SC Hearing on Pegasus: রাত পোহালেই সুপ্রিম কোর্টে 'পেগাসাস মামলা', আদালতের নজরদারিতে শুরু হবে তদন্ত ?
আগামীকাল সুপ্রিম কোর্টে পেগাসাস মামলার শুনানি। সরকারের বিরুদ্ধে পিটিশনারদের অভিযোগ, স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত পরিসরে আড়ি পেতেছে কেন্দ্র। যা দেশের নাগরিকের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করার সমান।
নয়া দিল্লি: বৃহস্পতিবার 'পেগাসাস কাণ্ড' নিয়ে ফের সরগরম হতে চলেছে রাজধানীর রাজনীতি। ৯ পিটিশনের ভিত্তিতে ফোনে আড়ি পাতা কাণ্ডের শুনানি শুরু হবে সুপ্রিম কোর্টে। প্রধান বিচারপতি এনভি রমনা ও বিচারপতি সূর্য কান্তের ডিভিশন বেঞ্চে উঠবে এই মামলা।
ইতিমধ্যেই পেগাসাস ফোন হ্যাকিং মামলায় সরকারের জবাব জানতে চেয়েছেন আবেদনকারীরা। শীর্ষ আদালতের নজরদারিতে এই মামলার তদন্ত দাবি করেছেন তাঁরা। এমনকী ভবিষ্যতে সরকার যেন স্পাইওয়্যার ব্যবহার না করে তা নিশ্চিত করার আবেদন করা হয়েছে শীর্ষ আদালতের কাছে।
অস্বীকার করেছে সরকার
বিরোধীদের একাধিক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও পেগাসাস নিয়ে নিজেদের দাবিতে অনড় থেকেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, সরকার পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করেনি। এমনকী আদালতেও বিষয়টির উল্লেখ করেছে সরকার। এ প্রসঙ্গে ইজরায়েলের পেগাসাস স্পাইওয়্যার প্রস্তুতকারক কোম্পানি এনএসও-র বিবৃতি কোর্টে পেশ করেছে কেন্দ্র। যেখানে এনএসও জানিয়েছে, কেবল কোনও দেশের সরকারের কাছে এই স্পাইওয়্যার বিক্রি করে তারা।
ইজরায়েলি কোম্পানির এই বক্তব্য ধরেই প্রশ্ন তুলেছে আবেদনকারীরা। সুপ্রিম কোর্টের কাছে তাদের আবেদন, সরকার পেগাসাস কিনে তা ব্যবহার করেছে কি না জানতে চাক আদালত। সরকার পেগাসাস না কিনলেও কোনও সরকারি আধিকারিক পেগাসাস কেনার জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন কি ? এই বিষয়েও শীর্ষ আদালতের কাছে জানতে চেয়েছেন আবেদনকারীরা।
পিটিশনে কী লেখা হয়েছে ?
সরকারের বিরুদ্ধে পিটিশনারদের অভিযোগ, স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত পরিসরে আড়ি পেতেছে কেন্দ্র। যা দেশের নাগরিকের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করার সমান। একমাত্র দেশের নিরাপত্তাজনিত কারণেই এই ধরনের কাজ করতে পারে সরকার। তবে পেগাসাস কাণ্ডে অভিযোগ উঠেছে, রাজনৈতিক কারণে ব্যক্তিগত পরিসরে আড়ি পেতেছে সরকার। হাজার-হাজার কোটি টাকা এই স্পাইওয়্যারে খরচ করেছে সরকার। এর অবশ্যই তদন্ত হওয়া উচিত।
পিটিশনে বলা হয়েছে. বিচারপতি, বিরোধী দলের নেতা, সমাজকর্মীদের ওপর স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে গোয়েন্দাগিরির বিষয়টা মেনে নেওয়া যায় না। এই কাজ সংবিধানের ১৪ ধারার পরিপন্থী। স্পাইওয়্যার কাণ্ডের মাধ্যমে বাক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছে সরকার। তাই পেগাসাস কাণ্ডের তদন্ত হওয়া উচিত।
সুপ্রিমকোর্টে এই পিটিশন দাখিল করেছেন কারা ?
৯টি পিটিশনের মধ্যে প্রথমে নাম রয়েছে আইনজীবী মনোহর লাল শর্মার। দ্বিতীয় আবেদনকারীর তালিকায় রয়েছেন সিপিআইএম-এর রাজ্যসভার সাংসদ জন ব্রিটাসের। এই মামলার তদন্ত বর্তমান বা প্রাক্তন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিকে দিয়ে করানোর আবেদন জানিয়েছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক এন রাম ও শশী কুমার। এখানেই শেষ হয়নি পিটিশনের তালিকা। সুপ্রিম কোর্টে পেগাসাস মামলার তদন্ত চেয়েছে এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়া ছাড়াও কিছু মিডিয়া গ্রুপের এডিটররা।
দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বলছে, মার্কিন দুই সংবাদপত্র্রের রিপোর্টের জেরে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানীর রাজনীতি। সম্প্রতি আমেরিকার দুই সংবাদপত্র 'দ্য গার্ডিয়ান' ও 'ওয়াশিংটন পোস্ট' দাবি করে, পেগাসাস নামের একটি বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে দেশের পরিচিত তথা গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ব্যক্তিত্বদের ওপর নজরদারি চালাচ্ছে বিশ্বের বহু দেশের সরকার। এই তালিকায় নাম রয়েছে ভারতেরও। ইজরায়েলি নজরদারি কোম্পানি 'এনএসও' এই সফটওয়্যারটি বিক্রি করেছে।