সাইবেরিয়া: ঠাকুমার জন্য সাহায্য আনতে মাইনাস ৩৪ ডিগ্রিতে ৫ মাইল হাঁটল ৪ বছরের মেয়ে
মস্কো: অসুস্থ ঠাকুমাকে সাহায্য করতে সাইবেরিয়ার মাইনাস ৩৪ ডিগ্রির হাড়-কাঁপানো ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে কয়েক মাইল হেঁটে পার করল মাত্র চার বছরের মেয়ে!
এই ঘটনার পর মেয়েটিকে নায়কের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, তার মায়ের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে।
ঘটনায় প্রকাশ, রাশিয়ার তুভা রিপাবলিকে মঙ্গোলিয়া সীমান্ত লাগোয়া তাইগা জঙ্গলের গভীরে একটি খামার বাড়িতে থাকে সাগলানা সালচাক নামে ওই শিশু।
বাড়িটা এতটাই জঙ্গলের গভীরে যে, পরের গ্রাম ১২ মাইল দূরে। এমনকী, নিকটতম প্রতিবেশী থাকেন ৫ মাইল দূরে!
গতমাসে এক রাতে শিশুটি ঘুম থেকে উঠে দেখে যে তার ষাটোর্ধ্ব ঠাকুমা নড়াচড়া করছেন না। অন্ধ ঠাকুর্দার সঙ্গে কথা বলে শিশুটি বেরিয়ে পড়ে, প্রতিবেশীর কাছ থেকে সাহায্যের আশায়।
আর এই দুর্গম যাত্রায় তার সঙ্গ বলতে ছিল কিছু দেশলাই কাঠি.. পথে যদি আগুল জ্বালিয়ে তাপ নিতে হয়!
জানা যায়, ভোরের দিকে চার বছরের একরত্তি মেয়েটি ঘন জঙ্গল, বরফের মধ্যে দিয়ে কয়েক ঘণ্টা হেঁটে পাঁচ মাইল অতিক্রম করে প্রতিবেশীর দোরে পৌঁছয়।
তাঁরা সাগলানা এবং চিকিৎসককে সঙ্গে নিয়ে ফের হাঁটাপথেই তার বাড়ি আসেন। কিন্তু, চিকিৎসকরা, ঠাকুমাকে পরীক্ষা করে দেখেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গিয়েছেন।
ওই শিশুর এই অসীম সাহসিকতা দেখে অনেকেই চমকে উঠেছেন। স্থানীয় উদ্ধারকারী দলের প্রধান সাইমন রুবস্তভ জানান, শুধু প্রবল ঠান্ডাই নয়। আরও অনেক বিপদ রয়েছে এই অঞ্চলে। তাঁর দাবি, তুভাতে প্রচুর নেকড়ের আনাগোনা। ওরা যে শিশুকে আক্রমণ করেনি, সেটাই আশ্চর্যের।
সাগলানার এই সাহসিকতার কাহিনী সেদেশের সব সংবাদপত্রে ফলাও করে বের হয়েছে। সে জানিয়েছে, ওই যাত্রার সময়, তার প্রচণ্ড ঠান্ডা যেমন লাগছিল, তেমনই খিদেও পেয়েছিল।
জানা গিয়েছে, সাগলানার মা ও সৎ বাবা, অঞ্চলের অন্য একটি প্রান্তে নিজেদের আস্তাবল সামলান। এদিকে, চার বছরের শিশুকে বিপদে ফেলার জন্য তার মা এলিওনোরার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে।