‘মিথ্যে’ নথি, এখনই জেলে পাঠাতে পারি, কোর্টের হুঁশিয়ারি জয়ললিতার 'ছেলেকে'
চেন্নাই: তামিলনাড়ুর প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার ‘ছেলে’ বলে দাবি করা এক ব্যক্তিকে তীব্র ভর্ৎসনা করল মাদ্রাজ হাইকোর্ট। এমনকী, তাঁকে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিল আদালত।
খবরে প্রকাশ, জে কৃষ্ণমূর্তি নামে ওই ব্যক্তি আদালতের দ্বারস্থ হয়ে দাবি করেন, তিনি জয়ললিতা ও প্রয়াত তেলুগু অভিনেতা শোভন বাবুর ছেলে।
তিনি আদালতের সামনে বেশ কিছু নথিপত্র পেশ করেন। যার মধ্যে দত্তকের একটি দলিলও রয়েছে। আদালতের কাছে তিনি আবেদন করেন, তাঁকে যেন জয়ললিতার ছেলে হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
কৃষ্ণমূর্তি তাঁর আবেদনে জানান, তাঁর জন্ম ১৯৮৫ সালে হয়। পরের বছর, ইরোড-নিবাসী বসন্তমণি পরিবার তাঁকে দত্তক নেয়। তাঁর দাবি, আটের দশকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এম জি রামচন্দ্রণের বাড়িতে পরিচারকের কাজ করতেন বসন্তমণি।
আবেদনকারীর আরও দাবি, দত্তক দলিলে জয়ললিতা, শোভনবাবু ও বসন্তমণির ছবি ও স্বাক্ষর রয়েছে। আর উল্টোদিকে, সাক্ষী হিসেবে এম ডি রামচন্দ্রণের স্বাক্ষর রয়েছে।
কৃষ্ণমূর্তির যুক্তি, ছেলে হওয়ার সূত্রে পোয়েজ গার্ডেন সহ জয়ললিতার সম্পত্তির উত্তরাধিকার হবেন তিনি। একইসঙ্গে, তাঁর প্রাণনাশের আশঙ্কা রয়েছে বলেও দাবি করেন কৃষ্ণমূর্তি।
তাঁর আশঙ্কা, জয়ললিতার সহযোগী তথা এআইএডিএমকে সাধারণ সম্পাদক ভি কে শশীকলার পরিবারের থেকে প্রাণের হুমকি আসতে পারে। এই প্রসঙ্গে তাঁর আবেদন, তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নির্দেশ দিক আদালত।
গত সপ্তাহে আবেদন দাখিল করেন কৃষ্ণমূর্তি। এদিন শুনানিতে বিচারপতর মন্তব্য, আবেদনকারী যে নথি জমা করেছেন, তা ভুয়ো। তিনি বলেন, একটা লোয়ার কেজি শ্রেণির পড়ুয়াও বলে দিতে পারবে যে নথিগুলি ভুয়ো।
পাল্টা আবেদনকারীকে আদালত বলে, আপনি প্রকাশ্যে থাকা একটা ছবি লাগিয়েছেন। কী মনে করেন, যে কেউ এসে জনস্বার্থ প্রক্রিয়া চালু করতে পারে, প্রশ্ন আদালতের।
এরপরই, কৃষ্ণমূর্তিকে হুঁশিয়ারি দেন বিচারপতি। বলেন, আদালতের সঙ্গে ছলনা ঠিক নয়। আবেদনকারীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পুলিশ কমিশনারের কাছে আসল নথি সহ হাজির হতে। এরসঙ্গেই, তিনি সরকারি কৌঁসুলি এমিলিয়াসকে নির্দেশ দেন, কৃষ্ণমূর্তির নথির সত্যতা যাচাই করে দেখতে।
এদিন কৃষ্ণমূর্তির পেশ করা দাবির প্রেক্ষিতে তাঁকে বিচারপতি জানান, যে সময়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে দলিলে, সেই সময় রামচন্দ্রণ হাতই নড়াতে পারতেন না। যা ওই দলিলের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
আবেদনকারীকে সঙ্গ দেওয়া সমাজকর্মী রামস্বামীকে একহাত নিয়ে আদালত বলে, এখানে আপনার ভূমিকা ঠিক কী? আপনি কী নথিগুলি দেখেছেন? বিচারপতির হুঁশিয়ারি, এখন যদি আমি অসত্য নথি পেশ করার জন্য এই ব্যক্তিকে (আবেদনকারী) জেলে পাঠাই, তাহলে আপনি খুশি হবেন তো?