Remoo Exclusive: 'দর্শকের কাছে নিজের নাম পৌঁছে দেওয়ার লড়াইয়ে ১ শতাংশ হলেও সফল হয়েছি'
ABP Live Exclusive: 'আমার বহুদিনের ইচ্ছে ছিল কৌশিক বাবুর সঙ্গে কাজ করার। এরপর যখন সাগ্নিক দার থেকে জানতে পারি যে এই ছবিতে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় আছেন, আমি এককথায় রাজি হয়ে যাই।'
কলকাতা: বয়স মাত্র ২৬। কিন্তু এর মধ্যেই কাজ করেছেন বেশ কিছু বড় প্রজেক্টে। থিয়েটার দিয়ে শুরু। এরপর সিনেমা (Movies), ওয়েব সিরিজ (Web Series), মেগা সিরিয়াল (Mega Serial)। বাদ নেই কিছুই। সম্প্রতি '৮/১২' ছবিতে নজর কেড়েছেন দীনেশ গুপ্তর চরিত্রে। তিনি রেমো (Remoo)। ব্যাস!ওই নামেই তিনি আপাতত একের পর এক কাজ করে চলেছেন। দর্শকও চিনছেন তাঁকে। সামনে মুক্তির অপেক্ষায় 'প্র্যাঙ্কেনস্টাইন'। তাও কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে। শ্যুটিং শুরুর অপেক্ষায় আরও বেশ কিছু কাজ। আর এই ব্যস্ত সময়ের মাঝেই একান্ত আড্ডায় ফোনে পাওয়া গেল অভিনেতাকে। কথা বলল এবিপি লাইভ।
প্রশ্ন: '৮/১২'-এর জন্য অনেক শুভেচ্ছা। বাড়ির লোকজন, বন্ধুবান্ধবদের থেকে কেমন প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন?
রেমো: (হাসতে হাসতে) বন্ধুবান্ধবরা তো বলেই চলেছে আমি নাকি বড় সেলেব হয়ে গিয়েছি, হাবভাব বদলে গেছে নাকি, এসব কথা শুনছি। বাড়ির লোকজন ভীষণ খুশি। নানা রমক চরিত্র পাচ্ছি দেখে ওঁরা খুশি। সদ্য মুক্তি পাওয়া ওয়েব সিরিজ 'আহাম্মক' দেখে মা খুব হাসে।
'৮/১২' এখন তো ওটিটিতেও এসে গেছে। সবাই মেসেজে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। কেউ কেউ কাঁদছেন। হল ভিজিটে গিয়েছিলাম, সেখানে একজন বললেন, '৮/১২' দেখিয়ে সকালে কাঁদাচ্ছ আবার 'আহাম্মক' দেখিয়ে সন্ধেবেলা হাসাচ্ছ। সত্যি বলতে এটাই তো চেয়েছিলাম। জীবনে নানারকমের চরিত্র করে মানুষকে যাতে হাসাতে পারি, কাঁদাতে পারি।
প্রশ্ন: তাহলে তো সময় বেশ ভালই যাচ্ছে বলা যায়। মানুষ চিনছেন। তাহলে বাড়িতে কি সেলিব্রিটি সুলভ ব্যবহার মিলছে?
রেমো: না না। আপনার সঙ্গে কথা বলার আগেই খাবার চাইলাম। বলা হল, 'নিজে করে নে।' বাড়িতে ব্যাপারটা কোনওদিনই বদলাবে না। (হাসি)
তবে হ্যাঁ। আমার নিজের সঙ্গে নিজের লড়াই ছিল দর্শককে আমার নাম চেনানোর। কারণ একসময় অনেক জায়গা থেকে অনেক নেগেটিভ কথা শুনেছি। প্রত্যাখ্যাত হয়েছি। কাস্টিং করেও বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এগুলো নিশ্চয়ই জীবনের অংশ। তবে সেই নাম চেনানোর যুদ্ধে ১ শতাংশ হলেও হয়তো সফল হয়েছি।
প্রশ্ন: '৮/১২', 'আহাম্মক', 'প্র্যাঙ্কেনস্টাইন' একের পর এক ভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয়। একসঙ্গে শ্যুটিং চললে সমস্যা হয় না? নিজেকে স্যুইচ করেন কীভাবে?
