প্রভাব ছড়াচ্ছে আইএস! কাশ্মীর ও সিরিয়ায় নেট-চ্যাটের মাধ্যমে কথা, সতর্কতা গোয়েন্দাদের
শ্রীনগর: জম্মু কাশ্মীরে ঘাঁটি তৈরি করতে চাইছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএস। এর জন্য সিরিয়া থেকে ইন্টারনেট চ্যাটের মাধ্যেমে উপত্যকার যুব সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালাচ্ছে আইএস হ্যান্ডলাররা। এমনই আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে গোয়েন্দার সংস্থাগুলি।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, কাশ্মীর উপত্যকায় বেশ কিছু নতুন জঙ্গি ‘পকেট’-এর হদিস মিলেছে। সেখান থেকে সিরিয়া ও ইরাকের আইএস হ্যান্ডলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্যের বেশ কিছু যুবক। গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মতে, গত ৬ মাসে এই কার্যকলাপ আচমকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, গতমাসে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গির অন্ত্যেষ্টিতে যোগ দেয় দুই মুখোশধারী জঙ্গি। তারা উপস্থিত যুবকদের তালিবান ও আইসিস-এর নীতি অনুসরণ করার নির্দেশ দেয়।
জানা গিয়েছে, যুবকদের তারা এ-ও বলেছে, এখন থেকে পাকিস্তানকে সমর্থন বা তার হয়ে স্লোগান চড়িয়ে কোনও লাভ নেই। কবরস্থানে দাঁড়িয়েই ওই দুই জঙ্গি প্রায় তিন-মিনিটের এক বক্তৃতাও দেয়। সেখানে শরিয়া আইন ও ইসলাম ধর্মের বিশ্বায়ণ নিয়েও কথা বলে বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দারা জানান, বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিতে নারাজ পাক-অধিকৃত কাশ্মীর-স্থিত বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর ছাতা সংগঠন ইউনাইটেড জেহাদ কাউন্সিল বা কাশ্মীরে তার শাখা-সংগঠন হিজবুল। তবে, আইএস-এর এই প্রভাব বিস্তার করার পন্থাকে একেবারেই হাল্কাভাবে নিতে ইচ্ছুক নয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। তাদের আশঙ্কা, এখনই এর নিয়ন্ত্রণ না করলে, ভবিষ্যতে বড় সমস্যা দেখা দিতেই পারে।
সিরিয়া ও ইরাকের বেশ কিছু অ্যাকাউন্টের ওপর নজরদারি চালিয়েছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংগঠন। জানা গিয়েছে, ২০১৪-২০১৬ এই তিন বছরে এই দুই দেশ থেকে কাশ্মীরে যোগাযোগ করা হলেও, তা ছিল অত্যন্ত কম।
কিন্তু, চলতি বছরে আচমকা, সেই পরিমাণ বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে। গোয়েন্দারা জানান, প্রায় ১০০ টি অ্যাকাউন্ট থেকে বিভিন্ন সময়ে আইএস হ্যান্ডলারদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ বজায় রাখা হয়েছে। ওই অ্যাকাউন্টগুলির ওপর নজরদারি চলছে।
গোয়েন্দাদের এই আশঙ্কা যে একেবারে অমূলক নয়, তার প্রমাণ সম্প্রতি মিলেছে। কয়েকদিন আগেই উপত্যকায় আইএস-এর পতাকা উত্তোলন করা হয়। এমনকী, কিছু জায়গায় আইএস-পন্থী দেওয়াল-লিখন ও স্লোগানও তোলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
শুধু গোয়েন্দা সংস্থাগুলিই নয়, উপত্যকায় আইএস-এর প্রভাব বিস্তার নিয়ে চিন্তিত সেনাবাহিনীও। মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সের মতে, গত বছর প্রতি ১০ জন যুবকের মধ্যে ৬ জন বিতর্কিত ধর্মপ্রচারক জাকির নায়েক ও অন্যান্য জেগাদি ভিডিও দেখেছে।
গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, সিরিয়া-যোগ উপত্যকায় নতুন সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।