(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Cheetah Deaths: শুধুই প্রচার, নেই ব্যবস্থাপনা! কুনো ন্যাশনাল পার্কে আরও একটি চিতার মৃত্যু, প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র
Kuno National Park: বুধবার ওই স্ত্রী চিতার মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। যে চিতাটি মারা গিয়েছে, তার নাম রাখা হয়েছিল ধাত্রী।
নয়াদিল্লি: প্রচারের ঢক্কানিনাদে আসল সমস্যাগুলিই ঢাকা পড়ে যাচ্ছে বলে আগাগোড়া অভিযোগ করে আসছেন পরিবেশবিদরা (Cheetah Deaths)। সেই আবহেই মধ্যপ্রদেশের কুনো ন্যাশনাল পার্কে আরও এক চিতার মৃত্যু হল। এবার একটি স্ত্রী চিতার মৃত্যু হল। সবমিলিয়ে এই নিয়ে ৯টি চিতার মৃত্যু হল সেখানে। ফলে আরও একবার ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্নের মুখে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। (Narendra Modi)
বুধবার ওই স্ত্রী চিতার মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। যে চিতাটি মারা গিয়েছে, তার নাম রাখা হয়েছিল ধাত্রী। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে নমিবিয়ায় জন্ম তার। ধাত্রীর বয়স হয়েছিল মাত্র সাড়ে তিন বছর। কুনো ন্যাশনাল পার্ক কর্তৃপক্ষের তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, আজ সকালে ধাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃত্যুর কারণ এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। ময়নাতদন্ত চলছে।
কুনো ন্যাশনাল পার্কের তরফে জানানো হয়েছে যে, এই মুহূর্তে এনক্লোজারের মধ্যে রয়েছে মোট ১৪টি চিতা, সাতটি পুরুষ, ছ'টি স্ত্রী এবং একটি শাবক। তারা সুস্থই রয়েছে। পশু চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে তারা। নমিবিয়ার বিশেষজ্ঞরাও তাদের উপর নজর রেখেছেন। দু'টি স্ত্রী চিতা এনক্লোজারের বাইরে ছিল। তাদের মধ্যে একজনের দেহ পাওয়া গিয়েছে।
দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে চলে আসা ব্যাঘ্র প্রকল্পের আওতায় গত বছর বিদেশ থেকে ভারতে চিতা ফেরানোর প্রকল্প চালু হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নমিবিয়া থেকে দফায় দফায় ২০টি চিতা আনা হয়। তাদের আনা হলে জন্ম নেয় আরও চারটি শাবক। কিন্তু গত বছর সেুপ্টেম্বর মাস থেকে এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে ন'টি চিতার মৃত্যু হল, যার মধ্যে রয়েছে তিনটি শাবকও।
আরও পড়ুন: Om Birla: আচরণ সংযত না হলে অধিবেশনে যাবেনই না, মণিপুর নিয়ে উত্তাল সংসদ, তার মধ্যেই ঘোষণা স্পিকারের
ভারতে চিতা ফেরানোর প্রকল্প নিয়ে কম উন্মাদনা চোখে পড়েনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিনেও কুনো ন্যাশনাল পার্কে নমিবিয়া থেকে আনা চিতা ছাড়া হয়। নিজে হাতে খাঁচা খুলে দেন মোদি। তার পর জলপাই রংয়ের পোশাক পরে, হাই রেজলিউশন ক্যামেরা তাক করে চিতার ছবিও তুলতে দেখা যায় তাঁকে। সেই নিয়ে প্রচারও চলে বিস্তর। কিন্তু প্রচারই সার, ব্যবস্থাপনায় সরকার ডাহা ফেল করেছে বলে গত কয়েক মাসে বার বার অভিযোগ উঠেছে।
কারণ ভারতে পা রাখার চারদিনের মাথাতেই দুই পুরুষ চিতার মৃত্যু হয়। তার পর যত সময় এগিয়েছে মৃত চিতার সংখ্যাও বেড়েছে তর তর করে। গত ১১ জুলাই মারা যায় তেজস নামের একটি চিতা। সূর্য নামের একটি চিতার মৃত্যু হয় ১৪ জুলাই। পর অগাস্টের শুরুতে আরও একটি চিতার মৃত্যু হল কুনো ন্যাশনাল পার্কে।
পর পর চিতার মৃত্যুতে সরকারি ব্য়বস্থাপনাকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের মতে, নিম্নমানের রেডিও কলার পরানোর জন্যই একের পর এক চিতার মৃত্যু হচ্ছে। পোকা থেকে ঘা হয়েও চিতার মৃত্যু ঘটেছে বলে সামনে। হৃদরোগ, কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার ঘটনাও সামনে এসেছে। বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ আবার জানিয়েছেন, মহা সাড়ম্বরে আফ্রিকা থেকে চিতা আনা হলেও, ভারতের জল-হাওয়া মোটেই উপযুক্ত নয় তাদের জন্য।
সরকার যদিও গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে একের পর এক সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সেই নিয়ে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টেও তিরস্কৃত হয় কেন্দ্র। কারণ বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে ২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্টের তরফে বিশেষজ্ঞ কমিটি নিযুক্ত করা হয়। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে আবেদন জানায় কেন্দ্র। তাদের দাবি ছিল, সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত ওই বিশেষজ্ঞ কমিটির থেকে উপদেশ নেওয়া বাধ্য়তামূলক নয় ন্য়াশনাল টাইগার কনজার্ভেশন অথরিটি (NRCA) অর্থাৎ জাতীয় ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পর পর চিতামৃত্যুতে কেন্দ্রের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে সুপ্রিম কোর্ট। শুধু তাই নয়, ব্যাঘ্র সংরক্ষণের প্রজেক্ট টাইগারও সম্প্রতি বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। সেই নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।