Drivers Strike: দেশজুড়ে পরিবহণ-বিক্ষোভের জের, জ্বালানির সঙ্কটের শঙ্কা বাংলাতেও
Fuel Crisis Probability Bengal :'ইতিমধ্যেই আড়াই হাজার পেট্রোল পাম্পের মধ্যে প্রায় ৭০০ পাম্প তেল শূন্য', পেট্রোল পাম্পে সঙ্কট নিয়ে এমনই দাবি ডিলার্স অ্যাসেসিয়েশনের...
কলকাতা: পথ দুর্ঘটনায় কড়া আইনের বিরুদ্ধে ট্রাক চালকদের আন্দোলন। ট্রাক চালকদের সঙ্গে আন্দোলনে ট্যাঙ্কার চালক-খালাসিরাও। জ্বালানির সঙ্কটের শঙ্কা বাংলাতেও । দুর্গাপুর, আসানসোল, ২ মেদিনীপুর-সহ একাধিক জায়গায় পেট্রোল পাম্পে সঙ্কটের আশঙ্কা। 'ইতিমধ্যেই আড়াই হাজার পেট্রোল পাম্পের মধ্যে প্রায় ৭০০ পাম্প তেল শূন্য', পেট্রোল পাম্পে সঙ্কট নিয়ে এমনই দাবি ডিলার্স অ্যাসেসিয়েশনের। তবে শেষ অবধি পাওয়া খবরে, চাপের মুখে পিছু হটল কেন্দ্র, পরিবহণ আন্দোলনও প্রত্যাহার।
'পথ দুর্ঘটনা নিয়ে আপাতত কার্যকর হচ্ছে না ন্যায় সংহিতা আইন', আইন কার্যকরের আগে পরিবহণ সংগঠনের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস কেন্দ্রের। সবার সঙ্গে কথা বলার পরেই সিদ্ধান্ত, জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব। আন্দোলন প্রত্যাহার করে ট্রাক চালকদের কাজে ফেরার আবেদন সংগঠনের।'১০ বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানার আইন আপাতত স্থগিত', কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে বৈঠকের পর দাবি অল ইন্ডিয়া মোটর ট্রান্সপোর্ট কংগ্রেসের (AIMTC)।
কেন্দ্রীয় পরিবহণ নীতির বিরোধিতায় দেশজুড়ে ট্রাক চালকদের বিক্ষোভের আঁচ। মহারাষ্ট্র, হিমাচলে দেখা দিয়েছে জ্বালানি-সঙ্কট। মুম্বইয়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৫০ শতাংশ পেট্রোল পাম্প। প্রভাব পড়ছে ফল ও সব্জির বাজারে। খিদিরপুর ও বন্দর এলাকার একাধিক রাস্তায় তিন ঘণ্টার অবরোধ। যার জেরে কাজের দিনে শহরে যানজটের দুর্ভোগ।
হিট অ্যান্ড রান-এর ক্ষেত্রে নতুন কেন্দ্রীয় আইনের প্রতিবাদ। বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন ট্রাক চালকরা। কোথাও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশে খণ্ডযুদ্ধ। কোথাও অবরোধ তুলতে পুলিশের লাঠিচার্জ। দিনভর উত্তপ্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত। ভারতীয় দণ্ডবিধির পরিবর্তে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা এনেছে কেন্দ্র। সেখানে নতুন আইনে বলা হয়েছে, চালকদের গাফিলতির ফলে যদি দুর্ঘটনা ঘটে এবং পুলিশ বা প্রশাসনের কোনও আধিকারিকক না জানিয়ে পালিয়ে যান, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে হিট-অ্যান্ড-রান মামলা দায়ের হবে। দোষ প্রমাণ হলে চালকদের ১০ বছর পর্যন্ত শাস্তি হতে পারে জরিমানা হতে পারে ৭ লক্ষ টাকা। এরই প্রতিবাদে বছর শেষের দিন হুগলির ডানকুনিতে অবরোধ-আন্দোলন শুরু করেন ট্রাক ড্রাইভাররা।
সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ে অবরোধ করা হয় জাতীয় সড়ক। এদিন সেই আন্দোলনই ছড়িয়ে পড়েছে কলকাতা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ট্রাক চালকদের অবরোধের জেরে তীব্র যানজট দেখা দেয় বন্দর এলাকায়। সপ্তাহের দ্বিতীয় কাজের দিনে একাধিক রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় ছুটে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। দেশজুড়ে ট্রাক চালকদের বিক্ষোভের আঁচের প্রভাব পড়েছে পেট্রোল পাম্পগুলিতে। মহারাষ্ট্র, হিমাচল প্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে দেখা দিয়েছে জ্বালানি-সঙ্কট।
সূত্রের খবর, বাণিজ্য নগরী মুম্বইয়ে প্রতিদিন দেড় হাজার ট্রাক ঢোকে। কিন্তু বিক্ষোভ-আন্দোলনের জেরে এদিন সকাল থেকে পেট্রোল পাম্পগুলিতে কোনও ট্রাক ঢোকেনি। ফলে পেট্রোল-ডিজেলের ভাঁড়ালে টান পড়তে শুরু করেছে। নাগপুর, ইন্দোর, ধর্মশালায় পেট্রোল পাম্পগুলির সামনে গাড়ির লাইন ক্রমশ লম্বা হচ্ছে। শুধু পেট্রোল পাম্প নয়, প্রভাব পড়েছে নভি মুম্বইয়ের ফল ও সব্জি বাজারেও। জোগান কমে যাওয়ায় বাড়ছে দাম। পেট্রোল-ডিজেল, LPG সিলিন্ডার সরবরাহ অব্যাহত রাখতে পুলিশকে তৎপর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। এই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় আইনের সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। বিরোধীদের পাল্টা জবাব দিয়েছে বিজেপি।
আরও পড়ুন, রাজ্যে করোনা-উদ্বেগের মধ্যেই এল স্বস্তির খবর, নতুন করে আক্রান্ত কত ?
বিক্ষোভ-প্রতিবাদের একই ছবি ধরা পড়েছে পশ্চিম বর্ধমানে।কেন্দ্রীয় পরিবহণ আইনের বিরোধিতার আঁচ লেগেছে উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের বামনগাছিতেও। ট্রাক ও লরি চালকদের সমর্থনে রাস্তায় নামেন ম্যাটাডোর চালকরা।সকালে যশোর রোডে বামনগাছি মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মিনি ট্রাক ড্রাইভার্স অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অ্য়াসোসিয়েশনের সদস্যরা। অবিলম্বে কেন্দ্রের কালা আইন বাতিল করতে হবে বলে দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের হস্তক্ষেপে একঘণ্টা পর অবরোধ ওঠে।