সমাজের ডাক্তার, নার্স পুলিশদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন থেকে জল বাঁচানোর আর্জি সবই আছে এপাড়ার দেওয়ালচিত্রে। গিরিশ কারনাড থেকে সুশান্ত সিংহ রাজপুত, ঊষা গাঙ্গুলি থেকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় সবাই আছেন এখানে। এভাবেই শৈশব স্মৃতি, সিনেমা সংস্কৃতি, নাটক, খেলা, রূপকথা, এমনকি সমসাময়িক নানান ঘটনা উঠে এসেছে দেওয়ালে দেওয়ালে। শিল্পী অরুণ মন্ডল আর ত্রিগুণাসেন মান্না নিজেদের দলবল নিয়ে প্রায় তিন মাস ধরে সাজিয়ে তুলেছেন গোটা পাড়া। রং- ছবি মিলিয়ে প্রায় 10 হাজার বর্গফুট এলাকা এখন রঙিন হয়ে উঠেছে।
2/8
পাড়ার মোড়ে দেবাশিস নস্করের ছোট্ট দোকান। তিনি বেজায় খুশি কারণ দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ দেখতে আসছে এই রং ছবি পাড়া। ঠেলাগাড়িতে সবজিওয়ালার কাছে সবজি কিনছিলেন গৃহবধূ নবনীতা সেন গুপ্ত।
3/8
এপাড়ার কথা বলতে গিয়ে তার হাসিমুখটাই প্রমাণ করে যে এখন পাড়ায় সবাই গর্বিত তাদের এই কর্মকাণ্ড নিয়ে। দুপুরের মুখে তন্ময় ভৌমিককে দেখা গেল বাড়ির দেয়াল পরিষ্কার করতে। বললেন ১২ বছর এপাড়ায় আছি এত সুন্দর হয়ে উঠবে পাড়াটা ভাবতেই পারিনি। তাই এখন নিজেরাই নিজেদের জায়গা পরিষ্কার করে রাখছি। আর এভাবেই নিজেদের পাড়ার প্রতি আরো যত্নবান এখন প্রায় প্রত্যেকটি বাসিন্দা।
4/8
এমন এক অভিনব উদ্যোগ বাস্তবায়িত করতে বাধা আসেনি এমনটা নয়। কেউ কেউ প্রথমে রাজি হননি। পরে সব দেখেশুনে তাঁরা এগিয়ে এসেছেন। আবার অনেকে নিজে থেকেই দেওয়াল রং করে দিয়েছেন। আর আজ তাই প্রত্যেকেই গর্বিত নিজের পাড়া রং ছবি পাড়া নিয়ে। ছবি ও তথ্য - সঞ্চয়ন মিত্র
5/8
তাদের হাতেই ধীরে ধীরে সেজে উঠল ব্রহ্মপুর প্লেস। শুরুর ভাবনাটা অবশ্য লকডাউন আর ঘূর্ণিঝড়ের সময় থেকে। তখন যেভাবে পাড়ার সবাই একে অপরের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন সেখান থেকেই প্রতিবেশীদের আত্মীয় হয়ে ওঠা ছাপ ফেলেছিল সবার মনে। সেভাবেই আজ সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা দেখাচ্ছে এই পাড়া। এখন পাড়ার মোড়ে কোথাও উঁকি দিচ্ছে টম এবং জেরি, কোথাওবা গোপাল ভাড়ঁ।
6/8
সামনে ভোট। সব পাড়াতেই দেওয়াল লিখন হবে। এবারে ভোটের প্রচারে এপাড়ায় অন্তত দেওয়াল পাওয়া দুষ্কর। কারণ পাড়ার সব দেওয়ালই এখন রং ছবির দখলে।
7/8
শুরুটা হয়েছিল পাড়ার দুর্গাপুজোর সময়। পুজোর মিটিংয়ে এ পাড়ার বাসিন্দা অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য প্রস্তাব দেন পুরো পাড়াটা সাজিয়ে তুললে কেমন হয়? সেই শুরু। একে একে প্রতিটি বাড়ির অনুমতি আদায় করা। তারপর অনির্বাণই ডেকে আনলেন কিছু পরিচিত বন্ধু শিল্পীকে।
8/8
ঊষা গেট থেকে বেশ কিছুটা ভেতরে ব্রহ্মপুর। তারও অনেকটা ভেতরে ছিমছাম নিরীহ একটি পাড়া ব্রহ্মপুর প্লেস। ছোট ছোট কয়েকটা গলি মিলে একটা পাড়া। আর সেই পাড়া আজ মুখে মুখে রঙ ছবি পাড়া নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে। পুরসভার রেকর্ডে এমন কোন পাড়ার নাম পাওয়া যাবে না। তবে মানুষের মুখে মুখে তার প্রচার এতটাই যে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছেন এমন মডেল পাড়া চাক্ষুস করতে।