রেমো: '৮/১২' ছবির শ্যুটিং আগে শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু 'আহাম্মক' আর 'প্র্যাঙ্কেনস্টাইন'-এর কাজ একসঙ্গে হয়েছিল। দুটোই খুব আলাদা ধরনের চরিত্র। মানে হয়তো রাতে গিয়ে 'আহাম্মক'-এর জন্য কমেডি করতে হচ্ছে। আবার সকালে 'প্র্যাঙ্কেনস্টাইন'-এর শ্যুটিংয়ে কৌশিক বাবুর (কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়) সঙ্গে ওরকম একটা ডার্ক চরিত্রে অভিনয় করতে হচ্ছে। তো সেক্ষেত্রে হালকা সমস্যা হয়েছিল। কিন্তু ওই যে কাজটাকে ভীষণ ভালবাসি তো, তাই তখন এগুলো সমস্যা বলে মনেই হয় না।
প্রশ্ন: কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
রেমো: ওটা বিশাল বড় পাওনা। আমি বহুদিনের ইচ্ছে ছিল কৌশিক বাবুর সঙ্গে কাজ করার। এরপর যখন সাগ্নিক দার ('প্র্যাঙ্কেনস্টাইন' পরিচালক সাগ্নিক চট্টোপাধ্যায়) থেকে জানতে পারি যে এই ছবিতে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় আছেন, আমি এককথায় রাজি হয়ে যাই। আমি বলেছিলাম, আট আনা পারিশ্রমিক দিলেও চলবে, আমি কাজ করব এটায়।
কৌশিক বাবু নিজেই একজন ইনস্টিটিউশন। উনি যখন শট দিতেন, হয়তো আমাদের সঙ্গে সিন নেই, তখনও আমরা সেটেই বসে থাকতাম। ওঁকে দেখতাম। কত প্রযুক্তিগত জিনিস জানতে পারতাম। খুবই ভাল মানুষ। ওঁর পরিচালনাতেও কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে। এবার বাকি তো ঈশ্বর জানেন।
প্রশ্ন: সিনেমা, ওয়েব সিরিজ, মাঝে মধ্যে থিয়েটার। কীভাবে সময় ম্যানেজ করেন?
রেমো: আমি অভিনয় জীবন শুরু করেছিলাম একজনকে দেখে। তাঁর নাম শাশ্বত চট্টোপাধ্য়ায়। আমি যখন দেখলাম 'বব বিশ্বাস' চরিত্রটা গোটা সিনেমা মোট ৫ থেকে ৭ মিনিট ছিল। তখনই বুঝি যে হিরো হয়ে লাভ নেই। এমন চরিত্র হতে হবে যেটা মানুষের মনে গেঁথে যাবে। সিনেমাটা লোকে ভুলে গেলেও ওই চরিত্রটা বা সেই অভিনেতাকে কেউ ভুলবে না। '৮/১২' ছবিতে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। সেই সময়ে অপু দা আমাকে বলেছিলেন যে নিজের ভিতরে সেই স্যুইচটা রাখতে হবে। যখন যেটা, তখন সেটাই। এই জিনিসটা ভট্ট সাহেব বা প্রকাশ ঝায়ের সঙ্গে কাজ করেও শিখেছি।
আর টাইম ম্যানেজ হয়ে যায়। আমি যেহেতু জোর করে কাজ করি না। অনেকে অনেক কিছু করে। আমার লক্ষ্য এখন শুধুমাত্র টানা ১০ থেকে ১৫ বছর কাজ করব। মানে আমাকে ২৪ ঘণ্টা শ্যুটিং করতে বললে আমি তাইই করব।
আরও পড়ুন: Jeetu Kamal Exclusive: রাতে ঘুম আসত না, সত্যজিৎ রায়ের কণ্ঠস্বর কানে ভাসতে থাকত: জিতু কামাল
প্রশ্ন: সিনেমা, ওয়েব সিরিজ, সিরিয়াল - কোন মাধ্যমে কাজ করতে বেশি পছন্দ?
রেমো: নিঃসন্দেহে সিনেমায়। বড়পর্দার তো আলাদাই মজা। লকডাউন আমাদের হাতের সামনে অনেক কিছু এনে দিয়েছে ঠিকই কিন্তু সিনেমাটা সেই বড়পর্দাতেই ভাল লাগে বলে আমি মনে করি।
প্রশ্ন: থিয়েটারকে অপশনে রাখিইনি। নয়তো ওটাই প্রথম পছন্দ হত নিশ্চয়ই...
রেমো: একদম। আমি মনে করি জীবন আর মঞ্চ একই জিনিস। মঞ্চ আমাদের সকলকে যা শেখায়... আসলে মঞ্চে যদি অভিনয় না করো, তাহলে ক্যামেরার সামনে ওটা ক্ষণিকের। ফলে সিনেমার আগেও থিয়েটার।
আপাতত থিয়েটার থেকে সাময়িক বিরতি নিলেও শীঘ্রই মঞ্চে ফেরত আসতে চলেছেন রেমো। বন্ধুদের নিয়ে তৈরি নাটকের দলের উপস্থাপনার ঘোষণা হবে খুব তাড়াতাড়িই। তারই মাঝে অভিনেতা ব্যস্ত তাঁর আগামী একাধিক কাজ নিয়েও। রেমোর জন্য রইল শুভেচ্ছা।