Indian Railways: ‘চেন’ টানলে দাঁড়ায় ট্রেন কোন উপায়ে? অযথা হাত দিলে মোটা টাকা জরিমানা, হতে পারে জেল
Pulling Alarm Chain of Trains: ট্রেনের ওই ‘চেন’ আসলে ‘অ্যালার্ম চেন’।

নয়াদিল্লি: জরুরি পরিস্থিতিতে ‘চেন’ টেনে ট্রেন থামাতে হয় বলে আমরা সকলেই জানি। ট্রেনের কামরায় উজ্জ্বল লাল রংয়ের ‘চেন’ বা শিকল ঝুলতেও দেখেছি আমরা। কিন্তু খুব কমজনই ওই ট্রেন টেনে দেখেছেন। জরুরি পরিস্থিতি ছাড়া ওই ‘চেন’ টানাও উচিত নয়। কিন্তু ‘চেন’ টানলে ট্রেন দাঁড়ায় কী ভাবে? (Pulling Alarm Chain of Trains)
ট্রেনের ওই ‘চেন’ আসলে ‘অ্যালার্ম চেন’। জরুরি পরিস্থিতিতে যাত্রীরা যাতে চালক বা গার্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, তার জন্যই এমন ব্যবস্থা। ট্রেনের ইঞ্জিন যেহেতু কামরার থেকে অনেক দূরে, ভিতর দিয়ে যাওয়ার রাস্তাও নেই, তাই ‘অ্যালার্ম চেনে’র ব্যবস্থা করা হয়। ওই ‘চেন’ টানলে ট্রেন থেমে যায়। (Indian Railways)
তবে ট্রেনের ‘চেন’ মোটেই সহজ বস্তু নয়, বরং বেশ জটিল। কী ভাবে বার্তা পৌঁছয় চালক বা গার্ডের কাছে, তার প্রক্রিয়া বোঝা জরুরি। ট্রেনের ওই ‘চেন’ আসলে সরাসরি মূল ব্রেক পাইপের সঙ্গে সংযুক্ত, যা বাতাসের চাপ ধরে রাখে।
ব্রিটেনের ইঞ্জিনিয়ার জর্জ ওয়েস্টিংহাউস এই পদ্ধতির আবিষ্কর্তা। সেই থেকে গত ১৫০ ধরে ওই মডেল চালু রয়েছে। এমন ভাবে নকশা তৈরি করা হয়েছে, যাতে ‘চেন’ টানলে ট্রেনের কর্মীদের কাছে জরুরি সঙ্কেত পৌঁছে যায়। এর পর যা করণীয় করেন তাঁরা।
জরুরি পরিস্থিতিতে ‘চেন’ টানলে, ট্রেনের কামরার ব্রেক এয়ার পাইপের ভালভ খুলে যায়। বাতাসে চাপ বেরিয়ে যায় এর ফলে। প্রেসার কমছে বলে মিটারে দেখতে পান লোকো পাইলট। এতে তিন বার হর্ন বাজান তিনি, যাতে গার্ড এবং নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে সঙ্কেত পৌঁছয়। এর পর ট্রেন দাঁড় করানো হয়। যে কামরা থেকে ‘চেন’ টানা হয়েছে, সেখানে পৌঁছে দেখা হয় ঠিক কী ঘটেছে। ট্রেনের প্রত্যেক কামরায় এমার্জেন্সি ফ্ল্যাশ রয়েছে। ফলে কোন কামরা থেকে ‘চেন’ টানা হয়েছে, তা বোঝা সম্ভব হয়।
ভুল করে বা ইচ্ছাকৃত ভাবে ‘চেন’ টানলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়াই দস্তুর। বৈধ কারণ ছাড়া ‘চেন’ টানা অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। রেলওয়ে আইন ১৯৮৯ সাল অনুযায়ী, ৫০০-১০০০ টাকা জরিমানা হতে পারে। ট্রেন যত ক্ষণ আটকে থাকবে, প্রতি মিনিটে দিতে হতে পারে ৮০০০ টাকা করে। অন্য ট্রেন আটকে গেলে, তার জন্যও বাড়তি টাকা গুনতে হয়। জেল খাটতে হতে পারে এক বছর পর্যন্ত। আবার একসঙ্গে দু’টিই হতে পারে।
তবে মেডিক্যাল এমার্জেন্সি, অগ্নিকাণ্ড, দুর্ঘটনা বা রেললাইনে কিছু দেখতে পেলে, অনভিপ্রেত কিছু ঘটলে ‘চেন’ টানা যায়। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩-’২৪ সালে বেআইনি ভাবে ২৬৩২ বার ‘চেন’ টানা হয়। গ্রেফতার হন ২৬১৮ জন। জরিমানা বাবদ ১৫ লক্ষ ৪৫ হাজার ১৬৫ টাকা আদায় করে রেল। আত্মীয়কে ছাড়তে এসে নামতে না পারার কারণে, ভেন্ডরা নামার জন্য সবচেয়ে বেশি বার ট্রেনের ‘চেন’ টানা হয় বলে জানা গিয়েছে।























