‘খেয়ে পরে বাঁচবে, তারপরই না পুতুল কিনবে’, করোনায় হাহাকার কৃষ্ণনগরের পুতুলপট্টিতে
করোনায় কেমন আছে ঘূর্ণির ঐতিহ্যের পুতুলপট্টি?
ঘূর্ণি: কেমন আছে কৃষ্ণনগর? করোনায় কেমন আছে ঘূর্ণির ঐতিহ্যের পুতুলপট্টি? এক কথায়, ভাল নেই। খুব খারাপ। খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছে পুতুলপট্টি। ৫০ দিন হয়ে গেল লকডাউনের। কোনও গাড়িঘোড়া চলছে না। মানুষ ঘরবন্দি। কত মানুষ চাকরি হারিয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। এই অবস্থায় কে আসবে নদিয়ায়? কে আসবে কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণি তে? কে কিনবে পুতুল? সকাল, বিকেল, সন্ধ্যা, রাত, চারবেলাতেই জগদ্বিখ্যাত পুতুলপট্টিতে এখন একাধিপত্য স্রেফ নিস্তব্ধতার। সিংহভাগ দোকানই বন্ধ। বন্ধই পরে রয়েছে বড় বড় শিল্পীদের স্টুডিও। কাজই তো হচ্ছে না। এমনই করুণ অবস্থা যে বরাত পাননি রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পী সুবীর পালও।
(সরস্বতী প্রতিমার চোখ আঁকছেন শিল্পী সুবীর পাল)বিগত কয়েকবছর বাদকুল্লার অনামী ক্লাব ও তাঁত ‘সম্রাট’ বীরেন বসাকের বাড়ির দুর্গা প্রতিমা বানান সুবীর পাল। শুধু দুর্গা প্রতিমাই নয়, ফুলিয়ার বসাক বাড়ির কালী পুজো, সরস্বতী পুজোতে সুবীর পালের প্রতিমা ছিল একবারে বাঁধাধরা। যা দেখতে লোকসমাগমও নেহাত কম হত না। ফুলিয়া নেমে বসাকবাড়ি বললেই একনামে সবাই চেনে। এবার বসাক বাড়িতে পুজো হলেও সেই মেজাজ থাকবে না। সুবীর পাল নিজেই বলছেন, “এই অবস্থায় জাকজমকভাবে পুজো না করাই ভাল। যত লোক সমাগম হবে, বিপদ বাড়বে। এমনিতে পয়লা বৈশাখের মতো শুভ দিন দেখেই ঠাকুর বায়না হতো। এবার হয়নি।”
অনামী ক্লাবের ঠাকুর গড়ার কাজ এখনও শুরুই করেননি মৃৎশিল্পী বীরেন পালের পুত্র সুবীর। তাঁর আশঙ্কা, সেপ্টেম্বরের আগে করোনা নিয়ে কোনও আশার আলোই নেই।
তাঁর কথাতেই উঠে এল নদিয়ার ঘূর্ণির দুর্বিসহ অবস্থার কথা। তিনি বলেন, “প্রাণে বাঁচলে তো শখ মেটাবে। অন্ন, বস্ত্র আর বাসস্থানের চাহিদা পূরণ হলে তবেই না মানুষ শখের কথা ভাববে। পুতুল তো শৌখিন জিনিস। গাড়িঘোড়াই তো চলছে না, এখন কে আসবে ঘূর্ণিতে? কে কিনবে পুতুল!”