Silent heart attack : জানতেই পারলেন না, হয়ে গেল হার্ট অ্যটাক ! সায়লেন্ট অ্যটাকের লক্ষণ কী ? কী করবেন?
কারও হার্ট অ্যাটাক হয়েছে অথচ তিনি নিজেই বুঝতে পারেননি, এমন ঘটনা ঘটে কিন্তু হামেশাই। আলোচনায় চিকিৎসক অর্পন চক্রবর্তী।
কলকাতা : হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক ( Heart Attack ) । হয়ত যাঁর অ্যাটাক হল, তিনি বুঝতেও পারলেন না। উপসর্গ হল, বুকে যন্ত্রণা হল। চলেও গেল। রোগী বুঝলেনও না তাঁর হৃদযন্ত্রে বড় সমস্যা পাকিয়ে গিয়েছে। কারও হার্ট অ্যাটাক হয়েছে অথচ তিনি নিজেই বুঝতে পারেননি, এমন ঘটনা ঘটে কিন্তু হামেশাই। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একেই বলা হয় সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক বা সাইলেন্ট মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্র্যাকশন। এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলেন অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের বিশিষ্ট চিকিৎসক অর্পন চক্রবর্তী।
সায়লেন্ট হার্ট ( Silent heart attack )অ্যাটাক কী
তিনি জানালেন, অনেক সময় দেখা যায়, কোনও রোগী এসে বললেন তাঁর হার্ট অ্যাটাক হয়ে গিয়েছে অথচ তিনি বুঝতেই পারেননি। অথবা হার্টের অন্য কোনও পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখা গেল তাঁর শরীরে অতীতে হার্ট অ্যটাকের লক্ষণ আছে। একেই বলে সায়লেন্ট হার্ট অ্যাটাক। কোনও হার্ট অ্যাটাককে কখন সায়লেন্ট বলা হয়? যখন রোগীর হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ গুলি হয়েছে, কিন্তু বড় ধাক্কা না হওয়ায় তিনি প্রথমে বুঝতেই পারেননি। কোনও কোনও সময় অন্যান্য অসুস্থতার জন্য তাঁরা হয়ত লক্ষণগুলি বুঝতেও পারেন না। কিংবা গ্যাস-অম্বলের কষ্ট ভেবে এড়িয়ে যান।
চিকিৎসক অর্পন চক্রবর্তী জানালেন, খেয়াল রাখতে হবে বুকে ব্যথার বিষয়টি। হার্ট অ্যাটাকের সব থেকে প্রকট লক্ষণ হল বুকে ব্যথা। মারাত্মক ব্যথা , সঙ্গে কুলকুল করে ঘাম, মাথা ঘোরা, এই লক্ষণগুলি প্রকট হলে, তখনই হার্ট অ্যাটাকের সংকেত হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু কোনও কোনও ক্ষেত্রে সেই ব্যথাটা বোধ করতে পারেন না অনেকে। তাঁদের ক্ষেত্রেই সায়লেন্ট হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা বেশি। বিশেষত ডায়াবেটিকদের সায়লেন্ট হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। কারণ দীর্ঘদিনের মধুমেহ স্নায়ুগুলিতে শিথিল করে দেয়। তাঁরা ব্যথা অনুভব করেন না। এঁদের কিন্তু বুকে ব্যথা ছাড়াই হার্ট অ্যাটাক হয়ে যায়।
সায়লেন্ট হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ
তাহলে কি সায়লেন্ট হার্ট অ্যাটাক চুপিসাড়েই চলে যায় ? চিকিৎসক অর্পন চক্রবর্তী জানালেন, না ! সায়লেন্ট হার্ট অ্যাটাক থেকে হতে পারে মৃত্যুও। তাই বুকে ব্যথা ছাড়াও, আরও লক্ষণ আছে, যেগুলি দেখলে হার্ট অ্যাটাক নিয়ে সাবধান হওয়া যায়। যেমন -
- বুকে ব্যথা না হয়ে শরীরের অন্য কোনও অঙ্গে ব্যথা হতে পারে।
- হাতে ব্য়থা হতে পারে।
- চোয়ালে চিনচিন ব্যথা হতে পারে।
- কোনও কোনও কাজ করতে গিয়ে এতটাই হাঁফ ধরে যাচ্ছে, যা আগে হত না।
- সিঁড়ি চড়তে গিয়ে কষ্ট হচ্ছে।
- রাস্তায় মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়া।
- কিছুই হচ্ছে না, অথচ কুলকুল করে ঘাম হচ্ছে।
এগুলোই সায়লেন্ট হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ। এই ধরণের প্রবণতা ডায়াবেটিক ও মহিলাদের মধ্যে খুবই হয়ে থাকে। কিন্তু চুপিচুপি এলেও ক্ষতি না করে যায় না এই হার্ট অ্যাটাক । তাই আলোচ্য উপসর্গ গুলি দেখলেই ধরে নিতে হবে সায়লেন্ট হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। আর তার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটি পদক্ষেপ নিতে হবে ।
১ ঘণ্টা গোল্ডেন আওয়ার - হার্ট অ্যাটাকের পর ১ ঘণ্টা গোল্ডেন আওয়ার । এই সময় নিকটবর্তী হাসপাতালে যেতে হবে ।
- বাড়ির কারও ক্ষেত্রে এই লক্ষণগুলি দেখলে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে রোগীকে।
- বড় বা ছোট যে কোনও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া আবশ্যক।
- এমন লক্ষণ দেখলেই নিজেকে ভিড় থেকে আলাদা করতে হবে।
- খোলা হাওয়া বাতাস খেলে এমন জায়গায় বসতে যেতে হবে।
- বাড়িতে অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট সঙ্গে রাখা আবশ্যক। এই লক্ষণগুলি দেখলেই চারটি অ্যাসপিরিন আধঘণ্টার মধ্যে চিবিয়ে খেতে হবে। মনে করা হয়, এতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৭-১০ শতাংশ কমে।
সায়লেন্ট হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হতে পারে ?
সায়লেন্ট হার্ট অ্যাটাকের ফল মারাত্মক হতে পারে। হতে পারে মৃত্যুও। সায়লেন্ট মানে কিন্তু ছোট হার্ট অ্যটাক নয়। তাই সতর্ক থাকতে হবে, বুকে ব্যথা হলে হবেই হৃদরোগ, একথা ভাবা ঠিক নয়। সব লক্ষণ গুলিই একই রকম গুরুতর।
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )