Medical Science News: চুল পাকছে বলে দুঃখের শেষ নেই? বড় বাঁচা বেঁচে গেলেন হয়ত! ত্বকের ক্যান্সারের গবেষণায় চমকপ্রদ তথ্য
Gray Hair and Cancer Link: জাপানের ইউনিভার্সিটি অফ টোকিও-র বিজ্ঞানীরা পাকা চুল ও ত্বকের ক্যান্সারের মধ্যে এই যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন।

নয়াদিল্লি: বয়স ৩০ পেরোতে না পেরোতেই মাথায় রুপোলি রেখা। আজ যদি একটা হয়, একসপ্তাহের মধ্যে কয়েক গোছায় পরিণত হয়। বার্ধ্যের আগে চুল পেকে যাওয়া নিয়ে তাই দুঃখের শেষ নেই আমাদের। কিন্তু এই পাকাচুলের মধ্যেই ক্যান্সার নিরাময়ের যোগসূত্র খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা। পাকা চুল সব সময় বার্ধক্যের পরিচয় নয়, বরং তা শরীরের একটি প্রাকৃতিক হাতিয়ার, যা ত্বকের ক্যান্সারের প্রতিরোধ করে। (Gray Hair and Cancer Link)
জাপানের ইউনিভার্সিটি অফ টোকিও-র বিজ্ঞানীরা পাকা চুল ও ত্বকের ক্যান্সারের মধ্যে এই যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন। ত্বকের ক্যান্সারের সবচেয়ে বিধ্বংসী রূপ ‘মেলানোমা’। প্রতিবছর আমেরিকায় প্রায় ২ লক্ষ মানুষ মেলানোমায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সেই মেলানোমা প্রতিরোধের উপায় খুঁজতে গিয়েই পাকা চুলের সঙ্গে রোগের সংযোগ ধরা পড়েছে। (Medical Science News)
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, চুল পাকার নেপথ্যে যেমন মেলানোসাইট স্টেম সেল (MCSCs) কাজ করে, যা থেকে চুল এবং ত্বকের রং নির্ধারিত হয়। চুলের ফলিকল মেলানোসাইট কোষের কার্যকারিতা হ্রাস পেলে বা আয়ু শেষ হলেই, চুলের রং ফিকে হতে শুরু করে, চুল পাকে। ইঁদুরেরর রোমের ফলিকলে এই McSC কী ভাবে কাজ করে, ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক সংস্পর্শে এলে আচরণ কেমন হয়, তা পর্যবেক্ষণ করছিলেন বিজ্ঞানীরা।
ওই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, McMC ক্ষতিগ্রস্ত হলে কিছু কোষেরও মৃত্যু ঘটে। এর ফলে কালো চুল সাদা হতে শুরু করে। এই প্রক্রিয়াটিকে p53-p21 বলছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, এই p53-p21 প্রক্রিয়াটিই আসলে মানব শরীরে জিনের অভিভাবক হিসেবে কাজ করে। কারণ সেটি টিউমার দমন করে, বহিরাগত উপাদান থেকে DNA-কে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে এই প্রক্রিয়া। তাই বিজ্ঞানীদের মতে, যে ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলি ক্যান্সারের রূপান্তরিত হতে পারে, সেগুলিকে অপসারণের নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া আছে শরীরের। আর সেই প্রক্রিয়ার দরুণই চুল পাকে মানুষের।
যদিও প্রত্যেকটি কোষ এই পথ অনুসরণ করে না। ক্যান্সারেও রূপান্তরিত হয় না সেগুলি। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের জেনেটিক বিভাগের অধ্যাপক ডেভিড সিনক্লেয়ার জানিয়েছেন, পাকা চুল কী ভাবে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে শরীরকে রক্ষা করে, তা যদি বের করা যায়, তাহলে শুরুর আগেই মেলানোমা রুখে দেওয়া সম্ভব হবে।
চুল পাকার নির্দিষ্ট কোনও বয়স নেই যদিও। বয়স ৪০ হলে চুল পাকতে শুরু করে কারও, কারও আবার ২০-৩০ বছরেই চুল পাকে। তবে সব ক্ষেত্রেই তা ক্যান্সারের বিষের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধ নয়। বয়সের সঙ্গে চুলে থাকা মেলানোসাইট স্টেম সেল ক্ষয় পেতে থাকে, রঞ্জকের জোগান কমে তার দরুণ, যা থেকে চুল পাকে। চুল পাকার নেপথ্যে সবচেয়ে গুরুতর কারণ হল জিন-ঘটিত কারণ, বার্ধক্য। আবার অতিরিক্ত চাপ, দুশ্চিন্তা থেকেও চুল পাকে।
তবে চুল পাকা ও ক্যান্সার প্রতিরোধের মধ্যে যে সংযোগ খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, তা যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। গবেষণার নেতৃত্বে থাকা অধ্যাপক এমি নিশিমুরার কথায়, ‘চুল পাকা এবং মেলানোমা পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। বরং প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিচার-বিবেচনা করতে হবে’। পাকা চুল কালো করতে অনেকেই বাজার থেকে রং কিনে মাখেন। ওই রংয়ে Formaldehyde নামের এক ধরনের রাসায়নিক থাকে, যা থেকে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। ত্বকের ক্যান্সার মেলানোমার সঙ্গেও তার সংযোগ ধরা পড়েছে। ২০২৫ সালে আমেরিকায় মেলানোমায় আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ১২ হাজার হতে পারে বলে পরিসংখ্যান সামনে এসেছে, যা থেকে ৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে। তাই ত্বকে অস্বাভাবিক কোনও পরিবর্তন লক্ষ্য করলে, ছোপ হলে চিকিৎসের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )





















