Bankura News : বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে ধৃত সাইবার ক্রাইমের মাস্টারমাইন্ড, উদ্ধার একাধিক পাসবই থেকে ৯ হাজার চালু সিম কার্ড
অন্ধকার জগৎ থেকে প্রচুর টাকা রোজগার করতে অভিষেক ও অভিজিৎ নামে দুই ভাই মাটির ঘরে বসেই সাইবার ক্রাইমের কাজ শুরু করে।
পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : এবার সাইবার ক্রাইমের আঁতুরঘরের খোঁজ পাওয়া গেল বাঁকুড়া শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে। জানা যাচ্ছে, অন্ধকার জগৎ থেকে প্রচুর টাকা রোজগার করতে অভিষেক ও অভিজিৎ নামে দুই ভাই মাটির ঘরে বসেই সাইবার ক্রাইমের কাজ শুরু করে। তাদের কাছ থেকে ব্যাঙ্কের একাধিক পাসবই, ডেবিট কার্ডসহ ৯ হাজারেরও বেশি অ্যাক্টিভেটেড সিম কার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, বাঁকুড়া সদর থানার একেবারেই সাদামাটা মাটির বাড়িতে থাকত দুই ভাই অভিষেক মন্ডল এবং অভিজিৎ মন্ডল। স্থানীয় একটি ওষুধের দোকানে কাজ করত এক ভাই অভিজিৎ। আর অন্য ভাই অভিষেক ইলেক্ট্রিকের ওয়্যারিংয়ের কাজ করত। দুই ভাই খুব বেশি শিক্ষিত বা মেধাবি না হলেও তারা স্মার্টফোন ব্যবহার এবং ইন্টারনেটের ব্যবহারে তুখোর ছিল। লকডাউনে বাড়িতে বসে সাইবার ক্রাইমের কাজে তারা আরও পোক্ত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। দুই ভাইয়ের কাছ থেকে পুলিশ যা যা উদ্ধার করেছে, তা দেখে চোখ কপালে উঠে যাচ্ছে এলাকাবাসীর। জানা যাচ্ছে, ধৃত দুই ভাইয়ের বাড়ি থেকে পুলিশ প্রচুর পরিমাণে ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী উদ্ধারের পাশাপাশি প্রায় ৯ হাজারেরও বেশি চালু সিম কার্ড পাওয়া গিয়েছে। এর সঙ্গে একাধিক ব্যাঙ্কের পাসবই, ডেবিট কার্ডসহ নানা জিনিস পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, মূলত ই-ওয়ালেট বানিয়ে দেশের তাবড় সমস্ত সাইবার ফ্রডস্টারদের বিক্রি করত তারা।
পুলিশের পক্ষ থেকে আরও জানা যাচ্ছে যে, দুই ভাইয়ের মধ্যে অভিষেকই মূলত সাইবার ক্রাইমের যাবতীয় খুঁটিনাটি রপ্ত করে। গোটা দেশেই সাইবার ক্রাইমের জাল বিছিয়েছিল সে। ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে মোটা টাকা রোজগারই ছিল তাদের একমাত্র লক্ষ বলে মনে করা হচ্ছে। গ্রামের মধ্যে ছোট্ট মাটির বাড়িতে বসে দুই ভাই এত কাণ্ড করে চলেছে, ঘুণাক্ষরেও টের পাননি গ্রামবাসীরা। তাঁরাও কার্যত হতবাক হয়ে যাচ্ছেন দুই ভাইয়ের কাণ্ড জেনে। যদিও অভিযুক্ত দুই ভাই গ্রেফতার হওয়ার পর গ্রামবাসীরাও কেউ মুখ খুলতে চাননি। তদন্তকারীরা মনে করছেন, ধৃতদের সঙ্গে জেলারই একাধিক যুবক জড়িয়ে থাকতে পারে। যদিও দুই অভিযুক্তের আইনজীবীর দাবি, সাইবার ক্রাইম সংক্রান্ত কোনও ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে নেই ধৃতরা। অভিষেক ও অভিজিৎ নামে দুই ব্যক্তি একেবারেই নির্দোষ। তাদের আইনজীবীও জানিয়েছেন যে, পুলিশ তদন্ত করুক এটা তাঁরাও চান।