চাঁদ ও মঙ্গলের পৃষ্ঠের নীচে থাকা লাভা-টিউবে গড়ে উঠতে পারে মানব বসতি, দাবি বিজ্ঞানীদের
লন্ডন: চাঁদ ও মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠের নীচে একদা বহমান লাভাস্রোতের দ্বারা তৈরি টিউব বা সুড়ঙ্গে মানব বসতি গড়ে উঠতে পারে বলে জানালেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, ওই টিউবগুলি এতটাই বিশাল যে, সেখানে অনায়াসে বাড়ি, সড়ক এমনকী শহর নির্মাণও সম্ভব।
প্রসঙ্গত, এধরনের লাভা টিউব পৃথিবীতেও পাওয়া যায়। হাওয়াই, আইসল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার উত্তর কুইন্সল্যান্ড, সিসিলি এবং গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জে এর দেখা মেলে। এই টিউব নেটওয়ার্ক অনেক ক্ষেত্রে দৈর্ঘ্যে ৬৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
ইতালির পাদোভা বিশ্ববিদ্যালয় ও বলোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন মহাকাশ অভিযানের মাধ্যমে মেলা চিত্র দেখে পরিষ্কার যে, চন্দ্র ও মঙ্গলে এধরনের একাধিক ভেঙে পড়া গুহা এবং ‘স্কাইলাইট’ রয়েছে।
ডিজিটাল টেরেন মডেল প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা সর্বপ্রথম পৃথিবী, চন্দ্র ও মঙ্গলরে লাভা টিউবের তুল্যমূল্য বিচার করেন। তাঁদের দাবি, এই লাভা-টিউবের ওপর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রচুর প্রভাব রয়েছে।
হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে খোঁজ মেলে এই লাভা-টিউবেরবিজ্ঞানীরা জানান, পৃথিবীর লাভা-টিউবগুলি প্রায় ৩০ মিটার চওড়া। সেখানে মঙ্গলের লাভা-টিউবগুলি প্রস্থে প্রায় ২৫০ মিটার। আবার, চাঁদে এগুলিই প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত চওড়া এবং কয়েক’শ কিলোমিটার পর্যন্ত দৈর্ঘ্যে বিস্তৃত হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা জানান, কম ঘনত্বের লাভা যখন পৃষ্ঠের অল্প নীচের ফাঁকফোঁকর দিয়ে বয়ে যায়, তখন তারা সেখানে একটি কঠিন আস্তরণ তৈরি করে। লাভার স্রোত থেমে গেলে, সেই টিউবগুলি একটি সুড়ঙ্গের আকার নেয়। এই ভাবে তৈরি হয় লাভা-টিউব।
বিজ্ঞানীদের দাবি, এই লাভা-টিউবগুলি এতটাই মজবুত যে তাতে কসমিক বিকিরণের কোনও প্রভাব পড়ে না। এছাড়া, উল্কাপাত থেকেও এর কোনও ক্ষতি হয় না। ফলে, এগুলি অচিরেই মানব বসতির পক্ষে আদর্শ জায়গা হতে পারে।