এক্সপ্লোর
Advertisement
কমিটি গঠন, চাপে পড়ে কৃষকদের দাবি মানল মহারাষ্ট্র সরকার, ইগো ছেড়ে ওদের ন্যয্য দাবিদাওয়া মেনে নিন, মোদীকে রাহুল
মুম্বই: অবশেষে মহারাষ্ট্র সরকার কৃষক আন্দোলনের চাপে মাথা নোয়াল। কমিটি গঠন করল দেবেন্দ্র ফঢ়নবিশ সরকার। নাসিক থেকে ৬দিন লং মার্চ করে ১৮০ কিমি রাস্তা হেঁটে বাণিজ্য নগরীতে আসা কৃষকদের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়ার কথা ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। আজাদ ময়দানের সমাবেশে সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির উপস্থিতিতে রাজ্যের রাজস্ব মন্ত্রী চন্দ্রকান্ত পাতিল কৃষকদের সব দাবিই পূরণ করা হবে বলে জানান। আর বিধান ভবনের বাইরে সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী ফঢ়নবিশ বলেন, যেসব জঙ্গলের জমিতে চাষবাস করা হচ্ছে, তার মালিকানা আদিবাসী, কৃষকদের হাতে তুলে দিতে কমিটি গড়তে সম্মত হয়েছি আমরা। বিধান ভবনে আজ কৃষক, আদিবাসীদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কথা হয়েছে। সেখানে ঠিক হয়, ২০০৫ সালে কৃষিকাজের প্রমাণ পেশ করতে হবে। তাহলেই কৃষক, আদিবাসীরা চাষজমির মালিকানা পাবেন। এজন্য কমিটি তৈরি হবে।
জোটসঙ্গী শিবসেনা, বিরোধী কংগ্রেস, সকলেই আন্দোলনরত কৃষকদের দাবিদাওয়া মেনে নিতে বলায় চাপ তৈরি হয়েছিল ফঢ়নবিশ সরকারের ওপর। এদিন আগেই কৃষকদের দাবি মানার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ৯০-৯৫ শতাংশ আন্দোলনকারীই গরিব আদিবাসী। জঙ্গলের জমির মালিকানা চেয়ে ওরা আন্দোলন করছে। ভূমিহীন বলে চাষবাস করতে পারছে না। সরকার ওদের দাবিদাওয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল, ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে।
বিধানসভায় এদিন কৃষকদের পদযাত্রা নিয়ে আলোচনা হয়।
সিপিএমের কৃষক সংগঠন অল ইন্ডিয়া কিসান সভার নেতৃত্বে আন্দোলনে নামা কৃষকদের দাবিগুলি ছিল, নিঃশর্তে ঋণ মকুব চাই, বছরের পর বছর ধরে যে আদিবাসীরা জঙ্গলের জমি চাষ করছে, তাদের হাতে জমির মালিকানা দিতে হবে। স্বামীনাথন কমিটি উত্পাদন মূল্যের দেড় গুণ ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বেঁধে দেওয়ার যে সুপারিশ করেছে, তা কার্যকর করতে হবে। জঙ্গল অধিকার আইনও প্রয়োগ করতে হবে। সিপিএম নেতা অশোক ধাওয়ালে একথা বলেন। নাসিক, ঠানে ও পালঘর জেলার নদীগুলিকে জুড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা বাতিল, আদিবাসীদের জমি সেই প্রকল্পের ফলে ডুবে যাবে না, এটা সুনিশ্চিত করার দাবিও করেছে চাষিরা। হাইস্পিড রেল ও সুপার হাইওয়ে তৈরির জন্য সরকারের জমি অধিগ্রহণেও আপত্তি তুলেছে তারা।
এদিন সমাবেশে দৃশ্যতই খুশি ইয়েচুরি কৃষকদের ভারতের নতুন সেনা বলে উল্লেখ করে বলেন, ওদের দাবি মানা না হলে সরকার উল্টে দিতে পারে ওরা।
আর কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী আদিবাসী ও কৃষকদের আন্দোলনে সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়ে ট্যুইট করলেন, মানুষের শক্তির চমকে দেওয়া নজির দেখা গেল! কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির 'উদাসীনতার' বিরুদ্ধে আদিবাসী, কৃষকদের আন্দোলনের পাশে কংগ্রেস রয়েছে বলে ঘোষণা করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী ও মুখ্যমন্ত্রীকে বলব, ইগো ছেড়ে ওদের ন্যয্য দাবিদাওয়া মেনে নিন।
এআইসিসির সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেসের দুই শীর্ষ পদাধিকারী রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা ও আরপিএন সিংহ বলেন, প্রতিটি রাজ্যে কৃষক সম্প্রদায় মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে, মোদী জমানায় কৃষক আত্মহত্যা ৪১.৭ শতাংশ বেড়েছে।
The mammoth #FarmersMarchToMumbai is a stunning example of people’s power. The Congress party stands with the Farmers & Tribals marching to protest against the Central & State Govts. apathy.
I appeal to PM Modi and the CM to not stand on ego and to accept their just demands.
— Office of RG (@OfficeOfRG) March 12, 2018
মহারাষ্ট্র বিধানসভায় পৌঁছল কিষাণ সভার প্রতিনিধি দল, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক
গতকালই ৩০ হাজার কৃষক মুম্বইয়ে পৌঁছে যান। তাঁরা আজাদ ময়দান থেকে বিধানসভার দিকে রওনা হন। বিধানসভায় পৌঁছে গিয়েছে কৃষকদের প্রতিনিধি দল। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফঢ়ণবীশের সঙ্গে বৈঠক করবেন কৃষকদের প্রতিনিধিরা। তাঁদের দাবি-দাওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে রাজ্য সরকার।
মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী গিরিশ মহাজন বলেছেন, ‘কৃষকদের সঙ্গে বৈঠক হবে। আমার মনে হয় কৃষকদের দাবিগুলির ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পূরণ করা হবে। ঋণ মকুব সহ বিভিন্ন দাবি পূরণ করার বিষয়টিকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। যে দাবিগুলি পূরণ করা হবে, সেগুলির বিষয়ে লিখিত আশ্বাস দেওয়া হবে।’
কৃষকদের ঋণ মকুব, ফসলের দাম বাড়ানো ছাড়াও শিলাবৃষ্টি ও পতঙ্গের উৎপাতের ফলে ফসল নষ্ট হওয়ায় একরপ্রতি ৪০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে কৃষক সভা। এছাড়া বনজ সম্পদ অধিকার আইন কার্যকর করারও দাবি জানানো হয়েছে। এই দাবিগুলি আদায় করার লক্ষ্যেই আজ মহারাষ্ট্র বিধানসভার বাইরে বিক্ষোভ দেখানো হবে। বিধানসভা ঘেরাও করবেন কৃষকরা।
কিষাণ সভার এই আন্দোলনকে সমর্থন করছে বিরোধী দলগুলি। শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের ছেলে তথা যুব সেনার প্রধান আদিত্য ঠাকরে কৃষকদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের দাবির কথা শোনেন। মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার প্রধান রাজ ঠাকরেও কিষাণ সভার এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন। কংগ্রেস, আম আদমি পার্টিও এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে।
খবর (News) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
জেলার
জেলার
জেলার
ব্যবসা-বাণিজ্যের
Advertisement