথম চিকিৎসক হওয়ার পথে দিনমজুরের ছেলে
Student Success: কঠোর পরিশ্রম সাফল্য পেলেন রাজস্থানের (Rajasthan) বার্মের জেলার কামথাই সামদারি গ্রামের বাসিন্দা দুধারাম (Dudharam)। গ্রামের প্রথম চিকিৎসক হতে চলেছেন তিনি।
নয়াদিল্লি: কথায় বলে ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। আর লেখাপড়ার ক্ষেত্রে একাগ্রতার থেকে বড় বিষয় আর কিছুই হতে পারে না। সেই একাগ্রতা আর মনোবল থেকেই সাফল্য পেলে দুধারাম। যাত্রা শুরু হয়েছিল এক কামরার ঘর থেকে। কঠোর পরিশ্রম সাফল্য পেলেন রাজস্থানের (Rajasthan) বার্মের জেলার কামথাই সামদারি গ্রামের বাসিন্দা দুধারাম (Dudharam)। গ্রামের প্রথম চিকিৎসক হতে চলেছেন তিনি। ডাক্তারির পড়া প্রবেশিকা পরীক্ষা নিটে (NEET) ৭২০-র মধ্যে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬২৬।
দুধারামের বাবা এবং দাদা দিনমজুরের কাজ করেন। কুঁড়ে ঘর থেকেই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। আর সেই স্বপ্ন ছুঁতে দিন রাত এক করে লেখাপড়া করতেন তিনি। কামথাই জেলায় প্রথম কেউ ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেলেন। আর স্বপ্ন পূরণ করতে এবার চিকিৎসক হওয়ার পথে তিনি। অর্থনৈতিক প্রতিকূলতাও তাঁকে তাঁর লক্ষ্য থেকে সরাতে পারেনি। চলতি বছর স্নাতক স্তরের নিট পরীক্ষায় তাঁর সর্বভারতীয় র্যাঙ্ক ছিল ৯,৩৭৫। নিটে ৭২০-র মধ্যে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬২৬।
বাবা মা ছাড়াও দুধারামের পরিবারে রয়েছে আরও তিন জন। ১০ -১২ বিঘা জমির উপর বাড়ি হলেও তা চাষের তেমন যোগ্য নয়। বছরে একবারই ফসল উৎপাদন যায়। তাতে পেট চলতে পারে একটা পরিবারের। তাই সংসার চালাতে দুধারামের বাবা পুরারাম এবং দাদা খেমারাম কামথা দিনমজুরের কাজ করেন। দুধারামের ছোট ভাই স্নাতক পড়ছেন কোটা মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছোট বোন পড়ে দশম শ্রেণিতে।
দুধারাম জানিয়েছেন, তাঁরা যেখানে থাকেন সেই সামদারি তেহসিলে ২৫০টি বাড়ি রয়েছে। দিনে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টার জন্য বিদ্যুতের পরিষেবা পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি রয়েছে জলের সমস্যাও। বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে টিউবওয়েল থেকে জল ভরে আনতে হয়। গ্রামেরই সরকারি বিদ্যালয় থেকে ৬৭.৬৭ শতাংশ পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করেন দুধারাম। দ্বাদশ শ্রেণিতে পেয়েছিলেন ৮২ শতাংশ নম্বর। স্কুলের শিক্ষক রাজেন্দ্র সিংহ সিঙ্ঘাদের থেকেই চিকিৎসক হওয়ার অনুপ্রেরণা পাওয়া। এরপর নিটের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন একটি কোচিং সেন্টারে। মেধাবি দুধারামের মাসিক বেতনে ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়।
দুধারাম জানান, আমার কাছে একমাত্র লক্ষ্য ডাক্তার হওয়া। এমবিবিএস পড়া ছাড়া আর বিকল্প কিছু ছিল না। ২০১৮ সালে প্রথম টার্গেট নিয়েছিলাম। একা পড়ে ৪৪০ নম্বর পাই। ২০১৯ সালেও নিজেই পড়ে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিই। ওই বছর পাই ৫৫৮ নম্বর। এরপর কোটায় গিয়ে ফের প্রস্তুতি শুরু করি। ২০২০ সালে নিটে সর্বভারতীয় র্যা
ঙ্ক ছিল ২৩ হাজার ৮২। কিন্তু সরকারি কলেজে সুযোগ পাইনি। জামনগরের ইনস্টিটিউট অব টিচিং অ্যান্ড রিসার্চ ইন আয়ুর্বেদে পড়া শুরু করি। পাশাপাশি প্রস্তুতি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। শেষ পর্যন্ত চলতি বছর চলতি বছর সর্বভারতীয় র্যাঙ্ক হয় ৯,৩৭৫। আপাতত ভাল করে এমবিবিএস পড়াই আমার লক্ষ্য। স্নাতকোত্তর নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে ভবিষ্যতে এমবিবিএস শেষ করে আমার মতো পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াব।
Education Loan Information:
Calculate Education Loan EMI