Amar Jawan Jyoti: ৫০ বছর পর কেন নিভছে শহিদ স্মৃতির অমর জওয়ান শিখা, কী কারণ!
Amar Jawan Jyoti: ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান (1971 Indo-Pak War) যুদ্ধে শহিদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে ১৯৭২ সালে রাজধানীর বুকে, ইন্ডিয়া গেটের পাদদেশে ‘অমর জওয়ান জ্যোতি’ শিখার প্রতিষ্ঠা হয়।
নয়াদিল্লি: লুটিয়েন্স দিল্লির ঐতিহ্য মিটিয়ে ‘সেন্ট্রাল ভিস্তা’র (Central Vista Project) নামে রাজধানীর ‘মোদিকরণ’ (Modified India) ঘিরে রাজনৈতিক তরজা অব্যাহত। এ বার ভারতীয় সেনার আত্নবলিদানের স্মারক ইন্ডিয়া গেটের ‘অমর জওয়ান জ্যোতি’র (Amar Jawan Jyoti) ‘মোদিকরণে’র অভিযোগে বিদ্ধ কেন্দ্রীয় সরকার। খরচ বাঁচাতে ঐতিহ্যের ‘অমর জওয়ান জ্যোতি’র অগ্নিশিখাকে জাতীয় যুদ্ধ স্মারকের (National War Memorial) অগ্নিশিখার সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু তাদের এই উদ্যোগ ইতিহাস মুছে ফেলার প্রচেষ্টা বই অন্য কিছু নয় বলে অভিযোগ উঠছে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ১৯১৪ থেকে ১৯২১ সালের মধ্যে নিহত সেনার সম্মানে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার ইন্ডিয়া গেট তৈরি করে। ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান (1971 Indo-Pak War) যুদ্ধে শহিদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে ১৯৭২ সালে রাজধানীর বুকে, ইন্ডিয়া গেটের (India Gate) পাদদেশে ‘অমর জওয়ান জ্যোতি’ শিখার প্রতিষ্ঠা হয়। উল্টো করে বসানো রাইফেলের মাথায় সেনাবাহিনী পরিহিত হেলমেট বসানো হয় একটি স্তম্ভের উপর। তার পাশে রাখা হয় আগুনের শিখা। সেই থেকে বিগত ৫০ বছর ধরে ওই শিখা বহ্নিমান, সচক্ষে যা দেখতে ভিড় করেন দেশ-বিদেশের মানুষ।
কিন্তু প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে, সম্প্রতি ওই শিখা ইন্ডিয়া গেট থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। বলা হয়, ২০১৯ সালে নির্মিত জাতীয় যুদ্ধ স্মারকেও অগ্নিশিখা প্রজ্বলিত। আবার ইন্ডিয়া গেটেও। দু’টি শিখাকে প্রজ্জ্বলিত রাখার খরচ দিন দিন বেড়ে চলেছে। তাই ইন্ডিয়া গেটের ‘অমর জওয়ান জ্যোতি’র অগ্নিশিখাকে মিলিয়ে দেওয়া হবে জাতীয় যুদ্ধ স্মারকের সঙ্গে।
बहुत दुख की बात है कि हमारे वीर जवानों के लिए जो अमर ज्योति जलती थी, उसे आज बुझा दिया जाएगा।
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) January 21, 2022
कुछ लोग देशप्रेम व बलिदान नहीं समझ सकते- कोई बात नहीं…
हम अपने सैनिकों के लिए अमर जवान ज्योति एक बार फिर जलाएँगे!
