Blackout : হঠাৎ মুহূর্ত কয়েক চোখের সামনে আঁধার ! ব্ল্যাকআউট কিন্তু বড় রোগের ইঙ্গিত
Blackouts & Fainting Reason : ঠিক কী কারণে ঘটতে পারে সাডেন ব্ল্যাক আউট ? ABP Live এর সঙ্গে আলোচনা করলেন ডা. অম্লান কুসুম দত্ত ।
কলকাতা : চলতে চলতে মাথা ঘুরে যাওয়ার মতো সমস্যা খুব একটা বিরল নয়। চোখের সামনে অন্ধকার দেখার মতো ঘটনা অনেকের সঙ্গে মাঝেমধ্যে ঘটে। ই একে বলে সাডেন ব্ল্যাক আউট ( Sudden Blackout )। এরকম সমস্যা হলে অনেকেই একে শারীরিক দুর্বলতা বলে অগ্রাহ্য করেন। কেউ কেউ আবার ব্ল্যাকআউটকে ব্লাড প্রেসার নেমে গিয়েছে বলে ভুল করেন। ঠিক কী কারণে ঘটতে পারে সাডেন ব্ল্যাক আউট ? ABP Live এর সঙ্গে আলোচনা করলেন ডা. অম্লান কুসুম দত্ত । ( MD DM DrNB, Consultant Neurologist, Techno India Dama Hospital)।
কেন হয় ব্ল্যাকআউট
মনে রাখতে হবে ব্ল্যাকআউট কোন আলাদা রোগ নয়, বরং রোগের লক্ষণ । এমনও হতে পারে শরীরে কোন বড় রোগ বাসা বেঁধেছে। তারই উপসর্গ হিসেবে দেখা দিল ব্ল্যাকআউট বা চোখে আঁধার দেখার মতো সমস্যা । সাধারণত মস্তিষ্কের কিছু সমস্যার জন্য এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। মূলত দুটি কারণ দেখা যায়।
- হতে পারে মস্তিষ্কের একটি অংশে কয়েক সেকেন্ডের জন্য রক্ত চলাচল কমে গেল, এক্ষেত্রে সাডেন ব্ল্যাকআউট হওয়া সম্ভব। মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল সাময়িক ব্যাহত হওয়ার কারণে ঘটা ব্ল্যাকআউটকে Syncope (fainting or passing out) বলা হয়।
এরকমটা কেন ঘটে ? - মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল কোনও কারণে হঠাৎ কমে গেলে এমনটা হতে পারে।
- হার্টের অসুখ থাকলে অথবা হার্ট থেকে মস্তিষ্কে যে ধমনীর রক্ত বহন করে নিয়ে যায়, সেই রাস্তায় কোন বাধা তৈরি হলে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে।
- এই ধরনের সমস্যা হলে চিকিৎসকের কাছে যেতেই হবে। এক্ষেত্রে ওষুধপত্র ছাড়াও দরকার জীবনশৈলিতে বিশেষ পরিবর্তন। সেই সঙ্গে মানতে হবে সঠিক ডায়েট। এছাড়া ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখা, ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা, ধূমপান বন্ধ করার মতো জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। মদ্যপান নিয়ন্ত্রণও ভীষণ জরুরি।
- যদি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে থাকে , তাহলে সেই অনুসারে চিকিৎসকরা ওষুধ দেন। প্রয়োজনে সঠিক ডায়েট মেনে চলা উচিত। দরকার হতে পারে রক্ত তরল করার ওষুধ।
- যদি রক্ত বাহিকার মধ্যে কোন ব্লকেজ ধরা পড়ে তাহলে কোলেস্টেরল কমানোর জন্য ওষুধ দিতে হবে এবং ব্লকেজ ছড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ওষুধে কাজ হবে, নাকি অন্য কোনও পদক্ষেপ করতে হবে, তা চিকিৎসকই ঠিক করবেন অবস্থা বুঝে।
- কতটা ব্লকেজ হয়েছে এবং রোগীর শারীরিক অবস্থা কীরকম তার উপর অনেকটাই নির্ভর করছে চিকিৎসা পদ্ধতি। অনেক সময় দেখা যায় ব্লকেজ এতটাই বেশি যা ওষুধে সারানো যাবে না। সেক্ষেত্রে স্টেন্ট বসানো প্রয়োজন হয়ে পড়ে । স্টেন্ট ধাতু দিয়ে তৈরি এমন একটা জিনিস যা ধমনীর মধ্যে থাকা ব্লকেজকে সরিয়ে দেয় অর্থাৎ রক্তের রাস্তা পরিষ্কার করে।
এপিলেপসি
এছাড়া আর যে কারণ ব্ল্যাকআউট হয়, তা হল এপিলেপসি। যদি মস্তিষ্কের এক বা একাধিক জায়গার স্নায়ু বেশি পরিমাণে উত্তেজিত হয়ে পড়ে কোনও কারণে তাহলে ব্ল্যাকআউটের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে । যাকে বলা হয় এপিলেপসি (Epilepsy )। বাংলায় একে তড়কা বা মৃগীরোগ বলে। প্রথম কারণটি অনেক বেশি সাধারণ । এই ধরনের রোগ সন্দেহ করলে চিকিৎসকরা বেশ কিছু উন্নত মানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দেন। যেমন মস্তিষ্কের এমআরআই (MRI ), EEG (electroencephalogram)। অবশ্য দুটো পরীক্ষাতেই ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক রিপোর্ট আসতে পারে, যে কারণে এপিলেপসি বা তরকা জাতীয় রোগ নির্ণয় অনেকটাই ক্লিনিকাল অর্থাৎ রোগীর উপসর্গ ও পরিবারে অন্য কারও এমন হয় কিনা তা জেনে, চিকিৎসা পদ্ধতি ঠিক করতে হয়। এই জাতীয় রোগ আটকানো সম্ভব ওষুধের মাধ্যমে। তবে কার কতটা পরিমাণ ওষুধ লাগবে বা কতদিন চিকিৎসার প্রয়োজন হবে, তা নির্ভর করে রোগের জটিলতার উপর । এই রোগ থাকলে গাড়ি চালানো , সাঁতার কাটা , উঁচুতে ওঠা, আগুনের সামনে যাওয়া বিপদজনক হতে পারে !
মাথায় রাখবেন ব্ল্যাকআউট হলে অগ্রাহ্য করবেন না। গুরুত্ব দিন । চিকিৎসকের সাহায্য নিন।
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )