নিম্নচাপের জেরে দিঘা-মন্দারমনিতে প্রবল জলোচ্ছ্বাস, জারি সতর্কতা, সুমুদ্রে নিখোঁজ কাকদ্বীপের ১১ মৎস্যজীবী
পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা: নিম্নচাপের জেরে দিঘা-মন্দারমনিতে প্রবল জলোচ্ছ্বাস। পর্যটকদের পাশাপাশি মৎস্যজীবীদের জন্যও জারি হয়েছে সতর্কবার্তা। অন্যদিকে, গভীর সুমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ কাকদ্বীপের ১১ জন মৎস্যজীবী। নিম্নচাপের জেরে দফায় দফায় বৃষ্টি। ফুঁসছে দিঘার সমুদ্র। মন্দারমনি, চাঁদপুরেও প্রবল জলোচ্ছ্বাস। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি থামেনি শুক্রবারও। সেই সঙ্গে চলছে ঝোড়ো হাওয়া। দিঘার সমুদ্রের জল সৈকত ছেড়ে পারে। উত্তাল সমুদ্রে না নামার জন্য পর্যটকদের বার বার প্রশাসনের তরফে সতর্ক করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদেরও বারণ করা হয়েছে সমুদ্রে যেতে। দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরামের সহ সভাপতি দেবাশিস শ্যামল বলেন, গতকাল থেকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে ৪১টি খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক মৎস্য ব্যবসায়ীর ক্ষতি হবে। চিন্তায় মন্দারমণির কৃষক ও মাছ-চাষীরা। তাঁদের দাবি, বাউন্ডারি ওয়াল টপকে এবং বাঁধ ভেঙে অনেক জায়গায় নোনা জল ঢুকেছে। এর ফলে ফসল চাষের ক্ষতি হবে। মাছ চাষেরও ক্ষতি হবে। দ্রুত ব্যবস্থা নিতে প্রসাসনকে আর্জি জানানো হবে। শুক্রবার চাঁদপুর, মন্দারমনিতে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরি। তিনি বলেন, সব বিডিওদের নিয়ে ঘুরে দেখছি। মৎস্য দফতরকে বলেছি দ্রুততার সঙ্গে কাজ করতে। বাঁধ মেরামতি না কারলে আবার যদি নিম্নচাপ হয় তা হলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সব মিলিয়ে চিন্তায় দিঘা-মন্দারমনি-সহ উপকূলবর্তী এলাকা। এরই মধ্যে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে গভীর সমুদ্রে ১১জন মৎস্যজীবীর নিখোঁজ হওয়ার খবর মিলেছে। তাঁদের খুঁজতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছেন আরও ১৫ জন। স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সত্যনারায়ণ নামে একটি ট্রলারে করে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যান কাকদ্বীপ এলাকার ১১জন মৎস্যজীবী। মাছ ধরার মাঝেই গভীর নিম্নচাপ তৈরি হয় বঙ্গোপসাগরে। দ্রুত মৎস্যজীবীদের ফিরে আসার সতর্কতা জারি করে সরকার। কিন্তু ফেরার পথে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায় ট্রলারটির। ফলে, অন্যান্য ট্রলারগুলি নিরাপদে ফিরে এলেও সত্যনারয়ণ ফিরতে পারেনি। সুন্দরবন সামুদ্রিক শ্রমিক সংগঠনের দাবি, বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে ওই ট্রলারের মৎস্যজীবীরা উপকূলরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করলেও সাহায্য মেলেনি। সুন্দরবন সামুদ্রিক শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি সতীনাথ পাত্র বলেন, সবাইকে ফিরতে বলা হয়। সেই সময় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ট্রলারটি। উপকূলরক্ষী বাহিনীর কোনও সাহায্য মেলেনি। তাই আমরা সাহায্য করছি। ডায়মণ্ডহারবারের অতির্কিত মৎস্য অধিকর্তা(সামুদ্রিক), সুরজিৎ বাগ জানিয়েছেন, ওই ১১ জন মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করার জন্য স্থানীয় মৎস্যজীবী সংগঠন ও উপকূলরক্ষী বাহিনীর সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করে সুন্দরবন সামুদ্রিক শ্রমিক সংগঠনও। নিখোঁজ মৎস্যজীবীদের সন্ধানে সমুদ্রে রওনা হয়েছেন সংগঠনের ১৫ জন সদস্য।