শুধু তাই নয়, ‘অমর জওয়ান জ্যোতি’র অগ্নিশিখাকে সরিয়ে আনা নিয়ে কেন্দ্রের তরফে যুক্তি দেওয়া হয় যে, ইন্ডিয়া গেটে যে শহিদ জওয়ানদের নাম খোদাই করা রয়েছে, জাতীয় যুদ্ধ স্মারকেও সেই সমস্ত নামের উল্লেখ রয়েছে। এর পাশাপাশি, ১৯৪৭-’৪৮ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে য়ুদ্ধে এবং লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনের সঙ্গে সংঘর্ষে শহিদ জওয়ানদের নামও খোদাই রয়েছে সেখানে। সন্ত্রাসদমন অভিযানে শহিদ বাহিনীর নামও রয়েছে।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৪০ একর জমির উপর ১৭০ কোটি টাকা খরচে নির্মিত জাতীয় যুদ্ধ স্মারকের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। সেখানে ১৫.৫ মিটার দীর্ঘ স্মৃতিস্তম্ভের উপর ‘অমর চক্র’, ‘বারতা চক্র’, ‘ত্যাগ চক্র’, ‘রক্ষা চক্র’ বসানো হয়। গ্রানাইটের উপর স্বর্ণাক্ষরে খোদাই করা হয় ২৫ হাজার ৯৪২ শহিদ জওয়ানের নাম। মোদির হাতে উদ্বোধনের পর থেকে সেনার যাবতীয় অনুষ্ঠানও ইন্ডিয়া গেট থেকে সরিয়ে জাতীয় যুদ্ধ স্মারকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় একে একে।
This government has no respect for democratic tradition & established convention, whether in parliament or out of it. The sanctity acquired after fifty years of the Amar Jawan Jyoti is being lightly snuffed out:https://t.co/d918XjfntF So everything must be reinvented post-2014?!
— Shashi Tharoor (@ShashiTharoor) January 21, 2022
তাই খরচ বাঁচানোর দোহাই দিয়ে ‘অমর জওয়ান জ্যোতি’ অগ্নিশিখা নেভানোর সিদ্ধান্তকে রাজধানীর ‘মোদিকরণ’-এরই অংশ হিসেবে দেখছে রাজনৈতিক মহল। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী (Rahul Gandhi) টুইটারে লেখেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে বীর জওয়ানদের স্মৃতিতে প্রজ্জ্বলিত অমর জওয়া জ্যোতির অগ্নিশিখা আজ নিভিয়ে দেওয়া হবে। কিছু মানুষ দেশপ্রেম এবং আত্মবলিদানের মাহাত্ম্য বোঝেন না। কোনও সমস্যা নেই। অমর সেনার স্মৃতিতে ফের অমর জওয়ান জ্যোতি প্রজ্জ্বলিত করব আমরা।’
তিরুঅনন্তপুরমের তৃণমূল সাংসদ শশী থারুর (Shashi Tharoor) লেখেন, ‘সংসদের অন্দরে এবং বাইরে গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য, রীতিনীতির প্রতি কোনও সম্মান নেই এই সরকারের। ৫০ বছর ধরে প্রজ্জ্বলিত অমর জওয়ান জ্যোতির অগ্নিশিখা তাই ফুৎকারে নিভিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার মানে কি দাঁড়ায়, ২০১৪-র পর থেকে সব কিছু নতুন করে লিখতে হবে?’
The Amar Jawan Jyoti is being extinguished by Modi after nearly 50 years. The flame honors our soldiers who died defending India.
— Saket Gokhale (@SaketGokhale) January 21, 2022
But Modi is extinguishing that for his lofty Central Vista dream & his personal “legacy”.
Modi’s greed doesn’t even spare memories of dead soldiers.
তৃণমূলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখেল টুইটারে লেখেন, ‘দীর্ঘ ৫০ বছর পর মোদি অমর জওয়ান জ্যোতি নিভিয়ে দিচ্ছেন। দেশকে রক্ষা করতে গিয়ে মৃত্যুবরণকারী শহিদ জওয়ানদের সম্মানে ওই অগ্নিশিখা প্রজ্জ্বলিত ছিল। কিন্তু নিজের সেন্ট্রাল ভিস্তা স্বপ্নের বাস্তবায়নে এবং নিজের উত্তরাধিকার স্থাপনে আজ ওই অগ্নিশিখা নিভিয়ে দিচ্ছেন মোদি। মোদি এতই লোভী যে শহিদ জওয়ানদের স্মৃতিকেও ছাড়ছেন না।’ তবে সমালোচনার মুখে পড়েও, কেন্দ্রের যুক্তি, শিখা নেভানো হচ্ছে, শুধু জাতীয় যুদ্ধ স্মারকের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হচ্ছে।